তিউনিসিয়ায় নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা, বিােভ অব্যাহত

তিউনিস, আরটিএনএন : তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী  হামাদি জেবালি আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকার গঠনে যদি তিনি ব্যর্থ হন তাহলে তিনি মতা ছেড়ে  দেবেন।

বিরোধী নেতা চোকরি বেলায়েদ আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর বিরোধীদের প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু হলে গত বুধবার তিনি সর্বপ্রথম এ প্রস্তাব দেন। তবে তার নিজ দল ইসলামপন্থী এন্নাহদা পার্টি একটি  নির্দলীয় কেবিনেট গঠনে তার এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

ইতোমধ্যে নিহত বিরোধী নেতা বেলায়েদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর এন্নাহদার সমর্থকরা রাজধানী তিউনিসে প্রধানমন্ত্রীর  নতুন সরকার গঠন পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়ে সমাবেশ করে। অন্যদিকে বিরোধীরা বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে সাংবিধানিক সভা ভেঙ্গে দেয়ার দাবি জানিয়েছে।  নিহত বিরোধীদল নেতা বেলায়েদের পপুলার ফ্রন্টও এ দাবি করেছে।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেবালি বলেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তিনি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন যে, মন্ত্রীরা সবাই তাদের কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে। এমনকি অভ্যন্তরীণ, বিচার ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রীও পূর্ণ স্বাধীনতা পাবেন। তিনি বলেন, যদি তার এ প্রস্তাব গ্রহণ না করা হলে মতা ছেড়ে দেবেন এবং প্রেসিডেন্টকে নতুন সরকার গঠনে অন্য প্রার্থী খুঁজতে বলবেন।

তবে এন্নাহদা বলছে, ‘প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে তার নিজ দলের সঙ্গে কোনো পরামর্শই করেননি’। তবে বর্তমান সংবিধান সভাটিকেই বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে তারা। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে কট্টরপন্থী সালাফিরাও। তারা স্লোগান তুলেছে, ‘আমরা মুসলিম এবং আমাদের কেউ হটাতে পারবেনা’।

এদিকে একদিকে ইসলামী দলগুলো এবং অন্যদিকে উদারপন্থী সেক্যুলার দলগুলো রাষ্ট্র গঠনে তাদের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে অটল অবস্থান নিয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তিউনিসিয়ায় সত্যিকার অর্থেই আরেকটি ক্রান্তিকাল হাজির হয়েছে। প্রতিদিনই সরকারবিরোধী এবং সরকারের সমর্থনে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।

২০১১ সালে আরব বসন্তে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বেলায়েদের হত্যাকাণ্ডটিই ছিল প্রথম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। এরপর সমগ্র তিউনিসিয়া জুড়ে আন্দোলন শুরু করে সেক্যুলাররা। গত বুধবারের সমাবেশে একজন পুলিশ অফিসার নিহত হয় এবং আহত হয় আরও ৫৯ জন।

এ ঘটনায় ৩৭৫ জনকে আটক করে পুলিশ বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত শনিবার সমাবেশ উপলে লাখ লাখ লোক রাস্তায় নেমে আসে।  বেলায়েদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের একদিন পর ওই সমাবেশ হয়। আইনজীবী এবং সেক্যুলার রাজনৈতিক নেতা বেলায়েদ তার কর্মস্থলে যাওয়ার সময় এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন।