রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ১ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৮ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ১১ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ২২ মাচ ২০২৪

২৩ নাবিক-ক্রুসহ পণবন্দি এমভি আব্দুল্লাহ

উদ্ধার বিলম্ব হওয়ায় শঙ্কিত তাদের পরিবার

সোনার বাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে দুবাইয়ের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে জাহাজটি অ-নিরাপদ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়ে। মুক্তিপণ আদায়ের দাবিতে এমভি আব্দুল্লাহকে পণবন্দি করা হয়েছে বলে ওই জাহাজে অবস্থানরত নাবিক ও ক্রুরা তাদের পরিবার ও মালিকপক্ষকে জানিয়েছেন। ভারত মহাসাগরের জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং ও সরকার নিজেদের মতো করে এটি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে গত ১২ মার্চ পণবন্দি হওয়া জাহাজ ও তার নাবিক-ক্রুদের ২০ মার্চ বুধবার  এ রিপোর্ট লেখার সময় আট দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি কোনো পক্ষই। এ কারণে জাহাজে অবস্থান করা নাবিক ও ক্রুদের পরিবার শঙ্কায় রয়েছে। তারা নিরাপদে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদ্ধার তৎপরতা চায়।
জানা গেছে, পণবন্দি হওয়ার সময় জাহাজটিতে ২৩ নাবিক ও ক্রু ছিলেন। জলদস্যুরা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর প্রথমে জাহাজটির অবস্থান ছিল ভারত মহাসাগরে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের কাছাকাছি। এরপর এটি সোমালিয়ার একটি ঘাটে নোঙরও করেছিল, তবে তারা কোথায়ও স্থির থাকছে না, ক্ষণে ক্ষণে অবস্থান পরিবর্তন করছে তারা।
সরকার, জাহাজের মালিক এবং জলদস্যু এ তিনটি পক্ষ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। মালিকপক্ষ বলছে, তারা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থার সঙ্গে জড়িত এবং তারা তাদের মতো করে কাজ করবে। বাংলাদেশ নেভি একটি বড় স্টেকহোল্ডার এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। তাদের যে সক্ষমতা রয়েছে, সেটি হয়তো ব্যবহার করবে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, খবরটি জানার পর থেকেই জাহাজের নাবিক ও ক্রুদের সাথে যোগাযোগ করেছি। আমরা আমাদের কূটনৈতিক চ্যানেল ও নৌবাহিনীর মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।
এদিকে আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম বিবিসি তার বাংলা ভার্সনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলছে, সোমালিয়ার জলদস্যুদের অপহরণের শিকার এমভি আব্দুল্লাহর পণবন্দি নাবিকদের পরিবারগুলো জানিয়েছে, দস্যুরা এখন যেন অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জাহাজটি দখলে নেয়ার পর এ কয়দিন নাবিকদের পরিবারের সাথে যোগাযোগসহ ও অন্যান্য কিছু সুবিধা দিলেও গত (১৭ মার্চ থেকে) দুই দিনে তারা সেটিও বন্ধ করে দিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জলদস্যুদের কবল থেকে জাহাজটি উদ্ধারে অভিযান পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও নাবিকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে তাতে সায় দেয়নি বাংলাদেশ। এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এমভি আব্দুল্লাহ এবং পণবন্দি নাবিকদের জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত করতে সোমালি পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে পান্টল্যান্ড অঞ্চলের পুলিশ। এছাড়া এমভি আব্দুল্লাহ ছিনতাইয়ের সাথে অভিযুক্ত দুই জলদস্যুকে গত ১৭ মার্চ আটকের কথা জানিয়েছে পান্টল্যান্ড পুলিশ।
নাবিকরা তাদের পরিবারকে জানিয়েছেন, জলদস্যুরা জাহাজে থাকা খাবার শুধু খাচ্ছেই না, সেগুলো নষ্টও করছে। এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানান নাবিকরা। জিম্মি থাকা ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের সাথে তার বড় ভাই ওমর ফারুকের সর্বশেষ কথা হয় ১৭ মার্চ। ওমর ফারুক ১৯ মার্চ জানান, তখন সে জানিয়েছিল জলদস্যুরা প্রতিদিন প্রায় একশ’ জনের খাবার নষ্ট করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বড় সংকটে পড়তে হবে তাদের।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভারতীয় কমান্ডোরা জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি রুয়েনে অভিযান চালিয়ে ১৭ ক্রুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার পর এমভি আব্দুল্লাহতেও অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এ ধরনের অভিযানের প্রস্তাবে বাংলাদেশের সরকার রাজি হয়নি। জাহাজটির মালিক কোম্পানি কেএসআরএম গ্রুপও এ ধরনের অভিযানে রাজি নয়। প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, যে অভিযানে নাবিক ও ক্রুদের জীবন বিপন্ন হয় এমন কোনো অপারেশন আমরা চাই না। জাহাজের চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের মা শাহানুর বেগম জানিয়েছিলেন, ভারতীয় নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার দেখার পর থেকে ওরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে আমরা জেনেছি। অভিযান চললে আমরা আর আমাদের সন্তানদের জীবিত ফেরত পাবো না। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।
পরিবারের সাথে যোগাযোগ না থাকলেও জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণের থাকা জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান মনিটর করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পাশাপাশি বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিএমএমওএ) জাহাজটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। দস্যু বাহিনী জাহাজটিকে নিয়ে কয়েক দফায় ভারত মহাসাগরে স্থান পরিবর্তন করে। জাহাজটির এ গতিপথ ও অবস্থান দেখে বিএমএমওএ বলছে, জাহাজটি জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর প্রথমেই তারা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটিকে দেড় দিনের মাথায় সোমালিয়া উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে যায়। জলদস্যুদের কবলে পড়ার পরদিন ১৩ মার্চ এটি ছিল সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু উপকূলের কাছাকাছি অবস্থানে। পরবর্তীতে সেটিকে আরো উত্তর দিকে সরিয়ে প্রথমে নেয়া হয় গারদাকে। এরপরই ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজটি ঘিরে নজরদারি বাড়ালে সেটি আবারো সরিয়ে নেয়া হয় গদবজিরান উপকূলে। সর্বশেষ ১৯ মার্চের তথ্যানুয়ায়ী গত তিন দিন ধরে জাহাজটি একই জায়গায় নোঙর করে আছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারা জানাচ্ছে, জাহাজটি গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে।




অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।