যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে যেসব কথা লেখা হয়েছে তা নির্জলা মিথ্যাচার : হামিদ আযাদ

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায় “মৃত্যুর আগে ফাহিমের ভিডিও জবানবন্দী।” শিরোনামে গত ১৯ জুন রোববার প্রকাশিত রিপোর্টে “পুলিশ জানতে পেরেছে-হিজবুত তাহরির, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটীমের নামে জামায়াত ও শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের উপর আত্মঘাতি হামলা চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে জামায়াতের। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জামায়াত হাত মিলিয়েছে হিজবুত তাহরির, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটীমসহ বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষিত সদস্যদের সঙ্গে।” মর্মে যে সব ভিত্তিহীন মিথ্যা কথা লেখা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে যে সব কথা লেখা হয়েছে তা নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

গত ১৯ জুন রোববার দেয়া বিবৃতিতে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের সাথে যোগসাজশে কিছু সংখ্যক সংবাদপত্র এবং মিডিয়া ভিত্তিহীন মিথ্যা ও বানোয়াট রিপোর্ট প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, উত্তরার একটি খাল থেকে অস্ত্র উদ্ধারের রিপোর্টে দেখা যায় যে, ‘একজন পুলিশ কনস্টেবল তার শিশুপুত্রকে প্রস্রাব করাতে খালের পাড়ে নিয়ে যায় এবং খালের পাড়ে একটি নম্বর বিহীন কালো রঙের পাজেরো গাড়ি দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পায় ও তার মধ্যে থেকে তিনজন লোক কিছু ট্রাভেল ব্যাগ খালের মধ্যে ফেলে দিয়ে গাড়িতে করে পালিয়ে যায়’ এ বিষয়টি রহস্যজনক এবং সাজানো নাটক বলে মনে করে জনগণ। এ রকমই রহস্যজনক সাজানো নাটক মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষককের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিমকে পুলিশের হাতে বন্দী থাকা অবস্থায় তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করা এবং হত্যা করার পর তার জবানবন্দীর বরাত দিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা চালানো। এ ধরনের ভয়াবহ রহস্যজনক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের কোনো বিকল্প নেই। তাই অবিলম্বে এসব ভয়াবহ রহস্যজনক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে তা জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক।

তিনি বলেন, দৈনিক যুগান্তরের এ রিপোর্ট সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, হিজবুত তাহরির, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটীমের সাথে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই যুগান্তরের রিপোর্টে উল্লিখিত ঐ সব সংগঠনের নামে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটানো কিংবা বাংলাদেশের অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের ওপর আত্মঘাতি হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা কিংবা যুগান্তরের রিপোর্টগুলোতে উল্লিখিত জঙ্গি সংগঠনের সাথে হাত মিলানোর প্রশ্নই আসে না। আর জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডার থাকার প্রশ্ন অবান্তর। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করার হীন উদ্দেশ্যেই দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পুলিশের হাতে বন্দী থাকা অবস্থায় গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিমকে তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে নাটক সাজিয়ে হত্যা করে এখন পুলিশ তার বক্তব্যের বরাত দিয়ে মনগড়া মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।