রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ১ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৮ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ১১ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ২২ মাচ ২০২৪

প্রতিদিন ৮০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট
॥ সাইদুর রহমান রুমী ॥
তীব্র যানজটে ও জনজটে রাজধানীজুড়ে মানুষের নাভিশ্বাস বর্তমানে চরমে পৌঁছেছে। কী ব্যস্ততম সড়ক কিংবা এলাকার অলিগলি- সব জায়গায়ই ট্রাফিক অব্যবস্থাপনায় যানজটে এক লেজেগোবরে অবস্থা। কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী কিংবা সাধারণ নাগরিক সবার কর্মঘণ্টা সড়কেই যেন নিঃশেষ হচ্ছে। আধুনিক যুগেও হাতের ইশারাভিত্তিক ম্যানুয়াল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ভয়াবহ জ্যামে পড়ে ১৫-২০ মিনিটের রাস্তা পার হতে চলে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ যেন নগরবাসীর এক নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা এমনিতেই বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির বসবাসের অযোগ্য এক শহর। পবিত্র রমযানেও বায়ুদূষণ এবং যানজটে আজ নগরবাসী দুর্ভোগের শিকার।
সাহরি সেরে একটু বিশ্রাম, অতপর সকালে কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হওয়া মানুষ, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা অর্জনের জন্য কিংবা রাজধানীর কর্মজীবীরা তাদের গন্তব্যে বের হয়েই ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ছেন। সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যেন এক মহাযুদ্ধের সমান। ক্ষেত্রবিশেষে ১৫-২০ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে এক-দুই ঘণ্টাও লেগে যাচ্ছে। এভাবে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা গরমে ঘর্মাক্ত, ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে বহু মানুষ হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোকসহ নানাবিধ হাইপারটেনশন সংশ্লিষ্ট রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে রমযানে এ যানজটে ইফতারির জন্য সময়মতো বাড়ি ফেরা যেন এক প্রকার অসম্ভব।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীতে বিশেষ করে বর্তমানে পবিত্র রমযানে সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় এবং বিকেলে অফিস শেষে ঘরে ফেরার সময় এ ভোগান্তি আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে স্বাভাবিক ভাবেই। কারণ স্কুল-কলেজ-মাদরাসা সব খোলা। ছোট দিনে ৮ ঘণ্টায় করতে হচ্ছে ১৬ ঘণ্টার কাজ। মেট্রোরেল কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসের তেমন কোনো সুফলই পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। নগরীর বেশিরভাগ রাস্তায় যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহন। নগর ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা সবসময় বলে আসছেন, বছরজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকে, যা নগরীর যানজটের বড় কারণ। তারা বলছেন, রাস্তার এক মাথা খোঁড়া শেষ না হতেই শুরু হয় অন্যপাশে খোঁড়াখুঁড়ি। সিটি করপোরেশন বা ওয়াসা শেষ করল তো রাজউক শুরু করল। এভাবে যুগের পর যুগ সমন্বয়হীন উন্নয়নকাজের কারণেই মূলত নগরীর যানজট কমছে না। কয়েকবার বিজ্ঞপ্তি চালাচালির পর শেষ পর্যন্ত একজন অভিভাবক দ্বারস্থ হয়েছিলেন উচ্চ  আদালতের। উচ্চ আদালত মোটামুটি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার বিষয়ে একটি হ্যাঁ সূচক আদেশ দিলেও চেম্বার জজ তা স্থগিত করে দেন। রমযান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে কিনা তা নির্ধারণের জন্য বসে আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ ১০ রমযান পর্যন্ত এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহ ১৪ রমযান পর্যন্ত খোলা রেখে পাঠদান অব্যাহত রাখতে বলা হয়। ফলে যেসব বিদ্যালয় রমযান উপলক্ষে ছুটি ঘোষণা দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ করে পবিত্র রমযানে কোমলমতি শিশু ও উঠতি রোজাগার কিশোর-কিশোরীদের পাঠদানের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে এনেছে। রোজার দিনে এমনিতেই মানুষ থাকে তাড়ার ওপর। তার ওপর দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় তার প্রচণ্ড চাপ পড়েছে রাজধানীসহ সারা দেশে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, অসহনীয় যানজটের কারণে প্রতিদিন রাজধানীতে গড়ে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ৭৩টি মোড়ে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। এতে করে প্রতিদিন আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। আর জ্বালানি পুড়ছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার। বিশ্বের যেসব শহরে পূর্বে যানজট ছিল, কিন্তু এখন নিয়ন্ত্রিত যানজট, সেসব শহরের সড়ক ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের আমাদের দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে যানজট নিরসনে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে বলছেন সবাই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তা বাস্তবতার আলোকে বাস্তবায়ন করা হলে যানজট কমে আসবে হয়তো। