সংবাদ শিরোনামঃ

ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে নয়া মোড় ** করোনা মোকাবিলায় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী ** জামায়াতের সাবেক আমীর মকবুল আহমাদের ইন্তেকাল ** ফেনীতে মকবুল আহমাদের দাফন সম্পন্ন ** কেমন আছেন খালেদা জিয়া? ** তাকওয়া অর্জন, গুনাহ মাফ ও কুরআন নাজিলের মাস রমাদান ** লকডাউনকে কেন্দ্র করে ক্র্যাকডাউনে নেমেছে সরকার : মির্জা ফখরুল ** মিয়ানমারে স্বাধীনতাকামী ও অভ্যুত্থানবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সমঝোতা ** রাজনীতি নির্বাচন সবই নির্বাসনে ** মাহে রমজান ও তাকওয়া ** সৎ কর্মশীলদের কাজ আল্লাহ বিনষ্ট করেন না ** মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করুন **

রেজি: ডিএ ৫১৭।। ৬০ বর্ষ : ৩য় সংখ্যা ॥ ঢাকা শুক্রবার ৩ বৈশাখ ১৪২৮ ॥ ৩ রমজান ১৪৪২ : Friday 16 April 2021

॥ সৈয়দ খালিদ হোসেন॥ 
দুর্নীতির কারণে বার বার সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। জাতীয় সংসদেও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন একজন সংসদ সদস্য। করোনা মহামারিতে আলোচনায় আসা রিজেন্টের প্রতারণার নেপথ্যেও উঠে এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্পৃক্ততা। করোনায় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য পেয়েছে খোদ সরকারি তদন্ত কমিটি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগে অনিয়মের একটি চিত্র স্বাস্থ্য সচিবকে জানিয়েছে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের একটি অংশ, অপরদিকে এই নিয়োগ কমিটিতে থাকা দুইজন সদস্যও সচিবকে লিখিতভাবে অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের খ-চিত্র তুলে ধরেছেন। তবে যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ, তাদের স্ব-পদ থেকে সরিয়ে দিলেও প্রয়োজনীয় দ- হয়নি। তাছাড়া স্বাস্থ্যের হিসাবরক্ষক আফজাল ও ড্রাইভার আবদুল মালেকের সম্পদের পাহাড় দেখে যে কেউ আঁচ করতে পারেন এ খাতে ঠিক কী পরিমাণে দুর্নীতি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে টিআইবি বলছে, দুর্নীতিতে বাংলাদেশ দুই ধাপ এগিয়েছে তার প্রধান কারণ স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি।  
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগে দুর্নীতি : স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও মেডিকেল টেকনিশিয়ান নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। এর সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কয়েকজন কর্মচারী এবং কর্মকর্তাও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সরকারের শীর্ষমহলে লিখিতভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেশ করা হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ৮৮৯টি পদ এবং মেডিকেল টেকনিশিয়ানের বিভিন্ন গ্রুপের ১৮০০ পদের বিপরীতে মোট ৭২ হাজার ৬১৫ চাকরিপ্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ১২, ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর তিন দিনে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ১৩টি স্কুলে পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্র ম্যানিপুলেট করে পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতিবাজ চক্রটি বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে প্রতিটি নিয়োগের জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় পাসের কথা বলে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। দালাল চক্রটি লিখিত পরীক্ষার আগে এমন কথা বাইরে প্রচার করেছে যে, যারা টাকা দিয়ে গোপন তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করবে, শুধু তারাই চাকরি পাবে। ফলে চাকরিপ্রার্থীরা অনেকেই বাধ্য হয়েছেন এদের হাতে ধরা দিতে।
