ছাত্রলীগ ও পুলিশের গুলিতে জামায়াত-শিবিরের ৪ জন নেতা-কর্মী নিহতের প্রতিবাদ

বৃহত্তর চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত

হরতাল চলাকালে চট্টগ্রাম লালদীঘি এলাকায় কোতোয়ালী থানা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

গত ৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রামের আহ্বানে ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে জামায়াত-শিবিরের ৪ নেতাকর্মী নিহতের প্রতিবাদে বৃহত্তর চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়। হরতাল পালনের জন্য চট্টগ্রামবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ। অপরদিকের হরতাল স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করে জনগণ জামায়াত-শিবিরের ৪ জন নেতা-কর্মীর খুনীদের বিচার বিতর্কিত রায় ও ট্রাইব্যুনাল বাতিল এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকারের দুঃশাসন থেকে জনগণ বাঁচতে চায়। বার বার হরতাল স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করে ব্যর্থ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে দেশবাসী। আজকের হরতাল সফল করে জনগণ চট্টগ্রামে আওয়ামী ছাত্রলীগ ও পুলিশের গুলিতে নিহত ৪জন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীর খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, অবিলম্বে বিতর্কিত রায় এবং ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার পুলিশকে দলীয় কর্মী হিসেবে ব্যবহার করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীরের নির্দেশেই পুলিশ এবং ছাত্রলীগ যৌথ উদ্যোগে শিবিরের মিছিলে গুলি চালিয়েছে। তিনি অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ম খা আলমগীর এবং আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করেন। সরকার দলীয় ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবিরের উপর জুলুম-নির্যাতন করার কারণে সংগঠনের প্রতি জনগণের সহানুভুতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ৪ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও ৫ ফেব্রুয়ারি প্যারেড মাঠের ঐতিহাসিক জানাজা তারই সাক্ষী বহন করে। সরকার যদি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেয়। তাহলে কতলোকের সমাবেশ হয় তা দেখা যাবে। তিনি বলেন, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা মন্ত্রী রাজনৈতিক আচরণ করতে পারে না। পাশাপাশি ডিমপি’র কমিশনার বেনজির আহমকেও উর্দি পরে নয় উর্দি খুলে রাজপথে এসে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানের আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, পাঁচলাইশ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস কার এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য শিবিরের নেতা-কর্মীদের গুলি করে হত্যা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তা জনগণ জানতে চায়? তিনি পাঁচলাইশ থানার ওসি প্রদীপের আচরণ আইনানুগ নয় এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। অবিলম্বে তাকে বরখাস্ত করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানান। তিনি অবিলম্বে পাহাড়তলী ও আগ্রবাদে শিবিরের মিছিলে ডবলমুরিং থানা পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ গুলিতে নিহত শিবির নেতা আবিদুল ইসলাম, ইমরান খান ও জামায়াত কর্মী শফিকুর রহমান এবং নিরীহ দোকান কর্মচারী আফজল হোসেনের খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বিতর্কিত রায় ও ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

জামায়াতে ইসলামী কোতোয়ালী থানার উদ্যোগে হরতাল চলাকালে এক পথ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

লালদিঘীর পুর্বপাড়ে কোতোয়ালী থানা জামায়াতের উদ্যোগে থানা আমীর ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নগর উত্তর শিবির সভাপতি মসরুর হোসাইন, শ্রমিক কল্যাণ নগর প্রচার সম্পাদক এস এম লুৎফর রহমান, জামায়াত নেতা আ ক ম ফরিদুল আলম ও ছাত্রশিবির নেতা নুর হোসেন প্রমুখ। সভা শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদণি করে।

জামায়াতে ইসলামী চান্দগাঁও থানার উদ্যোগে হরতাল চলাকালে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ কলিম উল্লাহর সভাপতিত্বে। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ।

হরতাল চলাকালে কোতোয়ালী উত্তর থানা জামায়াতের এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল থানা জামায়াত নেতা জানে আলমের সভাপতিত্বে এনায়েত বাজারে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদণি করে।

হরতাল চলাকালে জামায়াতে ইসলামী বাকলিয়া থানার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থানা আমীর এম এ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদণি করে।

বন্দর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে হরতাল চলাকালে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল থানা সেক্রেটারি মাহমুদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা আহছানুল্লাহ, মুহাম্মদ ইকবাল, শফিউল আলম ও মুহাম্মদ হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

পাঁচলাইশ থানা জামায়াতের উদ্যোগে হরতাল চলাকালে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা কামাল উদ্দিন, মাসুদ বিন বজল ও ছাত্রশিবির নেতা আজিজুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হরতাল চলাকালে বায়েজিদ থানা জামায়াতের এক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় থানা আমীর মুহাম্মদ জাকের হোসেনের সভাপতিত্বে। এতে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত নেতা মাওলানা এম এন ইসলাম, আবুল মনছুর, নুরুল আলম ও ওসমান গণি। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল অনুুষ্ঠিত হয়।

হরতাল চলাকালে খুলশি থানা আমীর মুহাম্মদ আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও শামসুল আলম প্রমুখ।

পাহাড়তলী থানা জামায়াতের উদ্যোগে হরতাল চলাকালে এক সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয় থানা আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে। এতে বক্তব্য রাখেন, থানা সেক্রেটারি ফয়েজ আহমদ ও জামায়াত নেতা আনোয়ারুল খান প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি