সংবাদ শিরোনামঃ

অবশেষে সরকার ও আ’লীগের পরাজয় ** তত্ত্বাবধায়কের দাবি মানুন নয় তো বিদায় নিন ** আওয়ামী লীগাররা বিস্মিত হতবাক! ধস আর ঠেকানো যাচ্ছে না! ** উন্নয়নের রাজনীতি উপহার দিন না হলে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে দেয়া হবে ** আ’লীগের ফ্যাসিবাদী চেহারা ** প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গ-তামাশা বনাম খালেদা জিয়ার আলটিমেটাম ** সংবাদপত্রের পাতা থেকে ** ঢাকার মহাসমাবেশে আসতে পথে পথে বাধা ** ৪২টি ট্রেন চলাচলের জংশন স্টেশন পার্বতীপুরে যাত্রী ভোগান্তির শেষ নেই **

ঢাকা শুক্রবার ২ চৈত্র ১৪১৮, ২২ রবিউস সানি ১৪৩৩, ১৬ মার্চ ২০১২

নূর আয়েশা সিদ্দিকা

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসেও ঘামছিলেন জাবেদ রহমান। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে মনার বেশ বেহাল অবস্থা। অবিশ্বাসের আগ্রাসী থাবা যেন বিশ্বাসের শুভ্র দেয়ালে গাঢ় কালো প্রলেপ মাখিয়ে দিয়েছে। সততা আর বিশ্বস্ততার মতো সুন্দর অনুভূতিগুলোর এই অপমৃত্যু মনের চাতালে চৈত্রের খরা দগ্ধ জমিনের মতোই ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। জাবেদ সাহেব টাইয়ের নটটা একটু ঢিলে করে নড়ে চড়ে বসলেন। তারপর টেবিলের ওপর রাখা কাঁচের গ্লাসটি হতে ঢকঢক করে সবটুকু পানি একটানে নিঃশেষ করে নিলেন। সারাটা দিন আজ কি যে ঝক্কির মধ্যেই না গেল। মাত্র একটি সপ্তাহ বিজনেসের কাজে বাইরে ছিলেন। আর এর মাঝেই থানা, পুলিশসহ রাজ্যের সব হাঙ্গামা এসে জমেছে।

দরজায় হঠাৎ নক করার আওয়াজ হলো।

-আসতে পারি স্যার? জাবেদ সাহেব গলায় আন্তরিকতার ভাব ফুটিয়ে বললেন

-ওহ শিওর। আসুন সাহেব, আসুন।

ম্যানেজার নাফিস সাহেব ভেতরে প্রবেশ করলেন। এরপর গলায় ইতস্তত ভাব ফুটিয়ে বললেন

-স্যার একটি প্রশ্ন করবো?

-জ্বি বলুন।

-স্যার স্থানীয় থানায় আমার একজন কাজিন আছেন। তার কাছে শুনলাম আপনি নাকি টাকা আত্মসাৎ এর মামলাটি উইথড্র করেছেন? আর এ ইনভেস্টিগেশনে পাওয়া সমস্ত ইনফরমেশনগুলো গোপন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

-জ্বি নাফিস সাহেব, আপনি ঠিকই শুনেছেন। আমি মামলাটি উইথড্র করে নিয়েছি। আসলে আমি নিজেই এই ব্যাপারটি হ্যান্ডেল করতে চাচ্ছি। তাই আমার অফিসিয়াল বিষয়ে আইনি হস্তক্ষেপ এই মুহূর্তে আমার কাম্য নয়।

নাফিস সাহেবের গলায় অবাক জিজ্ঞাসার সুর।

-কিন্তু স্যার টাকাটা তো ঠিকই ...