নিয়োগ বাণিজ্যের তথ্য জানিয়ে সচিবকে চিঠি : স্বাস্থ্যে ১৮০০ টেকনিশিয়ান নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ আগেই করেছিল এই নিয়োগ নিতে অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের ঘুষ-বাণিজ্য হয়েছে মর্মে খোদ নিয়োগ কমিটিরই দুজন সদস্য ঊর্ধ্বতন মহলে লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে তাঁরা দাবি করেছেন, এই নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রার্থীদের একটি অংশের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগ এসেছিল অংশীজনের পক্ষ থেকে। লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের সন্দেহ হয় মৌখিক পরীক্ষা নিতে গিয়ে। নিয়োগ কমিটির সদস্যরা বলছেন, লিখিত পরীক্ষায় যেসব প্রার্থী ৮০ নম্বরের মধ্যে ৬০ থেকে ৭৯ পেয়েছেন, তাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। বরং ভালো করেন লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা। মৌখিক পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিতে নিয়োগ বোর্ডের এক সদস্যকে ঘুষ ও পদোন্নতির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন আরেক মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে দেওয়া চিঠিতে নিয়োগ কমিটির এক সদস্য অভিযোগ করেন, তাঁকে নগদ এক কোটি টাকা এবং পরে আরও টাকা ও পদোন্নতি দেওয়ার লোভ দেখানো হয়। লিখিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই নিয়োগসংক্রান্ত কমিটির দুজন সদস্যকে সরিয়ে দিয়েছে। অধিদপ্তর বলছে, পুরো পরীক্ষা বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে ১০ পাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা সব পদের বিপরীতে মৌখিক পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি। এজন্য ৮০০ জনের মতো প্রার্থীকে নিয়োগের চিন্তা করা হচ্ছে।
অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কমিটি থেকে যে দুজন সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাঁদের একজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আ ফ ম আখতার হোসেন। তাঁর জায়গায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দেওয়া হয় ডা. মো. আবুল হাশেম শেখকে। তিনি এর আগে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তাঁকে এই নিয়োগসংক্রান্ত কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে প্রকাশ, ‘অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) পদে নতুন নিয়োগ পাওয়া ডা. আবুল হাশেম গত ৮ মার্চ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে একটি চিঠি দিয়ে তাঁকে ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। ওই সময় স্বাস্থ্য সচিবের দায়িত্বে ছিলেন আবদুল মান্নান। চিঠিতে ডা. হাশেম লিখেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (পরিকল্পনা অধিশাখা) শ্রীনিবাস দেবনাথ গত ১ মার্চ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। তখনই তিনি ঘুষের প্রস্তাব দেন। ডা. হাশেম আরও লেখেন, ‘তিনি (শ্রীনিবাস) বললেন, শুক্রবারে আপনাকে এক কোটি টাকা দেব, কোথায় দেখা করব? আমি জিজ্ঞেস করলাম, কী জন্য আমাকে এত টাকা দেবেন? তিনি জানালেন, আমরা যে তালিকা দেব, তাঁদের ভাইভা বোর্ডে পাস করিয়ে দিতে হবে। তাঁরা লিখিত পরীক্ষায় ভালো করেছেন।’ সেদিনের সাক্ষাৎকালে উপসচিব শ্রীনিবাস ডা. হাশেমকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) পদে পদোন্নতির লোভ দেখান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টেকনোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার অনিয়মের বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ও নিয়োগ কমিটির সদস্য শারমিন আক্তার জাহান স্বাস্থ্যসেবা সচিবকে চিঠি দেন গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। তিনি উল্লেখ করেন, কঠিন প্রশ্নেও উত্তীর্ণদের বেশিরভাগ অনেক ভালো নম্বর পান। কিছু খাতা খুলে দেখা যায়, মুক্তার মতো হরফে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লেখা, যেখানে কলম ধরার কোনো সুযোগ নেই। এত নম্বর পাওয়া খুবই অপ্রাসঙ্গিক ছিল। চিঠিতে শারমিন আক্তার আরও উল্লেখ করেন, মৌখিক পরীক্ষা শুরু হলে দেখা যায়, যাঁরা অনেক নম্বর পেয়েছেন, তাঁরা মৌখিক পরীক্ষার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না। যাঁরা ৪০ থেকে ৫৯ পর্যন্ত নম্বর পেয়েছেন, তাঁরা অনেক ভালো মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছেন, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ভালো নম্বর পাওয়া একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা দাবি করেন, অনেকেই লিখিত পরীক্ষার আগে ইন্টারনেটে একটি লিংকে উত্তর পান। সে অনুযায়ী মুখস্থ করে পরীক্ষা দেন। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে নিয়োগে এমন দুর্নীতি অহরহ হয়। তবে প্রকাশিত হয় না। এবার যেসব সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।’
