একটি সেতুর অভাবে লাধিক মানুষের দুর্ভোগ

আসাদুজ্জামান আসাদ, পঞ্চগড় থেকে : পঞ্চগড় আউলিয়া ঘাটে একটি সেতুর অভাবে চারটি ইউনিয়নের লাধিক মানুষ বছরের পর বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। স্বাধীনতার পর ৪৪ বছর ধরে এলাকাবাসী একটি সেতুর জন্য বিভিন্ন মহলে আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত তাদের সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। একটি সেতুর অভাবে বর্ষাকালে নৌকায় নদী পার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। সেতুর অভাবে বড়ই অমানবিক জীবন-যাপন করছে এলাকাবাসী।

সূত্রে প্রকাশ, বোদা উপজেলার বড়শশী ও মাড়েয়া ইউপির সীমানা হয়ে করতোয়া নদী প্রবাহিত হয়েছে। আউলিয়া ঘাট সংলগ্ন জায়গায় এসে করতোয়া নদীর সাথে ঘোড়ামারা নদী মিলিত হয়েছে। দু’টি নদীর মিলনস্থলে বিরাট একটি মন্দির রয়েছে। নদীর পানির সাথে লড়াই করে বড়শশী, চিলাহাটি, মাড়েয়া ও শালডাংগা ইউনিয়নের লোকজন চলাফেরা করে। চার ইউপির অধিবাসীদের সাথে আউলিয়া ঘাটের সর্ম্পক অতি গভীর। কিন্তু আউলিয়া ঘাটে একটি সেতুর অভাবে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় লোকজন হাট বাজার বা কারো সাথে যোগাযোগ রা করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাধীনতার ৪৪ বছরে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আউরিয়া ঘাট অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে অবহেলিত আউলিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন নৌকায় করে হাজার হাজার মানুষ নদী পার হয়ে হাট-বাজার ও প্রয়োজনীয় কাজকর্মের সমাধান করে থাকেন। নৌকা দিয়ে করতোয়া নদী পরাপারের সময় প্রত্যেক মানুষের ভাড়া ১০ টাকা, সাইকেল ১০ টাকা এবং মোটরসাইকেল ২০ টাকা করে ভাড়া দিতে হয়। এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও ব্যবসায়ীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনা নেয়ার েেত্র নৌকার জন্য আউলিয়া ঘাটে এসে অনেক সময় অপো করতে হয়। একবার নৌকা ছাড়লে পরবর্তীতে নৌকার জন্য প্রায় ১ ঘণ্টা সময় অপো করতে হয়। ফলে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হয়, তেমনি সময়মত পৌঁছাতে না পারলে সাধারণ মানুষের অনেক তিগ্রস্ত হয়। বর্ষাকালে নদী পারাপারে জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। অনেক েেত্র যাত্রীদের দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকে না। চার ইউপির অধিবাসীরা খুবেই কষ্ট করে নদী পারাপর হয়ে বিভিন্ন হাট বাজার করে থাকেন। প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান করেন। তবে বর্ষাকালে বড় শশী ও ভাউলা গঞ্জ ইউপির অধিবাসীরা ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে জেলা সদর হয়ে বোদা উপজেলায় পৌঁছে থাকেন। এবং প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সমাধান করেন। করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করলেই চারটি ইউনিয়নের লাধিক মানুষ দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ বা কষ্ট থেকে রেহাই পাবে।

আউলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণ করা বিষয়ে পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভেকেট নুরুল ইসলাম বলেন, আউলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে আছে। আগামী অর্থবছরে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। আউলিয়া ঘাটে সেতুটির বড়ই প্রয়োজন। সেতুর অভাবে চারটি ইউনিয়নের অধিবাসীরা জনবিছিন্ন জীবন যাপন করছে। এখানে সেতুটি নির্মাণ করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য যে, পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে করতোয়া, ডাহুক, তালমা, ঝিনাইকুড়ি, বুড়া তিস্তা, টাঙ্গন, গাবরা পাথরাজসহ বেশ কয়েকটি নদী প্রবাহিত হয়েছে। অধিকাংশ নদীর উৎস ভারতে। করতোয়া নদীন আউলিয়ার ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষ জনবিচ্ছিন্ন জীবন থেকে মুক্তি পাবে। সচেতন মহল মনে করেন, দুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণ করবেন স্থানীয় অধিবাসীরা এমনটাই আশা করেন।