তনুর বাবাকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা

আমরা গরিব বলে কি বিচার পাব না : তনুর মা

স্টাফ রিপোর্টার : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকারীদের শনাক্ত, গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে কুমিল্লায় মানববন্ধন করা হয়েছে। গত ২০ জুন দুপুরে নগরীর কান্দিরপাড় পুবালী চত্বরে জাস্টিস ফর তনু এ ব্যানারে গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে তনুর মা আনোয়ারা বেগম ও ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তনুর মা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ভুল উল্লেখ করে চিকিৎসকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি বলেন, আমাদের বাসায় এসে কর্নেল মাসুদ বললেন রাস্তার পাশে যখন তনুর সেন্ডেল পেয়েছেন তা নিয়ে চলে এলেন না কেন? কোনো বাবা-মা কি পারে সন্তানের সেন্ডেল নিয়ে তার খোঁজ না করে ঘরে ফিরে আসতে ? তনুর লাশ শিয়াল-কুকুরে খেলে তখন বলতো শিয়ালে মেরেছে। তনুর যদি স্ট্রোক হতো তাহলে তার লাশ রাস্তার পাশে পড়ে থাকত। জঙ্গলে পড়ে থাকত না। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকত না। তনুর বাবাকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। আমরা তো সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। আমরা তনু হত্যার বিচার চাইছি। তনুর খুনিদের না ধরে আমাদের পাহারা দিয়ে রাখা হচ্ছে। বাসার ডিশ লাইন কেটে দেয়া হয়েছে যেন তনুর সংবাদ দেখতে না পারি। কিছু দিন আগে তনুর লাশ উদ্ধারের স্থানে তনুর বাবা গিয়েছিল। সেখানে তাকে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে গান না গেয়ে শ্রীমঙ্গল বেড়াতে যাওয়ায় মেয়েটিকে মেরে ফেলা হয়। সেনাসদস্যরা বাসা থেকে তনুর ডায়েরি, অ্যালবাম সব নিয়ে গেছে। তার আর কোনো স্মৃতিচিহ্ন বাসায় নেই। তিনি মেয়ে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার চান। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরেশ কর, গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সমন্বয়ক খায়রুল আনাম রায়হান, লেখক মোতাহার হোসেন মাহাবুব ও তনুর মা আনোয়ারা বেগম। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তনু হত্যার ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো আসামিদের শনাক্ত করা হয়নি। বক্তারা দ্রুত তনু হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ তনুর লাশ কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার নিকট পাওয়া যায়। ২১ মার্চ তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। এতে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয় এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনটি দেন ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে আদালতের আদেশে ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়। দীর্ঘ ২ মাস পর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেয়া হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে তনুর পরিবার।