৩৪৩ কোটি টাকার কেনাকাটায় কোনো নিয়ম মানা হয়নি : করোনা ভাইরাসের শুরুতে দেশবাসীকে রক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৯৬টি প্যাকেজে এক হাজার ২২৫ কোটি টাকার স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনে। এর মধ্যে ৫৭টি প্যাকেজে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। এতে অর্থের পরিমাণ ৩৪৩ কোটি টাকারও বেশি। এসব পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রয়কারী কার্যালয়প্রধানের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। আনুষ্ঠানিক দরকষাকষি, দরপত্র/প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির অনুমোদন কোনো কিছুই নেওয়া হয়নি। উপরন্তু অনুমোদিত বাজেটের অতিরিক্ত ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫০ কোটি টাকার বেশি মালপত্র কিনলে তা অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। বিপুল অঙ্কের এসব পণ্য কেনায় একক মূল্য বা মোট মূল্য কোনোটিই উল্লেখ করা হয়নি। সুরক্ষাসামগ্রীর কোনো কোনোটির সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যায়নি। ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতি হলেও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরস ডিপোকে (সিএমএসডি) বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করছে। এত কিছুর পরও সরবরাহকারীদের ‘আস্থা অটুট রাখতে’ এখন ৩৪৩ কোটি টাকা পরিশোধ করার আয়োজন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ চিঠি দিয়েছে। সরকার গঠিত কমিটির তদন্তেও বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্যের সত্যতা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপিএম পদ্ধতিতে এক হাজার ২৮৫ কোটি ২২ লাখ ৪১ হাজার টাকার ১৯৬টি প্যাকেজ কেনা হয়। এর মধ্যে ৩৪৩ কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকার ৫৭টি প্যাকেজেই ঘটেছে অনিয়ম। গত বছরের জুন মাসে ৫৭টি প্যাকেজে কেনা মালপত্রের বিল দাখিল করার পরই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তড়িঘড়ি করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদত হোসেনকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি সরকারি ক্রয়ে প্রচলিত বিধিবিধান, পিপিএ ২০০৬, পিপিআর ২০০৮-এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্যাকেজগুলো কেনা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে। এতে বেরিয়ে আসে গুরুতর সব অনিয়ম। সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি জেনেছে, প্যাকেজ কেনার ক্ষেত্রে পিপিআর ২০০৮ অনুসরণে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলোও অনুসরণ করা হয়নি। à¦¯à§‡à¦®à¦¨Ñ à¦•à§à¦°à§Ÿà¦•à¦¾à¦°à§€ কার্যালয়প্রধানের অনুমোদন নেওয়া, আনুষ্ঠানিক দরকষাকষি করা, দরপত্র/প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির সভা করা হয়নি। এসব প্যাকেজ কেনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড জারি করা হয়নি। কার্য সম্পাদন জামানত গ্রহণ করা হয়নি। কোনো সরবরাহ চুক্তি করা হয়নি। ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন চুক্তি স্বাক্ষর ছাড়া সরবরাহ আদেশও বিধিসম্মত হয়নি। সরবরাহের নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি। পণ্যের তালিকা থাকলে নির্ধারিত কোনো একক মূল্য ও মোট মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। কোনো শর্ত যুক্ত করা হয়নি। কার্যাদেশের বিপরীতে অনেক ক্ষেত্রে সার্ভে ছাড়াই মালপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্যাকেজ কেনার জন্য তখন কোনো বাজেট বরাদ্দও নিশ্চিত করা হয়নি। পাশাপাশি চাহিদাপত্রে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ বা সোর্স অব ফান্ড ছিল না। প্যাকেজ কেনার আগেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। চাহিদাপত্রে কোনো উৎসর উল্লেখ নেই।
