সংবাদ শিরোনামঃ

স্থানীয় সরকার ধ্বংসের নীলনকশা ** কেন মানুষ অথৈ সাগর পাড়ি দিচ্ছে, দায় কার? ** দেশকে রাজনীতিহীন করার ষড়যন্ত্র ** গণতন্ত্রহীনতা দেশকে সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে ** আফগানিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা ** গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে : বিচারপতি আব্দুর রউফ ** নরেন্দ্র মোদির সফর : বাংলাদেশের প্রত্যাশা! ** গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নতি কখনই সম্ভব নয় ** নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন ** সোনা নয়, সোনালী ফাঁস ** নিখোঁজ আর গুম ** জগতসেরা পর্যটক ইবনে বতুতা ** বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই ** কুষ্টিয়ায় পারিবারিক কলহে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ৩ শাবান ১৪৩৬, ২২ মে ২০১৫

শিশির আবদুল্লাহ : আড়াই দশক আগে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের পতনের পর অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি লাভ করেছে।

এক সময় হতদরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বসভায় বহু ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছে।  আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও বাংলাদেশ নিয়ে শুধু নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের ধারাবাহিকতা বাদ দিয়ে বহু ইতিবাচক বিষয় তুলে ধরছে।

তবে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, রাজনৈতিক হানাহানি আর গার্মেন্ট ধসে পড়ার খবরও এ সময় শিরোনাম হয়েছে বিশ্ব গণমাধ্যমে।

কিন্তু চলমান দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী সঙ্কট দৃশ্যত বাংলাদেশের সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়ে দেশের ইমেজকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।   বিশেষভাবে, দারিদ্র্য বিমোচনে বর্তমান সরকারের ‘সফলতা’র আন্তর্জাতিক ‘স্বীকৃতি’ মেলার মধ্যেই বাংলাদেশে দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব চরম পর্যায়ে চলে যাওয়া সংক্রান্ত খবর বর্তমানে বিশ্বমিডিয়ায় ব্যাপকহারে প্রচারের ফলে ইমেজ সঙ্কট তীব্র হয়েছে।

এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত একটি ইস্যু হচ্ছে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের অভিবাসী সঙ্কট। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের  বড় বড় মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন এই ইস্যু নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রতিদিন বিবৃতি দিচ্ছে। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন তৎপরতাও চালাচ্ছে তারা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিদিন সমুদ্রে ভাসমান ক্ষুধার্ত-বস্ত্রহীন ও ক্রন্দনরত রোহিঙ্গাদের সাথে বাংলাদেশীদের ছবি প্রকাশিত হচ্ছে। এসব বাংলাদেশী এবং তাদের সাথে থাকা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদেরকে আশ্রয় দিতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডকে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অন্য অর্থ হচ্ছে, নিজের দেশের এই ক্ষুধার্ত নিরুপায় মানুষদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষমতা যে বাংলাদেশের নেই এটা তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ।

যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ‘গণতন্ত্রের’ চেয়ে ‘উন্নয়নকে’ প্রাধান্য দেয়ার স্লোগান নিয়ে এগোচ্ছে, এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নের মডেল’ হিসেবে প্রচার করছে সেখানে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী’ হিসেবে পরিচিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের মতোই কাজের সন্ধানে বের হয়ে অসহায়ভাবে হাজার হাজার বাংলাদেশী নাগরিকের সাগরে ভেসে থাকার ব্যাপারটি মারাত্মক নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করছে।

সমুদ্রে ভাসমান কয়েক হাজার মানুষের প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশী বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানাচ্ছে। বাকিরা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা মুসলিম।

রোহিঙ্গাদের ব্যাপারটি আলাদা। জাতিগত পরিচয়ের কারণে তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে বা দখল করে ছেলে-বুড়ো-নারী-শিশু নির্বিশেষে সবাইকে হত্যা করা কিংবা সাগরে তাড়িয়ে দেয়া হয়। নৌকাগুলোতেও তা-ই দেখা যাচ্ছে- সব বয়সী মানুষই রয়েছেন।

কিন্তু ভাসমান বাংলাদেশী নাগরিকদের বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন। এরা সবাই গিয়েছেন কাজ খুঁজতে। দেশে কাজ নেই, অথবা ছোটখাটো ব্যবসাপাতি যা ছিল সব খুইয়ে বসেছেন দেশের অর্থনীতির দুরাবস্থার কারণে। তাই বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে অন্যদেশে কাজ খোঁজার জন্য সাগরে ভাসতে হয়েছে তাদের।