জাবেদ সাহেব বাধা দিয়ে বললেন

-কিছু মনে করবেন না নাফিস সাহেব। আমি এ বিষয়ে ঠিক এ মুহূর্তে কারো সাথে কথা বলতে ইন্টারেস্টেড নই।

ম্যানেজার নাফিস সাহেবের চেহারায় একটি অপ্রস্তুত ভাব ফুটে উঠল। সেদিকে লক্ষ্য করে জাবেদ সাহেব আবার বললেন- তবে আমি আপনার পারফর্মে খুবই সন্তুষ্ট। বিশেষ করে আমার অনুপস্থিতিতে আপনি যে রকম আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি সত্যিই আপনার কাজে মুগ্ধ। আপনার এই দায়িত্বশীলতার কথা আমার মনে থাকবে।

মালিকের প্রশংসায় নাফিস সাহেবের চেহারা হতে মন খারাপের ভাবটি কেটে গেল। তিনি খুশি খুশি গলায় বললেন- থ্যাঙ্ক য়্যু স্যার।

জাবেদ সাহেব বললেন- ওয়েলকাম। এরপর হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন- এখন তো প্রায় ৫টা। অফিস ছুটির সময় হয়ে এলো। এক কাজ করুন। আপনি মারুফ সাহেবকে একটু ডেকে দিন।

একটু পর মারুফ সাহেব এসে হাজির হলেন। জাবেদ সাহেব বললেন- বস মারুফ। তোমার তো টিউশনি সন্ধ্যে ৬টায় তাই না। এই ফাঁকে খানিকক্ষণ গল্প করা যায় কি বল?

 à¦®à¦¾à¦°à§à¦·à§‡à¦° চেহারায় বিস্ময়ের ঢেউ খেলে যায়- স্যার আপনি কি করে টিউ ...

জাবেদ সাহেব সশব্দে হেসে বললেন- তুমি বলতে চাইছো আমি কি করে তোমার টিউশনির কথা জানলাম তাইতো? পৃথিবীতে চলতে গেলে কম বেশি সব ইনফরমেশনই সাথে রাখতে হয়। এরপর একটু বিরতি দিয়ে গলায় রহস্য ফুটিয়ে আবার বললেন- এই যেমন ধর গত সপ্তাহে একাউন্সিল হতে খোয়া যাওয়া টাকাগুলো এখন কোথায়, কার কাছে ... এ জাতীয় সব কিছুই।

মারুফের চেহারা মুহূর্তে ফ্যাকাশে হয়ে যায়। আড়স্ট গলায় বলে

-স্যার, আ- আপনি ...

জাবেদ সাহেব মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে বললেন- আমার তো মনে হয় এতগুলো টাকা তুমি এক সাথে খরচ করে ফেলনি তাই না?

মারুফ এবার তোতলাতে শুরু করে- স্যার আমি ... টাকা ...

জাবেদ সাহেব গর্জে  উঠে বললেন- স্টপ ... মিথ্যে আমি একদম টলারেট করি না। আমার সাথে আর যাই হোক মিথ্যে বলার কোনো চেষ্টা করবে না। গত সপ্তাহে চুরি হওয়া পাঁচ লাখ টাকা কে নিয়েছে? কেন নিয়েছে? সব ইনফরমেশনই আমার কাছে আছে। আমার উচিত ছিল তোমাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া। কিন্তু না। আমি বিষয়টি নিজেই হ্যান্ডেল করতে চাই।

মারুফ দু’হাতে মুখ ঢেকে আর্তনাদ করে ওঠে। জাবেদ সাহেব ওকে কিছুক্ষণ সময় দেন। মিনিট কয়েক পর টেবিলের উপর হতে টিস্যু বক্সটি এগিয়ে দিয়ে বললেন,

-নাও চোখ মোছ। তুমি এখন আমার সাথে বের হবে। তোমার সাথে আমার কথা আছে।

এক সময় জাবেদ সাহেবকে অনুসরণ করে মারুফ লিফটের সাহায্যে নিচে নামে। এরপর জাবেদ সাহেবের নির্দেশ মতো গাড়িতে তার পাশে উঠে বসে। ওর মনটা ভেতরে ভেতরে ভয়ে সিঁটিয়ে উঠে। এখন যদি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় তবে কি হবে অবস্থা? মা, ভাই-বোনরা সবাই জানবে মারুফ চোর। ও অফিস হতে টাকা চুরি করেছে। ওর সহপাঠীরা ওকে চোর বলে ঘৃণা করবে। লজ্জায় মারুফের চোখ জলে ভরে আসে।