রিজেন্ট কা- : রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালে। অথচ এর ছয় বছর পরে এসে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গেই চুক্তি করেছিলো অনুমোদনহীন এই হাসপাতাল! শুধু তাই নয়, অন্তত ছয় হাজার মানুষের নমুনা নিয়ে করোনা টেস্ট না করেই ভুয়া পজিটিভ-নেগেটিভ রিপোর্ট দিয়ে তিন কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল। যার মূল হোতা খোদ এই হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদ। ওই সময় হাসপাতালটিতে অভিযান চলার সময় র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিন ধরনের অভিযোগ ও অপরাধের প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। প্রথমত, তারা করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করত।  দ্বিতীয়ত, হাসপাতালটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার। সরকার এই ব্যয় বহন করবে। কিন্তু তারা রোগীপ্রতি এক লাখ/দুই লাখ, আড়াই লাখ টাকা বিল আদায় করেছে (এ সময় সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকর্মীদের বিলের নথি দেখান)। পাশাপাশি রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছে এই মর্মে সরকারের কাছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বেশি বিল জমা দেয়।
স্বাস্থ্যের ড্রাইভারই কোটি কোটি টাকার মালিক : স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোটিপতি গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদল গত বছরই এ খাতের বহুল আলোচিত চরিত্র হয়ে ওঠেন। পেশায় একজন গাড়িচালক হয়েও তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ঢাকায় অন্তত ১০টা প্লট-ফ্ল্যাটের মালিক এই ব্যক্তি। আবদুল মালেককে গ্রেফতারের পর তার অগাধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একজন গাড়িচালকের দুর্নীতির মাধ্যমে গড়া বিশাল সম্পদের ফিরিস্তি দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা রীতিমতো হতবাক হয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালেকের ঢাকায় অন্তত চারটি ফ্ল্যাট, ১০টি প্লট, কামারপাড়ায় এক বিঘা জমি, বামনেরটেক এলাকায় ১০ কাঠা জায়গার ওপর সাততলা বাড়ি (বাড়ি নং-৪২, হাজী কমপ্লেক্স), স্ত্রীর নামে একটি সাততলা বাড়ি, হাতিরপুল এলাকায় নির্মাণাধীন ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। এছাড়া গবাদিপশুর বৃহৎ খামার, মাছের ঘের ও পরিবহন ব্যবসা পরিচালনা করেন তিনি। হাতিরপুল ইস্টার্ন প্লাজা মার্কেটের পেছনে নির্মাণাধীন মালেকের ১০ তলা বাণিজ্যিক কাম আবাসিক ভবন। এটি দেখাশোনা করেন তার ছোট ভাই আবদুল খালেক। খালেক অধিদফতরের পার শাখার পিয়ন হিসেবে কর্মরত। মালেকের বহু সম্পদ খালেকের স্ত্রীর নামে রয়েছে। এখন পর্যন্ত চারটি বেসরকারি ব্যাংকে মালেকের নামে-বেনামে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব টাকা তার স্ত্রী, ভাই খালেক ও এক ভাতিজাসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়ের নামে রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকরা প্রশ্ন à¦¤à§‹à¦²à§‡à¦¨Ñ à¦à¦•à¦œà¦¨ ড্রাইভারের যখন এতো সম্পদ, তখন এ সেক্টরের বড় কর্তাদের সম্পদের অবস্থা কী হতে পারে?
দুর্নীতি দুই ধাপ বেড়েছে, মূল কারণ স্বাস্থ্য খাত : বিশ্বের ১৮০টি দেশের ‘দুর্নীতি চিত্র’ গত এক বছর বিশ্লেষণ করে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। এতে দেখা যায়, দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশে দুর্নীতি গতবারের চেয়ে দুই ধাপ বেড়েছে। গতবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪তম। অর্থাৎ বাংলাদেশ ক্রমান্বয়েই বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। গত ২৮ জানুয়ারি বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) সারা বিশ্বে একযোগে ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২০’ প্রকাশ করেছে। এর অংশ হিসেবে দেশে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। কী কারণে বাংলাদেশে দুর্নীতি দুই ধাপ বেড়েছে এর কারণও তুলে ধরা হয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে। এবার সূচকে বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনমনের পেছনে করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক দুর্নীতিকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। টিআইবি পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর করোনা মোকাবিলায় নানা দুর্নীতি, উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত রুই-কাতলদের বিচারের আওতায় আনার ঘাটতি, রাষ্ট্রীয় খাতে কেনাকাটায় রাজনৈতিক প্রভাব ও অনিয়ম, গণমাধ্যমের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার বিষয়গুলোও দায়ী।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।