সংবাদ শিরোনামঃ

সরকারের থামা উচিত ** শাহবাগ চক্রান্তের মুখোশ উন্মোচিত হত্যার জন্য আইন সংশোধন ** দেশব্যাপী হরতাল পালিত ** জনগণের দাবি : ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ** শাহবাগ চত্বরে ভাটা ** মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে ** শাহবাগ নাটক : শেষ না হতেই শেষ! ** জামায়াতের ডাকে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালিত ** যশোরে ১০ মাসে ১০৭ জন খুন ** ইসলাম ও নবী (সা.) কে অবমাননা করে ব্লগে রাজীবের কুরুচিপূর্ণ লেখা : বিভিন্ন সাইটে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ** সারাদেশে পুলিশ-র্যারের নির্বিচার গুলি : কক্সবাজারে ৪ জন নিহত ** ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ ফাল্গুন ১৪১৯, ১১ রবিউস সানি ১৪৩৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

মাওলানা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে আলেমদের মিছিল সমাবেশ

সারাদেশে পুলিশ-র্যারের নির্বিচার গুলি : কক্সবাজারে ৪ জন নিহত

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাশেমিয়া মাদরাসা ময়দানে কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ তোফায়েলের জানাযায় জনতার ঢল

সোনার বাংলা রিপোর্ট : বিশ্বখ্যাত মোফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ করার প্রতিবাদ ও তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং দেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের চক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে গত ১৪ ফেব্র“য়ারি রাজধানীর পল্টন মোড়ে এক গণজমায়েত আয়োজন করেছিল মুফাসসিরিন, উলামা, পীর মাশায়েখ ও জনতার মঞ্চ। সারাদেশে বিভাগীয় শহরগুলোতেও একই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ঢাকাসহ সারাদেশে আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখদের এ  গণজমায়েতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নির্যাতন চালায় পুলিশ। রাজধানীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল অন্য যে কোনো দিনের তুলনায় কঠোর ও মারমুখী। মতিঝিল, পল্টন, দৈনিক বাংলা, বায়তুল মোকাররম, যাত্রাবাড়ী ও কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় সাঁজোয়া যান নিয়ে টহল দেয় তারা। সকালে ওলামা, মাশায়েখ ও জনতাসহ পল্টন এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ এসব জায়গায় বেপরোয়া গুলি, হামলা ও গ্রেফতার শুরু করে। এসব সংঘর্ষে ২০ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এছাড়া রাজধানীতে সাড়ে তিনশ’সহ সারাদেশে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। ডিএমপির প থেকে ৩শ’ পিকেটারকে আটকের কথা স্বীকার করেছে। নির্যাতনের প্রতিবাদে পরদিন শুক্রবার চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেটসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। কক্সবাজারে গুলিতে চারজন নিহত, অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধসহ প্রায় আড়াইসহ মসুল্লী আহত হয়েছেন।

রণপ্রস্তুতি নেয়া পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায় মাওলানা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত পল্টনের পূর্বনির্ধারিত গণজমায়েত। তবে পুলিশি বাধা ও হামলার মধ্যেও মতিঝিল, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী ও শ্যামলী এলাকায় ঝটিকা মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একই কর্মসূচি পালনের সময় ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রংপুর, খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যদর্শীরা জানান, শাহবাগে সরকারদলের সমর্থকদের জমায়েতকে ‘সর্বস্তরের জনগণের সমাবেশ’ ঘোষণা করলেও আলেম ওলামা ও পীর মাশায়েখদের এ  গণজমায়েতকে জামায়াত-শিবিরের জমায়েত আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করে পণ্ড করে দিয়েছে।

কক্সবাজার: কক্সবাজারে ওলামা মাশায়েখ, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মিছিলে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে ৪ জন নিহত ও ৩০ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ১১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ এ সময় অন্তত ৩০০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। পুলিশের বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া কক্সবাজারে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছিল স্থানীয় জামায়াত। পুলিশি হত্যার প্রতিবাদে গত শনিবার তাৎণিকভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত ও শিবির বিােভ করেছে। কক্সবাজার শহরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জুমার নামাজের পর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মুক্তি পরিষদের আয়োজনে বিােভ মিছিল বের করা হয়।

এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে শহরের প্রধান সড়কের হাশেমিয়া মাদরাসা ও খুরুস্কুল রাস্তার মাথা এলাকা রণেেত্র পরিণত হয়। জুমার নামাজের পর থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত টানা এই সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে একজন দোকানদারসহ অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী।

নিহতরা হলেন কক্সবাজার শহরের গোদারপাড়া এলাকার কলিম উল্লাহর ছেলে তোফায়েল আহমদ (২৫), চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার হামিদ আলীর ছেলে সালেহ আহমদ (৪০), কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ধর্মছড়া এলাকার মোহাম্মদ আলমের ছেলে নুরুল হক ওরফে মিয়া (৩৫) ও সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মোস্তাক আহমদের ছেলে আবদুল্লাহ (২২)। তবে নিহতদের মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো নেতাকর্মী নেই।

নিহতদের মধ্যে সালেহ আহমদ হাশেমিয়া মাদরাসা এলাকার একটি দোকানের ম্যানেজার ও নুরুল হক ওরফে মিয়া ইসলামপুর বাজারের মুদি দোকানদার। তিনি দোকানের বাজার করার জন্য কক্সবাজার এসেছিলেন।

এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে, কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতারসহ অন্তত ৩০ পুলিশও আহত হয়েছেন। পুলিশ দুপুরের আগ পর্যন্ত ১১৭ জন জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতাকর্মীকে আটক করেছে। প্রত্যদর্শীদের মতে, পুলিশ ৩ শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। ঘটনার পর বিকালে কক্সবাজার শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন বিজিবি সদস্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অপরদিকে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মুক্তি পরিষদ ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা হরতাল পালন করেছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন ৪টা থেকে শহরের সংঘর্ষ সংশ্লিষ্ট এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছিলেন।