জাবেদ সাহেব গাড়ি চালাতে চালাতে আড় চোখে ওকে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি ইচ্ছে করেই সময়টাকে নীরবতায় ভরাট করে রাখেন। তার ২১ বছরের তরুণ এমপ্লয়ীকে আত্মসমালোচনা আর আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ দেন।

প্রায় ৪৫ মিনিট গাড়ি চলার পর তা এক সময় শহুরে পিচঢালা রাস্তা ছেড়ে গ্রামের মেঠো রাস্তায় গিয়ে পড়ে। অবারিত মাঠের পাঁজরজুড়ে সরিষার হলদেটে লাজুক হাতছানি। ধান গাছের কচি ডগাগুলো বাতাসের আদুরে স্পর্শে যেন ঝুঁকে ঝুঁকে কুর্নিশ করছে কোনো এক মহান স্রষ্টাকে। পাখিদের কিচিরমিচির কলকাকলি যেন উৎফুল্ল হয়ে স্বাগত জানালো শহুরে এই আগন্তুকদের। মারুফের বুকের ভেতর হতে থানা পুলিশের ভয়টা তখন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে। কিন্তু অনুশোচিত মনটার ভেতর গোপন ভাংচুর আর বিবেকের দহন চলতেই থাকে। অবশেষে সমাপ্ত হয় অনুল্লেখ্যনীয় এই যাত্রার।

গাড়ি ধীরে ধীরে ফুল, লতা পাতা ঘেরা একটি গেটের মধ্যে প্রবেশ করে। ‘স্বপ্ন কুটির’ লেখা বাড়িটির নেম প্লেটটা মারুফের নজর এড়ায় না। গাড়ি পার্ক করার পর জাবেদ সাহেবের আহ্বানে মারুফ নেমে আসে। গামছা কাঁধে এক মধ্য বয়সী লোক এগিয়ে এসে জাবেদ সাহেবকে সালাম জানায় ব্যস্ত হয়ে। জাবেদ সাহেব লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলেন-

-তারপর কেমন আছ তারা মিয়া? তোমার মেয়েটার শরীরের অবস্থা এখন কেমন?

তারা মিয়া ঘাড় কাত করে বলে- জ্বি স্যার ভালো আছি। কিন্তু মেয়েটার শরীরের অবস্থা বেশি ভালো না। ডাক্তার বলেছেন, হাসপাতালে ভর্তি করাতে। কিন্তু হাসপাতালের খরচ তা কম নয়।

জাবেদ সাহেব রাগত স্বরে বললেন- কেন? গতবার তোমার ছেলেটার অসুখের সময়তো ঠিকই শহরে নিয়ে চিকিৎসা করালে। আর মেয়ের ব্যাপারে টাকার চিন্তা করছো। মেয়েটা তো বেশ কিছুদিন হতেই ভুগছে। ছেলে মেয়েকে ভালোবাসার মধ্যে এই রকম পার্থক্য করলে মৃত্যুর পর কি জবাব দেবে উপরওয়ালার কাছে? তুমি আজই মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করাবে। যা টাকা লাগে আমিই দেব।

তারা মিয়া গলায় কৃতজ্ঞতার ভাব ফুটিয়ে বলে- স্যার, আপনার অনেক দয়া।

এরপর জাবেদ সাহেব মারুফকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির সামনের পুকুর ঘাটটিতে এসে বসলেন। কিছুক্ষণ একাগ্র চিত্তে জলের দিকে তাকিয়ে থাকেন। হাওয়ায় পাতার চিকন চিরুনি বোলানো শিরশিরে শব্দ। নীরবতা সত্ত্বেও মারুফ, জাবেদ সাহেবের ইস্পাত কঠিন ব্যক্তিত্ব আর উপস্থিতির উত্তাপ ঠিকই অনুভব করে নিজের ভেতর।