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে ঢাকার সড়কে প্রতিদিন ৮০ লাখের বেশি কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে, যা ২০১৭ সালে ছিল দিনে ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা। বিশ্বের সবচেয়ে যানজটপূর্ণ শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এ যানজট সৃষ্টি হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মাঝে নগরীতে রিকশার সংখ্যা বেশি হওয়া একটি প্রধান কারণ। এ রিকশার কারণে সড়কে অন্য দ্রুতগতির যানবাহনগুলো ধীর হয়ে পড়ে, পাশাপাশি এ রিকশাচালকদের নেই কোনো লাইসেন্স অথবা সড়কের আইন সম্পর্কে কোনো ধারণা, ফলে তাদের অদক্ষতার কারণে সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে যুক্ত হয়েছে অবৈধ শত শত অটোরিকশা, এগুলোও ব্যাঙের ছাতার মতো প্রতিদিনই বাড়ছে এবং এলাকাকেন্দ্রিক যানজট তৈরি করছে। একটি আধুনিক নগরীতে মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ রাস্তা বা সড়ক থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ঢাকায় আছে মাত্র সাত থেকে আট ভাগ। এর মধ্যেও অর্ধেক থাকে পার্কিং ও অবৈধ হকাদের ব্যবসার দখলে। এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকায় ১৫ ভাগ যাত্রী দখল করে আছেন মোট সড়কের ৭০ ভাগ। বর্তমানে ঢাকায় কমবেশি ১৫ ভাগ যাত্রী প্রাইভেট গাড়িতে যাতায়াত করেন। এসব প্রাইভেট কারের দখলে থাকে ৭০ ভাগেরও বেশি রাস্তা। বাকি ৮৫ ভাগ যাত্রী অন্য কোনো ধরনের গণপরিবহন ব্যবহার করেন। অর্থাৎ তারা গণপরিবহন সড়কের মাত্র ৩০ ভাগ এলাকা ব্যবহারের সুযোগ পায়। এর পাশাপাশি অবৈধ পার্কিং এবং নানা ধরনের দখলদারদের হাতে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়ক। এছাড়া ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় প্রধান সড়কেই পায়ে হেঁটে চলেন নগরবাসী। ফলে যানজটের সঙ্গে তৈরি হয় জনজট। রাজধানীর গণপরিবহনের ৮০ শতাংশই যন্ত্রচালিত এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন। অথচ বিগত ১০ বছরে ঢাকার যান চলাচলের গতিবেগ ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে, যা ২০২৭ সালের মধ্যে ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নানা প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুতগতিসম্পন্ন কম সময়ক্ষেপণের নানা যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা তৈরি হচ্ছে, সেখানে দেশে কর্মঘণ্টা অপচয়ের মাধ্যমে মানুষের সময় এবং অর্থ দুটিই নষ্ট হচ্ছে।
রমযানের শুরুতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ইফতারের আগে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কথা বলা হলেও বাস্তবে রাস্তায় সে চিত্র চোখে পড়েনি। ট্রাফিক সদস্যদের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অনেক হিমশিম খেতে হয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ি ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সড়কের যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো, ফুটপাত ও মূল রাস্তা দখল করে হকারদের অবৈধ বাণিজ্যসহ চিরাচরিত বিষয়গুলো দেদার চলছে। ম্যানুয়াল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পুরো নগরবাসী যেন হাঁপিয়ে উঠেছেন। আর নগরীর অলিগলিতে দাবড়িয়ে বেড়ানো ব্যাটারিচালিত বাহনের আধিক্যে যানজট পাচ্ছে নতুন রূপ।
বেসরকারি চাকরিজীবী ফারজানা ইসলাম বলেন, সকালে অফিস পৌঁছাতেও তীব্র যানজট ভোগান্তি পার হয়ে আসতে হয়। আর অফিস শেষে যাওয়ার পথেও তীব্র ভোগান্তি। তিনি বলেন, সামান্য ১৫-২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় চলে যাচ্ছে কয়েক ঘণ্টা। এভাবে কোনো কাজই শিডিউল মাফিক করা যায় না। সময় এবং অর্থের অপচয় হয়।
