শিপইয়ার্ডে থাকলেও কেউই জানে না জাহাজটি কার!

সীতাকুণ্ডের কদমরসুল আহমদ মোস্তফা শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে এভাবে পড়ে রয়েছে জাহাজ ‘সুইফট ক্রো’

সীতাকুণ্ডে রহস্যময় জাহাজ

নজরুল ইসলাম, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কদমরসুল এলাকার একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ‘সুইফট ক্রো’ নামক আনুমানিক ২০ হাজার গ্রস টন ওজনের একটি সচল জাহাজের মালিকানা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আসা জাহাজটি নিয়ে রহস্যের জট  খোলেনি ৪ মাসেও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পানামার পতাকাবাহী প্রায় ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজটিতে মূলত পণ্য পরিবহন করা হয়ে থাকে। গত বছরের শুরুর দিকে একটি কোম্পানি কিছু পণ্যসহ জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে নিয়ে আসার পর গত ২৩ জানুয়ারি তারিখে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে হাইকোর্ট সুইফট ক্রো’র বিরুদ্ধে মামলা করে। কিন্তু জাহাজটির তলায় ছিদ্র হয়ে গেছে জানিয়ে এটি মেরামত জরুরি বলে দাবি করলে আদালত জাহাজটিকে ডক ইয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমদানিকারক এজেন্টকে আদেশ দেয়। এদিকে ডক ইয়ার্ডে নিয়ে যাবার আদেশ থাকলেও গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে একটি মহল জাহাজটিকে অজ্ঞাত কারণে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত আহমদ মোস্তফা শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে নিয়ে আসে। সেই থেকে জাহাজটি ঐ ইয়ার্ডে পড়ে থাকলেও এর মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি! তবে জাহাজটি এ ইয়ার্ডে রয়েছে জানতে পেরে গত ২৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্টার মার্শাল মোজাহেদুল ইসলাম আকন্দের নেতৃত্বে একটি দল ‘সুইফট ক্রো’ পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু তারা চলে যাবার পর আরো চার মাস অতিক্রান্ত হলেও জাহাজটি পড়ে রয়েছে আগের মতই।

এ বিষয়ে আহমদ মোস্তফা শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের ম্যানেজার ফরিদ উদ্দিন সুজন বলেন, ‘সুইফট ক্রো’ তাদের জাহাজ নয়। জাহাজটির তলায় ছিদ্র হওয়ায় এগ্রিমেন্ট সাপেে ভাড়ার বদলে একটি পকে সুইফট ক্রো তাদের ইয়ার্ডে রাখতে দিয়েছেন। হাইকোর্ট, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ কয়েকটি তদন্তকারী দল এটি পর্যবেন করে গেছে। জাহাজটির বিরুদ্ধে মামলা চলছে বলে তিনি শুনেছেন। সুইফট ক্রো সম্পর্কে এর বেশি তার জানা নেই। আর এর মালিক কে বা কারা এসব বিষয়ে খোঁজ নেয়া তার কাজ নয়। জাহাজটির বিষয়ে কিছুই জানে না বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনও। বিএসবিএর সেক্রেটারি নাজমুল ইসলাম জানান, তাদের তালিকায় এ নামে কোনো জাহাজ ভাঙার জন্য আমদানি করা হয়নি। ধারনা করা হচ্ছে সরকারি ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি   কোটিপতি হতেই ডক ইয়ার্ডের জাহাজটিকে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে আনা হতে পারে।