সংবাদ শিরোনামঃ

স্থানীয় সরকার ধ্বংসের নীলনকশা ** কেন মানুষ অথৈ সাগর পাড়ি দিচ্ছে, দায় কার? ** দেশকে রাজনীতিহীন করার ষড়যন্ত্র ** গণতন্ত্রহীনতা দেশকে সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে ** আফগানিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা ** গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে : বিচারপতি আব্দুর রউফ ** নরেন্দ্র মোদির সফর : বাংলাদেশের প্রত্যাশা! ** গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নতি কখনই সম্ভব নয় ** নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন ** সোনা নয়, সোনালী ফাঁস ** নিখোঁজ আর গুম ** জগতসেরা পর্যটক ইবনে বতুতা ** বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই ** কুষ্টিয়ায় পারিবারিক কলহে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ৩ শাবান ১৪৩৬, ২২ মে ২০১৫

প্রায় তিন মাস ধরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) পুলিশি পাহারায় চলছে নয়ন বাছারের (২২) চিকিৎসা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকায় বাসে আগুনের ঘটনার পর পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে।

নয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ নয়নকে শিবিরের কর্মী বানিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেছে। পুলিশকে বারবার নয়ন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বললেও পুলিশ বিশ্বাস করেনি।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় নয়নের বিরুদ্ধে মামলা করেন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এরশাদ হোসেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানার শাঁখারীবাজার মোড়ে একটি বাস থেকে যাত্রী নামছিল। এ সময় বাসটির মধ্যে দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যাত্রীদের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তিনিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান। তখন দুষ্কৃতকারীরা পালানোর চেষ্টা করে এবং এক যুবক তাঁদের লক্ষ্য করে ককটেল ছোঁড়ার চেষ্টা করে। তখন সঙ্গে থাকা কনস্টেবল কামাল হোসেন শর্টগান দিয়ে দুটি গুলি করে। এতে ওই যুবকের পায়ে লেগে সে জখমপ্রাপ্ত হন। পরে জানা যায়, ওই যুবকের নাম নয়ন বাছার।

তবে নয়নের স্বজনেরা জানান, নয়ন দয়াগঞ্জ এলাকায় একটি মেসে থাকেন। লক্ষ্মীবাজারে টিউশনি করতে যাচ্ছিলেন তিনি। বাসে আগুন লাগলে সবার সঙ্গে তিনিও নেমে দৌড়াতে থাকেন। তখন পুলিশ তাঁকে ধরে বলে, ‘তুই আগুন ধরাইছস। তুই শিবির করস।’ তখন নয়ন পুলিশকে জানান, তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের। পুলিশ নাম জানতে চাইলে তিনি নয়ন বাছার বলে জানান। তখন পুলিশ বলে, ‘নয়ন বাশার কোনো হিন্দু লোকের নাম হইল।’ এই বলে কিছুদূর নিয়ে গিয়ে তাঁর পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা হয়।

ঘটনার পর থেকেই নয়ন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত ১৬ মে বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে একটি বেডে হেলান দিয়ে বসে এক স্বজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। বাঁ পায়ে ব্যান্ডেজ। ওই কক্ষে সাত-আটজন পুলিশ। এদের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশও ছিল।

ভেতরে গিয়ে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে নয়ন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি টিউশনি করতে যাচ্ছিলাম। আমি বারবার পুলিশকে বলেছি, আমি হিন্দু, আমি শিবির নই, কোনো রাজনীতি করি না। তবু তারা কথা শোনেনি। পত্রিকায় পড়েছি, পুলিশ বলেছে আমার কাছে নাকি অস্ত্র পাওয়া গেছে। পুলিশকে জিজ্ঞেস করেন, এখন ওই অস্ত্রটা কোথায়?’

পায়ের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে এক পুলিশ এসে বাধা দেন। বলেন, ‘এভাবে তথ্য নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।’

পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রথম আলোকে বলেন, নয়নের বাঁ হাঁটুর ওপর দুটি গুলির ছিদ্র পাওয়া গেছে। তাঁর পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ। তবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগবে। জানতে চাইলে একজন চিকিৎসক জানান, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, গুলি কাছ থেকেই করা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমানুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে নয়নকে পাবলিকই ধরেছিল। কোতোয়ালি থানা এলাকায় ঘটনা হলেও টানা-হেঁচড়া করতে করতে সূত্রাপুর থানা এলাকায় চলে যায়। এ কারণে সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়েছে।’

‘কিন্তু এজাহারে তো পাবলিক ধরার কথা নেই’ প্রশ্ন করলে আমানুল্লাহ বলেন, ‘আপনি বাদীর সঙ্গে কথা বলেন। তবে নয়ন ছাত্রদল কর্মী।’ কোনো প্রমাণ আছে কি না এবং তদন্তে তার দোষ পাওয়া গেছে কি না প্রশ্ন করলে আমানুল্লাহ বলেন, ‘কাগজে-কলমে পাই নাই। তবে শুনেছি। আর সে দোষী না নির্দোষ তা তদন্তের এ পর্যায়ে বলতে চাচ্ছি না।’

যোগাযোগ করা হলে মামলার বাদী কোতোয়ালি থানার এসআই এরশাদ বলেন, ‘আমি সব এজাহারে উল্লেখ করেছি।’

জানা গেছে, নয়ন বাছারের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জের গোবিন্দপুরে। মা-বাবার একমাত্র সন্তান তিনি। তবে তার বয়স যখন ছয় মাস, তখন তার বাবা তাকে ও তার মাকে ছেড়ে ভারতে চলে যান। মা শিখা রানী মজুমদার গোবিন্দপুর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। নয়ন পিরোজপুরে একটি স্কুল থেকে এসএসসিতে এ প্লাস এবং একই এলাকার একটি কলেজ থেকে এ গ্রেডে পাস করে জগন্নাথে ভর্তি হন। টিউশনি ও মায়ের পাঠানো কিছু টাকা দিয়েই চলছিল তাঁর লেখাপড়া। তবে ছেলের এ অবস্থার কথা শুনে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় ছুটে এসেছেন মা শিখা রানী। তিন মাস ধরে তিনি হাসপাতালে ছেলের সঙ্গেই থাকছেন।

মা শিখা রানী কাঁদতে কাঁদতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাছার হচ্ছে আমাদের বংশীয় উপাধি। নয়ন পুলিশকে নাম বলার পর বাছার শুনে মনে করেছিল বাশার। তাই তারে শিবির বলে সন্দেহ করে। আবার এখন বলছে ছাত্রদল। আমার ছেলেটা নির্দোষ। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। পুলিশ যদি অন্যায় করে ভগবানই তাদের বিচার করবে। আমার একটাই দাবি, আমরা মুক্তি চাই।’ সৌজন্যে : প্রথম আলো,১৭ মে ২০১৫

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।