‘নাস্তিকদের আস্ফালন মার অযোগ্য’

স্টাফ রিপোর্টার : হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ লেখার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ইসলাম ও হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করা বা জঘন্য কুরুচিপূর্ণ লেখা প্রকাশ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের জনগণের কাছে ঔদ্ধত্যের শামিল। একশ্রেণীর নাস্তিক ইসলাম, মুসলমান ও আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে যা বরদাশত করা হবে না। নাস্তিক মুরতাদদের আস্ফালন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মেনে নেবে না। বিবৃতিতে নাস্তিক মুরতাদদের অপতৎপরতা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে অন্যথায় সরকারকে এর দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অন্যায়ভাবে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বা লুটপাটের মতো ঘৃণ্য কাজ করেছে তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে। কোনো খুনী বা ধর্ষক কখনো প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না এবং ইসলাম সেসব অন্যায়কে সমর্থন করে না। কিন্তু একশ্রেণীর স্বঘোষিত নাস্তিক মুরতাদরা যেভাবে ইসলাম, মুসলমান, আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কোনো অজুহাতেই নাস্তিক-মুরতাদদের আস্ফালন এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মেনে নিবে না।

বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই এ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, আজ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সম্প্রতি খুন হওয়া ব্লগার রাজীবের (থাবা বাবা) লেখা আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও ইসলামের বিভিন্ন ইবাদত নিয়ে যে জঘন্য ও কুরুচিপূর্ণ ব্লগসমূহ প্রকাশিত হয়েছে কোনো মুসলমান এসব সহ্য করতে পারে না। তিনি সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে নাস্তিক ব্লগার রাজীবসহ অন্যান্য নাস্তিক মুরতাদদের সাম্প্রতিক অপতৎপরতা সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। পীর সাহেব চরমোনাই নাস্তিকতার আস্ফালন বন্ধে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ, ইমাম-মুয়াজ্জিন, মাদরাসার ওলামাসহ সকল দ্বীনদার মুসলমানকে নাস্তিক-মুরতাদ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার আহবান জানান। সেই সাথে নাস্তিকদের প থেকে উচ্চারিত ইসলামী দল নিষিদ্ধের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, বিশ্বের সকল দেশেই ধর্মভিত্তিক দল আছে, এমনকি পার্শ্ববর্তী ভারতেও ইসলামী দল আছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এদেশে ধর্মভিত্তিক দল আছে এবং থাকবে, প্রয়োজনে নাস্তিকদের আস্ফালন বন্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মুসলমানদের এদেশে কোনো নাস্তিক মুরতাদের ঠাঁই হবে না।

পীর সাহেব চরমোনাই অবিলম্বে নাস্তিক মুরতাদদের অপতৎপরতা বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় ঈমানদাররা মাঠে নামলে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

ইসলাম ও মহানবী (সা.)-কে অবমাননা করে ব্লগে লেখা প্রকাশের প্রতিবাদে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ বসুন্ধরায় ওলামা ও মুফতিগণের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত কওমী মাদরাসা শিাবোর্ডের চেয়ারম্যান ফক্বিহুল মিল্লাত মুফতী আব্দুর রহমান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুফতি মুহাম্মদ সুহাইল, মুফতি রফিকুল ইসলাম আলমাদানী ও মুফতি আবদুস সালাম প্রমুখ।

সভাপতির ভাষণে ফক্বিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান বলেন, দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত ‘ইসলাম ও নবী (সা.)-কে অবমাননা করে ব্লগে রাজিবের কুরুচিপূর্ণ লেখা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন আমাদের নজরে পড়েছে। এতে ইসলাম ও মহানবী (সা.)-কে অবমাননা করে যেসকল কুরুচিপূর্ণ জঘন্য লেখার কথা বলা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমাদের নেই। কারণ, মুসলমান তো দূরের কথা কোনো হিন্দু, খ্রিষ্টান, ইহুদি বা অন্যধর্মাবলম্বীও ইসলাম ও নবী করীম (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকার এরূপ লেখা লিখতে পারে না। এ জঘন্য কাজ আজ উম্মাহের হৃদয়কে ত-বিত করেছে। আমরা এর জোর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। এ ধরনের জঘন্য কুরুচিপূর্ণ কোনো কাজ এদেশের মুসলমান কখনও বরদাশত করবে না। এরূপ জঘন্যতম কাজ যাতে ভবিষ্যতে সংগঠিত হতে না পারে সেজন্য কঠিন আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের দাবি জানান সভায় উপস্থিত সকল মুফতি ও ওলামায়ে কেরাম।