বেকার বা অর্ধবেকার জীবনে অসহায়ের মতো বসে থেকে ছেলে-মেয়েদের ক্ষুধা-অসহায়ত্বের যন্ত্রণা চোখে দেখার চেয়ে তাদের কাছে অনন্তের পথে যাত্রাই শ্রেয়। ভাগ্য ভালো থাকলে কাজ জুটে যাবে, না হলে অন্তত নিজের চোখে পরিবারের অন্যদের কষ্ট দেখতে হবে না! অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জেনেও এইসব মানুষ শুধু কাজের সন্ধানে দালালদের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভিন দেশে প্রবেশ করতে যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান মনে করেন, অভিবাসী ইস্যুতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর বেশ কিছু নেতিবাচক ফলাফলও আছে বলেও মনে করছেন তিনি।

আরটিএনএন-কে অধ্যাপক তারেক বলেন, সঙ্কটটির দুইটা দিক রয়েছে। এক. একটা অংশ  অভিবাসী মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে মূলত বাংলাদেশে ঢুকতে চাচ্ছে। এখানে না পেরে তারা পার্শ্ববর্তী অন্য দেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে।

দুই. অন্য অংশটি বাংলাদেশের নাগরিক। তারা কাজের জন্য বিদেশে যেতে বের হয়েছে।

‘দ্বিতীয় বিষয়টি বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে প্রশ্নের সম্মুখীন করবে। বাইরের লোকজন মনে করবে দেশটিতে বেকারত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এটা সরকারের জন্য নেতিবাচক। আবার অনেকে ধরে নিতে পারে এসব দেশছাড়া লোকজন সরকারের নিপীড়নের শিকার হয়েও দেশ ছাড়তে পারে। যেহেতু তাদের সঙ্গে থাকা মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এই ধরনের নিপীড়নের শিকার বলে সবাই জানে। ফলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এটা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়,’ বলেন তারেক শামসুর রেহমান।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে নিপীড়নের বিষয়টি বাইরে প্রতিষ্ঠিত হলে এখানকার অস্থিতিশীলতারই বার্তা যাবে বহির্বিশ্বে। এর একটা অর্থনৈতিক দিকও আছে- বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আরো নিরুৎসাহিত হবেন।’

কোস্ট গার্ড থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের সীমানা পার হয়ে এত সংখ্যক নাগরিক কিভাবে অন্যদেশের সীমান্তে যায়, এই প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান করণীয় সম্পর্কে অধ্যাপক তারেক বলেন, এখন উচিত নতুন করে কেউ যাতে সমুদ্রে ভাসতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পুশ করার চেষ্টার বিষয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দ্রুত আসিয়ান ফোরাম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিযোগ উত্থাপন করলে দেশটি এই ইস্যুতে চাপের মুখে পড়বে।

উখিয়ার তিন গ্রামে নিখোঁজ ৫০০

কক্সবাজার থেকে ৫৪ কিলোমিটার দূরে উখিয়া সমুদ্র উপকূলের পাহাড়ি গ্রাম পিনজিরকুল। গত তিন মাসে এই গ্রাম থেকে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া পাচার হয়েছে আট শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২২০ জন। পুলিশ, মানব পাচার রোধে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

পিনজিরকুলের পাশের দুই গ্রাম সোনাইছড়ি ও পশ্চিম দরগাহবিল থেকেও একই সময়ে পাচার হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষ। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২৭৭ জন।

মানব পাচার প্রতিরোধ নিয়ে উখিয়া উপজেলায় কাজ করা বেসরকারি সংস্থা হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম জানান, পিনজিরকুল, দরগাহবিল ও সোনারপাড়া এই তিন গ্রাম থেকে পাচার হওয়া অন্তত ৫০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও মালয়েশিয়ার কারাগারে বন্দীজীবন কাটাচ্ছেন এখানকার প্রায় ৩০০ মানুষ।

গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে এই তিন গ্রামের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে পাচার হওয়ার পর নিখোঁজ ১২০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে সংস্থাটি।

কর্মকর্তারা জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিরা থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের কারাগারে বন্দী রয়েছেন। হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক জানান, বন্দী ১২০ জনকে উদ্ধারের জন্য গত ৩০ এপ্রিল তালিকাটি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

শুধু একটি উপজেলায় এত সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ থাকলে সারাদেশ থেকে কত মানুষ নিখোঁজ তার কোনো পরিসংখ্যান নেই।

সরকারের ফাঁকা বুলি?

