ঢাকা মহানগরী জামায়াতের তীব্র নিন্দা

রফিকুল ইসলাম খানের ছেলেকে আবারো রিমান্ডে নেয়ার আবেদন

রফিকুল ইসলাম খানের ছেলেকে আবারো রিমান্ডে নেয়ার আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার : এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত আবদুল্লাহ খানকে আরো ১টি মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। গত ২৪ মার্চ মঙ্গলবার মহানগর হাকিম রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে তা শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করে আদালত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার হল থেকে গ্রেফতারের পর তাকে দুই দফা ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে থাকার কারণে চলতি এসএসসি’র ২টি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি রিফাত। নতুন করে রিমান্ড আবেদন করায় জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা রমনা থানার ৩১(৩)১৫ তারিখের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তার পক্ষ থেকে রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত তা শুনানীর জন্য ৫ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দেয়া নতুন এই মামলায় ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১২ মার্চ থেকে ২১ মার্চ এর মধ্যে। কিন্তু গত ২০ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয় এবং এর দু’দিন পর পল্লবী থানায় দায়েরকৃত তথ্য-প্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় তাকে তিনদিন এবং পরে আরো দু’দিন রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সে কারাগারেই রয়েছে। পুলিশের নতুন মামলার বিবরণ অনুযায়ী তথ্য প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের যে অভিযোগ রিফাতের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সে সময়ও সে কারাগারেই ছিলো।

আদালতে রিফাতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট আবদুর রাজ্জাক, এডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন, এডভোকেট শামসুল ইসলাম আকন্দ, এডভোকেট লুৎফর রহমান আজাদ, এডভোকেট আশরাফুজ্জামান শাকিল, এডভোকেট আজমত হোসেন প্রমুখ।

ঢাকা মহানগর জামায়াতের নিন্দা : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত আব্দুল্লাহ খানের বিরুদ্ধে নতুন করে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেয়ার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী।

গত ২৪ মার্চ মঙ্গলবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল হালিম এবং সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত আব্দুল্লাহ খান সরকারের প্রতিহিংসামূলক সাজানো ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে গত দেড় মাস যাবত কারাগারে আছে। এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা চলমান অবস্থায় কোনো মামলা ছাড়াই তাকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আটকের পর দু’দিন র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, ডিবি কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করলেও তারা রিফাতকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে। অন্যদিকে তাকে নিয়ে তার বাবা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে আটক করতে তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। পরবর্তীতে তার মা তার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান এবং তার নিখোঁজের বিষয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও উদ্বেগ প্রকাশ করে। রিফাত নিখোঁজের বিষয়টি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, নিউজ এজেন্সিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অবশেষে দু’দিন পর তাকে কোর্টে হাজির করা হয়। সে সময় ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় পাঁচদিন রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরবর্তীতে পরীক্ষাগুলোতেও তাকে আর অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। এমন অবস্থায় একজন নিরপরাধ কিশোর শিক্ষার্থীকে মঙ্গলবার আবারো নতুন করে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে কোর্টে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করে রমনা থানা পুলিশ। ৫ এপ্রিল এই মামলার শুনানীর দিন ধার্য করে আদালত। উল্লেখ্য যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দেয়া নতুন এই মামলায় ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১২ মার্চ থেকে ২১ মার্চ এর মধ্যে। কিন্তু গত ২০ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয় এবং এর দু’দিন পর পল্লবী থানায় দায়েরকৃত তথ্য-প্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় তাকে তিনদিন এবং পরে আরো দু’দিন রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সে কারাগারেই রয়েছে। পুলিশের নতুন মামলার বিবরণ অনুযায়ী তথ্য প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের যে অভিযোগ রিফাতের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সে সময়ও সে কারাগারেই ছিলো। মামলার তারিখ এবং ঘটনার বিবরণই প্রমাণ করে আটক রিফাতের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলার ন্যূনতম কোনো ভিত্তি নেই। কোনো সুস্থ, বিবেকসম্পন্ন মানুষ এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ বিশ্বাস করবে না। সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের হাতিয়ার হিসাবে দেশের পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের হিংসাত্মক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড তাদের নিরপেক্ষতাকে তীব্রভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, একজন নিরপরাধ এসএসসি পরীক্ষার্থীকে এভাবে বারবার অযৌক্তিক ও সাজানো-মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডের আবেদন আইন পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকার গণ আন্দোলন মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েই জামায়াত নেতার নিরপরাধ সন্তানকে এভাবে টার্গেট করেছে। জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষা অংশ নিতে গিয়েই এভাবে আটককৃত এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ না দিয়ে উল্টো বারবার মামলা দেয়া ও রিমান্ডের আবেদন প্রশাসনের নির্মম ও প্রতিহিংশাপরায়ন মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। শিশু অধিকার, শিক্ষা সম্প্রসারণের কথা সরকার বারবার বললেও এই ঘটনা সরকারের আচরণের চরম বৈপরীত্য জাতির সামনে উন্মোচন করলো যা আওয়ামী সরকারের নিচু মানসিকতার আরো একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের দাবিতে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ভূমিকা সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। আদর্শের লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে তাকে মানসিকভাবে আঘাত করতেই তার নিরপরাধ সন্তানকে অন্যায়ভাবে আটক করে এখন নতুন নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে এবং তার ভাইবোন, ভাতিজা, শ্যালক, শ্বশুরসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনদের হয়রানি অব্যাহত রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আমরা পুলিশের এই কাপুরোষোচিত ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে আটককৃত রিফাত আব্দুল্লাহ খান’কে মুক্তি দিয়ে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে এবং হলিচাইল্ড স্কুলের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রিফাত আবদুল্লাহ খানকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরার পরীক্ষার হল থেকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর প্রথম দফা ৩ দিন ও পরে ২ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।