এক সময় জাবেদ সাহেব স্বপ্নোত্থিতের গলায় বলেন, মারুফ তোমাকে একটি গল্প শোনাই। আজ হতে অনেক দিন আগে খ্যাতিহীন এক অজপাড়া গায়ে জন্মে ছিল একটি হাড় জিরজিরে অপুষ্ট শিশু। চারদিকে বাঁশের বেড়া ও মরচে ধরা টিনের চালের ফুটো দিয়ে শীত আর বর্ষা সেই ঘরে নিত্য আনাগোনা করতো। কোনো অনুমতির তোয়াক্কা না করে তার নির্দয় চাহনি নিয়ে। এরই মাঝে রোগে ভুগে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে আকস্মিকভাবে মৃত্যু হলো শিশুটির মায়ের। এরপর সৎ মায়ের অনাদর আর অত্যাচারে ছেলেটির জীবন হয়ে উঠলো সঙ্গীন। এমনি করে চারদিক হতে বাস্তবতা ভয়াল রুদ্র চাহনি নিয়ে ছেলেটির সামনে তার হিংস্র চেহারাসহ আত্মপ্রকাশ করলো। ধীরে ধীরে আঁধারে ঢেকে যেতে লাগলো ছেলেটির বড় হওয়ার স্বপ্নগুলো। ঠিক তখনই এক মহানুভব ধনী ব্যক্তি তার মমতার হাতখানি বাড়িয়ে দিয়ে ছেলেটিকে বুকে টেনে নিলেন। এক সময় সেই ভাঙা ঘর, সেই জল টলমল পুকুর, স্নেহময়ী মায়ের কবর সবকিছু ছেলেটির চোখের সামনে হতে বিদৃশ্য হয়ে গেল।

এতটুকু বলার পর জাবেদ সাহেব সহসা থেমে গেলেন। গভীর চোখে মারুফের দিকে তাকিয়ে বললেন- জানো, সেই ছেলেটি কে? সেই ছেলেটি রহমানিয়া ইন্ডাস্ট্রির মালিক, আজকের এই আমি। সেই কৈশোরে ফেলে আসা গ্রামের স্মৃতি আজো আমাকে তাড়া করে ফেরে। তাই শহর হতে দূরে মফস্বলে এসে এই বাড়িটি আমি তৈরি করেছি। এখানে এলে আমি আমার অতীতের গন্ধ খুঁজে পাই।

রাস্তার পাশে পাটখড়ি বিক্রি করতে বসে কুপির আগুনে যখন একপাশে নিজের বইখাতা মেলে বসতাম। তখন আধপেটা ছোট শরীরটায় ক্ষুধার রাক্ষসটা জান্তব পৈচাশিকতায় আমাকে খুঁচিয়ে মারতো। কিন্তু সেই অবস্থায় শত কষ্টের মাঝেও লেখাপড়াটা আঁকড়ে ধরে রেখেছিলাম কেন জানো? আমার মৃত্যু পথযাত্রী মা মৃত্যুর সময় কাঁপা হাতটি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন- খোকা তোকে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। মায়ের অন্তিম ইচ্ছাই আমাকে আজ এ পর্যন্ত টেনে এনেছে।

একটু দম নিয়ে জাবেদ সাহেব আবার বললেন- চাকরির নিয়োগ দিতে গিয়ে অসংখ্য যোগ্যতাসম্পন্ন ক্যান্ডিডেটের মধ্য হতে তোমাকেই বাছাই করেছিলাম কেন জানো? আমি তোমার চোখের তারায় আলোর ঝিলিক দেখেছিলাম। যে আলোর ঝিলিক একদিন আমার চোখেও ছিল। আমি চাইলে আজ এতগুলো টাকা আত্মসাতের অপরাধে তোমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারতাম। কিন্তু কেন দেইনি জানো? আমি জানি তোমার চোখের তারায় যে আলোর ঝিলিক আমি দেখেছি, তা নিভিয়ে দিতে। তাই তোমাকে নিজকে শুধরে নেয়ার সুযোগ দিতে চেয়েছি।