২০১৩ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য নিউইয়র্ক সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ‘সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড’ নামক ওই পুরস্কারটি ‘দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য’ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছিল বলে খবরে প্রকাশ হয়েছিল তখন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার নিয়ে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনায় বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পরিবর্তে উন্নয়নে রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক সম্মানের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’

সরকারের পক্ষ থেকে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিয়ে নানা সময়ে নানা কথা বলা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা সমুদ্রে ভাসমান বাংলাদেশীরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন।

সরকারের মন্ত্রীরা নানা সময়ে দাবি করেছেন ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ১ কোটির কাছাকাছি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জেও একই কথা বলেছেন।

কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী দাবি করেছিলেন ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১ কোটি করে মোট ২ কোটি লোকের চাকরির ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু গত বছরের আগস্টে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের একটি বক্তব্য ছিল মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের বিপরীত। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন বিষয়ক সামাজিক সংগঠন (এমিনেন্স) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়লেও, মাথাপিছু ক্রয়ক্ষমতা সেভাবে বাড়েনি। দেশে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ শ্রমশক্তি রয়েছে। তবে এর মধ্যে শতকরা ২০ ভাগের কম মানুষের আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। বাকি শ্রমশক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেকার।

অর্থমন্ত্রীর এই তথ্য থেকে দেশের সক্ষম মানুষদের বেশিরভাগই যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেকার তা জানা যায়। আর গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে বুঝা যাচ্ছে, এই বেকারত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে।

২০১৪ সালের অক্টোবরে দৈনিক কালের কণ্ঠের ‘কর্মসংস্থান নেই চলছে ছাঁটাই’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর গল্প মোটামুটি একই রকম- বিক্রি নেই, টাকা নেই, নতুন নিয়োগ নেই। উল্টো পুরনো কর্মীদের বিদায় করে টিকে থাকার চেষ্টায় আছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই বেতন অনিয়মিত হয়ে গেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে গত কোরবানির ঈদে বোনাস হয়নি। প্রতিষ্ঠানের করুণ দশা দেখে কর্মীরাও মালিকের কাছে বোনাস চায়নি। তারা সবাই আবার সুদিনের অপেক্ষায় আছে।

ওদিকে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে আছে তাদের অন্য ব্যবসার ওপর ভর করে। চার-পাঁচটি খাতে যাদের ব্যবসা আছে তারা একটি-দুটি খাতে ভালো ব্যবসা করে সেই টাকা ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে নিজেদের আবাসন ব্যবসায়। তবে তাদের মনেও প্রশ্ন- এ অবস্থা আর কতকাল?’

এদিকে বিদ্যুৎ সঙ্কট, গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়া, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ নানা কারণে নতুন বিনোয়োগ হচ্ছে না দেশে। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। মূলধনী যন্ত্রপাতির পাশাপাশি বিভিন্ন কারখানার কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ হু হু করে বাড়ছে। ব্যাংকে জমেছে অলস টাকার পাহাড়।

নতুন বিনিয়োগ না আসার পাশাপাশি বন্ধ হয়েছে শত শত গার্মেন্টসহ অন্যান্য কারাখানা। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের কুটির শিল্প মালিকরাও পরিবহন সমস্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিপরীতে সঠিক মূল্য না পাওয়া, সরকারি দলের ক্যাডার এবং পুলিশের চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা গুটাতে বাধ্য হচ্ছেন। এভাবে প্রায় প্রতিটি সেক্টরে কমবেশি কর্মসংস্থান কমছে।

দেশ ছাড়ার উৎস খুঁজতে চাপ দেবে জাতিসংঘ

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষ কেন দেশ ছাড়ছে, তার উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন বলে মনে করে জাতিসংঘ। গত ১৬ মে শনিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে নিয়মিত মধ্যাহ্ন ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক এ কথা জানান।

বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মানুষ পাচারকারীদের শিকার হয়ে গভীর সাগরে অভুক্ত অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে জীবন কাটাচ্ছে। গত কয়েক দিন ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবারও ২০০ অভিবাসী উদ্ধার হয়েছে। তাদের অর্ধেকের বেশি বাংলাদেশী ও বাকিরা রোহিঙ্গা। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে সমস্যার মূলের খোঁজ নিতে জাতিসংঘ থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সরকারকে কোনো চাপ দেওয়া হবে কি না, যেখানে মানুষ নিপীড়ন থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছে এ প্রশ্নের জবাবে ফারহান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের গত ১৫ মে’র বিবৃতিতে এ ধরনের বিষয় উল্লেখ করা ছিল, আপনারা দেখে থাকতে পারেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, যেসব জায়গায় অতিমাত্রায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেখানে সমস্যার উৎসের বিহিত করা প্রয়োজন। তাহলে বোঝা যাবে, আসলে কী কারণে মানুষগুলো সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।