পল্টন থেকে কাজ শেষে মহাখালীর বাসায় ফেরা হামিদ খান বলেন, সারা দিনই প্রতিটি পয়েন্টে যেন যানজট লেগেই আছে। কীভাবে বাইরে আমরা কাজকর্ম করব। নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কবলে পড়া ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই মগবাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান ও ধানমন্ডিসহ আশপাশের প্রতিটি সড়কে থাকে তীব্র যানজট। বাড্ডা, গুলশান, মহাখালী, তেজগাঁও লিংক রোডসহ আশপাশের সড়কেও যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। সরেজমিন বেশকিছু সড়কে দেখা গেছে, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ অনেক এলাকার বেশিরভাগ রাস্তার বড় একটি অংশ সরকারি-বেসরকারি অফিসের স্টাফ বাস দিয়ে অর্ধেক রাস্তা বন্ধ। কমলাপুর, মুগদা বিশ্বরোড এলাকাজুড়ে লম্বা অংশজুড়ে বড় বড় পিকআপ, ট্রেইলার খালি ট্রাকের পার্কিং অংশের দখলে। আবার কারওয়ান বাজার, সোনারগাঁও মোড় থেকে এফডিসি পর্যন্ত সড়কের বেশিরভাগ অংশও থাকে স্টাফ বাসের দখলে। এ সড়কটিতেও রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করানোর কারণে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়। গুলিস্তান, পল্টন বায়তুল মোকাররম এলাকার পুরো ফুটপাত হকারদের দখলে। ট্রাফিকের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জয়নুল আবেদীন এ প্রসঙ্গে বলেন, অফিস ছুটির পর একসঙ্গে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ পড়ায় কিছু কিছু সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ইফতারের আগে সড়ক স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক সদস্যরা সর্বতোভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান জানান, রমযান মাসে একদিকে অফিসের সময় কমে যায়; অন্যদিকে পুরো ১২ ঘণ্টার চাপ ৮ ঘণ্টায় পড়ায় যানজট বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁড়াখুঁড়িও যানজটের অন্যতম কারণ। তবে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক পুলিশ সর্বোচ্চভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ছাড়া গোড়ায় গলদ রেখে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া যানজট নিরসন অনেকটা অসম্ভব। এজন্য প্রয়োজন স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার ত্রুটি যানজটের অন্যতম একটি কারণ হতে পারে। এ রাস্তার অনেক জায়গা আবার বিভিন্ন অবৈধ দখলদারের হাতে। রাস্তায় ফুটপাত, ময়লার ভ্যান, যত্রতত্র গাড়ি রেখে রাস্তাকে সংকীর্ণ থেকে আরও সংকীর্ণতর করে ফেলা হচ্ছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করার ফলে রাস্তার স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া চালকদের অদূরদর্শিতা, শহরমুখী মানুষের স্রোত, অপ্রশস্ত রাস্তা প্রভৃতি বিষয়ও যানজটের অন্যতম কারণ। নগরবিদরা বলছেন, শুধু কিছু মেট্রোরেল কিংবা এক্সপ্রেস সড়ক করেই যানজট নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভবপর নয়। দরকার সঠিক পরিকল্পনা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর প্রভাবে ঢাকার কয়েকটি সড়কে যানজট কিছুটা কমেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়ালসড়ক) ফলে বিমানবন্দরে যাতায়াত সহজ হয়েছে। তবে ঢাকার সামগ্রিক যানজট কমেনি। তিনি বলেন, মেট্রোরেলের সফলতা নির্ভর করবে বহু মাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর। ব্যক্তিগত গাড়িকে প্রাধান্য না দিয়ে বাস, রেল ও গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। পথচারীকে প্রাধান্য দিয়ে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। সাধারণত মেট্রোরেলের প্রধান ব্যবহারকারী হন মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা। এ শ্রেণির লোকদের মেট্রো স্টেশনের আশপাশে বসবাস নিশ্চিত করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। কিন্তু আজও বাংলাদেশে গণপরিবহনের উন্নতিতে সরকারের উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। বিআরটিএ’র পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে ঢাকায় বাস আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৮৮৭টি, আর ওই একই বছর প্রাইভেট কার এসেছে ৯ হাজার ৬৮৭টি অর্থাৎ প্রায় পাঁচগুণ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও যানবাহন বিক্রেতারা বলছেন, দেশে ২০২২ সালে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ১৫১টি গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছিল। ২০২৩ সালে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৬১টি। আবার ২০২২ সালে ৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধিত হয়েছিল। পরিবহন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থাৎ সমন্বিত নগরপরিবহনের কোনো সরকারি পরিকল্পনা এতে দেখা যায় না। বিদ্যমান যানজট প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা দরকার। যারা গাড়ি ব্যবহার করছেন, যারা গাড়িতে চড়ছেন এবং যারা রাস্তার আশপাশে ব্যবসা করছেন; তাদের সহযোগিতা দরকার। তা না হলে সেখানে সোয়া ২ কোটি লোক বসবাস করে, সেখানে পুলিশ রাতারাতি ট্রাফিক সমস্যা সমাধান করে দিতে পারবে না। এদিকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যত উন্নত হবে, যানজট তত বাড়বে। তিনি বলেন, সবাই মিলে সমন্বয় করে কাজ করতে না পারলে শুধু আলোচনাই হবে, কাজের কাজ হবে না। যানজট নিরসনে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই সুফল পাওয়া যাবে।



অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।