সংবাদ শিরোনামঃ

মার্কিন-ভারত প্রক্সি-যুদ্ধ! ** জামায়াতের মিছিলে পুলিশের গুলি ** শাহবাগের কথায় রায় দেয়া হলে ট্রাইব্যুনালের আর প্রয়োজন কি? ** রাজনৈতিক অপশক্তি প্রতিরোধে মানুষ চায় বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ** ফ্যাসিবাদকে সহায়তা দিয়ে দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ সম্ভব নয় ** কন্যা পররাষ্ট্রনীতিতে পিতার পথ পরিত্যাগ করেছেন ** ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে জাতীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি ** তালায় কপোতা খনন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত **

ঢাকা, শুক্রবার, ৩ ফাল্গুন ১৪১৯, ৪ রবিউস সানি ১৪৩৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

জমে উঠেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বিখ্যাত গুড়-পাটালির হাট। সপ্তাহে শুক্র ও সোমবার বসে হাট। ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালীগঞ্জের গুড়-পাটালির ব্যাপক চাহিদা আছে

শাহনেওয়াজ খান সুমন, ঝিনাইদহ থেকে : ‘বউ, গাছ কাটতি যাব, ঠিলে ধুয়ে দে’- গানটি একসময় যশোর অঞ্চলের গ্রামগঞ্জে শীত মৌসুমে হরহামেশাই শোনা যেত। আজ আর তেমনটা নেই। একই সঙ্গে চোখে পড়ে না পিঠে ঠুঙি বাঁধা গাছিকেও। হারিয়ে যেতে বসেছে ‘যশোরের যশ খেজুরের রস’ প্রবাদটিও।

আশার গুড়ে বালি নয়, স্বাদের গুড়ে চিনি ঢুকেছে। খটখটে কারখানার চিনি কেড়ে নিয়েছে খেজুরের রসের যশ। যশোর অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক খুশবুময় নলেন গুড়কে করে তুলেছে ঘ্রান ও স্বাদহীন। লালচে রঙের কথিত খেজুরের গুড় কিনে ঠকছে ক্রেতারা এবং ক্রমেই তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

যশোর অঞ্চলের খেজুরের গুড়ের রয়েছে শত বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক সতীশ চন্দ্র মিত্রের ‘যশোর খুলনার ইতিহাস’ গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, একসময় যশোর অঞ্চলের প্রধান কৃষিজ পণ্য ছিল খেজুরের গুড়। এই গুড়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল অর্থনৈতিক নানা কর্মকাণ্ড। ওই গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, ১৯০০-০১ সালে পুরো বঙ্গে খেজুরের গুড় উৎপাদিত হয়েছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ মণ। এর মধ্যে কেবল যশোরেই উৎপাদিত হয়েছে ১৭ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ মণ, যার দাম ছিল সেই আমলেই ১৫ লাখ টাকা। এই গুড় আমেরিকা-ইউরোপেও রফতানি হয়েছে। খেজুরগাছের জন্যই অষ্টাদশ শতাব্দীতে গ্রামগঞ্জে গুড় তৈরির হাজার হাজার কারখানা গড়ে ওঠে। ১৮৬১ সালে প্রথম চৌগাছার তাহিরপুরে কপোতা নদের ধারে মি. নিউ হাউস খেজুরের রস দিয়ে চিনি উৎপাদনের যান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলে। এ কারখানায় উৎপাদিত চিনি ইউরোপে রফতানি হয়েছে। ১৮৮০ সালে কারখানাটি এমেন্ট অ্যান্ড কম্পানি কিনে নেয়। ১৮৮৪ সালে এটি ফের বিক্রি হয়ে যায় বালুচরের জমিদার রায়বাহাদুর ধনপত সিংহের কাছে। ১৯০৬ সালে তার মৃত্যুর পর ১৯০৯ সালে কাশিমবাজারের মহারাজ মনীন্দ্র চন্দ্র ও কলকাতা হাইকোর্টের জজ সারদাচরণ মিত্র কারখানাটি কিনে নেন। তারা জাপান, আমেরিকা ও ইউরোপে এই কারখানায় উৎপাদিত শত শত মণ খেজুরের গুড় রফতানি করেছেন। ১৯৪৭ সালের আগ পর্যন্ত কারখানাটি চালু ছিল। পরে আখের চিনির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে থেমে যায় কারখানাটির চাকা।

আরো জানা যায়, পুরো বঙ্গে নলেন গুড়ের সন্দেশের ৯৯ শতাংশ যশোর থেকেই সরবরাহ করা হতো। উপমহাদেশের বিখ্যাত কলকাতার ভিমনাগের সন্দেশ তৈরি হয়েছে যশোরের নলেন গুড় দিয়েই। আজও যশোরের সব মিষ্টির দোকানে তৈরি হচ্ছে নলেন গুড়ের সন্দেশ। কিন্তু নলেন গুড়ের সেই ম-ম খুশবু আর পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিন অনুসন্ধান করে জানা যায়, খেজুরের গুড়ে মেশানো হচ্ছে চিনি। বর্তমানে এক কেজি নলেন পাটালি গুড় হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে। আর চিনি মেশানো ভেজাল পাটালি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তরল খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে চিনি কিনে খেজুরের রসের সঙ্গে মিশিয়ে ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরি করছে। লালচে রঙের দেখতে এই গুড় বাড়িতে কয়েক দিন রেখে দিলে সাদা হয়ে যায়। এর ঘ্রাণ ও স্বাদ নেই বললেই চলে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বাজারের গুড় ব্যবসায়ী মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ডু বলেন, আমরা গুড়ে চিনি মেশাই না। চাষিরা বাড়ি থেকেই চিনি মিশিয়ে আমাদের কাছে গুড় বিক্রি করে। ফলে আমাদের করার কিছু থাকে না।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন নাসরিন সুলতানা এ ব্যাপারে বলেন, মিষ্টির মধ্যে মিষ্টি ভেজাল দেওয়া হচ্ছে। ফলে গুড়ে চিনি মেশানোর বিষয়টি পরীায় ধরা পড়বে না। চিনি ও গুড় পৃথকভাবে নির্ণয় করা মুশকিল। এ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধরে রাখার স্বার্থেই এ ব্যাপারে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।