মারুফ এবার সত্যিই ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। ওর দু’চোখ বেয়ে আসা অশ্রু অনুশোচিত আত্মার রোদন হয়ে গড়িয়ে পড়ে। ও কান্না জড়ানো গলায় বলে- স্যার, আমি আপনার বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছি। আপনি আমাকে শাস্তি দিন। আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিন।

জাবেদ সাহেব ওর পিঠে হাত রেখে বলেন- আজ আমি হয়তো তাই করতাম। কিন্তু আমি তোমার ব্যাপারে সমস্ত খোঁজ-খবর নিয়েছি। আমি জেনেছি, নিজকে প্রতিষ্ঠার এই পর্যায় পর্যন্ত আনতে কত অমানুষিক পরিশ্রমই না তুমি করেছো। এখনো চাকরির পাশাপাশি টিউশনি করে এমবিএ পড়াটা চালিয়ে যাচ্ছো। ছোট ভাইবোনদের পড়ালেখা আর অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছো। আমি জানি, তোমার মা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। আর তই টাকাটা তুমি অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচের জন্য নিয়েছো।

মারুফ, আমি শৈশবে বিনা চিকিৎসায় আমার স্নেহময়ী মাকে ধুঁকে ধুঁকে মরতে দেখেছি। সেদিনের সেই অক্ষমতা কি আমি আজ পুষিয়ে নিতে পারি না? তোমার মাতো আমারো মা। আজ যদি আমি বড় ভাইয়ের দাবি নিয় তোমার মায়ের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব তুলে নিই তোমার কোনো আপত্তি আছে?

মারুফ অবাক চোখে তাকিয়ে বলে স্যার?

জাবেদ সাহেব বললেন- আমি চাই, কালই তুমি অফিস হতে নেয়া টাকাটা ফিরিয়ে দেবে। আজ হতে তোমার মায়ের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব আমি নিলাম।

মারুফের কাছে ওর সামনে বসা জাবেদ সাহেবকে অতি মানবীয় কোনো সত্তা বলে মনে হয়। ওর উদগত অশ্রুরা বাষ্প হয়ে দলা পাকিয়ে গেল ওর গলার কাছেই।

জাবেদ সাহেব আবার বললেন- মারুফ, একটি কথা মনে রেখ। জীবনে চলার পথকে কখনো লোভ-লালসা আর মিথ্যা মরীচিকায় জড়িয়ে কদর্য করে ফেল না।  তাহলে দেখবে সত্য সুন্দরের আলোক শিখা তোমার বুকের ভেতর হতে কখন যে নিভে গেছে তুমি টেরও পাওনি। তখন অন্ধকারের কালিমায় চাপা পড়ে যাবে তোমার হৃদয়ের সৌন্দর্য। তাকিয়ে দেখ, শুভ্র আকাশ আর দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের দিকে। এই প্রকৃতি কখনো নিয়ম ভাঙে না বলেই কত সুন্দর পবিত্রতায় মাখা। আমাদের মানুষদেরও তাই হতে হবে। যতই তুমি প্রভুর প্রদর্শিত পথ ধরে নিজকে এগিয়ে নেবে ততই তোমার চলার পথ সত্য সুন্দরের রোদ্দুরে উদ্ভাসিত হয়ে যাবে। যার আলোয় আলোকিত হবে গোটা সমাজ।

দিনের আলোটা ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার আয়োজন করছিল। অস্তমিত আলোকরাশি চারিদিকে আর নিস্তেজ হয়ে আসছিল। মারুফ অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে, সেই নিস্তেজ হয়ে আসা আলোতেও জাবেদ সাহেবের চারপাশটা কি যে এক স্বর্গীয় আলোয় ছেয়ে আছে। মারুফ অনুতপ্ত মনটিকে গুছিয়ে নিয়ে নিজেও পা বাড়ায় সেই আলোর রেখা ধরে।

লেখিকা জেদ্দা প্রবাসী

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।