প্রত্যদর্শীরা জানান, জুমার নামাজের পর হাশেমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মুক্তি পরিষদ বিােভ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে শত শত পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে পূর্বনির্ধারিত বিােভ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে।

প্রত্যর্শীরা জানান, পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করলে মিছিলে অংশ গ্রহণকারী জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ মুহুর্মুহু রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ শুরু করে। দফায় দফায় এই সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান ৩ জন। আরেকজন হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান।

ওই সংঘর্ষ দ্রুত হাশেমিয়া মাদরাসা এলাকা থেকে শহরের প্রধান সড়কের খুরুস্কুল রাস্তার মাথা হয়ে টেকপাড়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। জুমার নামাজের পর থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সংঘর্ষ স্থায়ী হয়। জনতা হাশেমিয়া মাদরাসা ও খুরুস্কুল রাস্তার মাথা এলাকায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে রেখেছে।

তবে প্রত্যদর্শীরা দাবি করেছেন, বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে র‌্যাবের একটি দল প্রধান সড়কের পূর্ব দিক দিয়ে এসে পেছন দিক থেকে ব্যারিকেড সৃষ্টিকারী জনতার ওপর হামলা চালায়। ওই সময় র‌্যাব গুলিবর্ষণও করে।

ঘটনার পর থেকে একে একে লাশ ও আহতদের কক্সবাজার শহরের ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে আনা হয়। জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি জি এম রহিম উল্লাহ জানান, পুলিশের গুলিতে তাদের ৪ জন কর্মী শাহাদত বরণ করেছেন। পুলিশের একতরফা গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়। তিনি দাবি করেন, পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের চেষ্টার শুরুতে গুলিবর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইশ’ জনের নাম উল্লেখ করে ৬ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

চট্টগ্রাম: মাওলানা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত পূর্বনির্ধারিত গণজমায়েত আয়োজনে পুলিশ বাধা দিলে আলেম-ওলামা ও পীর মাশায়েখরা নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিােভ মিছিল করেছে। 

রংপুর: রংপুরের মিঠাপুকুরে আলেম, ওলামা ও পীর মাশায়েখদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ প্রায় ২৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিপে করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৩ কর্মীকে আটক করেছে। এসময় প্রায় ১০-১২ জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হেলাল উদ্দিন, শাহ জালাল ও হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে।

খুলনা: খুলনায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে আলেম ওলামা পীর মাশায়েখদের আয়োজিত গণমিছিলে হামলা করেছে পুলিশ। মিছিল থেকে চার জনকে আটক করেছে। ১ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে। 

খুলনার কয়রা থানা পুলিশ সোমবার গভীর রাতে ৩৫ জনের নামোল্লেখ করে এবং অন্যদের অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে মোট ১ হাজার জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এ পর্যন্ত এ মামলায় ৫০ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যশোরে বিােভ মিছিল : যশোর অফিস জানায়, বিভিন্ন দাবিতে যশোরে বিােভ মিছিল করেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে শহরের হোমিওপ্যাথিক কলেজের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি রবীন্দ্রনাথ সড়ক কাঁচাবাজার এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ কারাগারে আটক দলের শীর্ষ নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে মিছিল থেকে স্লোগান দেয়া হয়।

দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় ৩৫ জন আটক : ঢাকা যাওয়ার পথে গত শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় বাসে বাসে তল্লাশী চালিয়ে পুলিশ জামায়াত-শিবির সন্দেহে ৩৫ জনকে আটক করেছে।

চাটখিলে জামায়াতের বিােভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা : চাটখিল (নোয়াখালী) উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে চাটখিল আলীয়া মাদরাসা মাঠে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা মনিরুজ্জামান, পৌরসভা জামায়াতের আমীর নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া, পৌরসভা জামায়াতের সেক্রেটারি ডা. হারুন উর রশিদ, কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মহিউদ্দিন হাসান, শিবির সভাপতি আজগর আলী ও মমিনুল ইসলাম পাটোয়ারী প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিােভ মিছিল বের করে মিছিলটি চাটখিল আলীয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণ থেকে আরম্ভ হয়ে চাটখিল পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদণি শেষে দণি বাজারের জামায়াত কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

রাজশাহী : রাজশাহীতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের ওপর পুলিশের দফায় দফায় বেপরোয়া গুলিবর্ষণে গত শুক্রবার রাজশাহী নগরী রণেেত্র পরিণত হয়। পুলিশ অন্তত শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। এতে পথচারীসহ ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে। পুলিশ এ সময় ২২ জনকে আটক করেছে।

প্রত্যদর্শীরা জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জুমার নামাজের পর মহানগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় ওলামা মাশায়েখ পরিষদের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশ হামলা-লাঠিচার্জ করে। এতে উভয়পে সংঘর্ষ হয়। অন্যদিকে সন্ধ্যায় তালাইমারী এলাকায় ছাত্রশিবিরের মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে ব্যাপক সংঘর্ষে ওই এলাকা রণেেত্র পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড শর্টগানের গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিপে করে।

বড়লেখা : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দণিভাগ বাজারে ১৫ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা ওলামা মাশায়েখ ও সাধারণ জনতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তির  দাবিতে বিােভ মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৪ পুলিশসহ ৬ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ ক’রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এ ঘটনায় জামায়াত কর্মী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। আহত পুলিশ সদস্যরা বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

বরিশাল : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে বরিশাল নগরীতে বিােভ মিছিল করেছে ওলামা-মাশায়েখ ও আল্লামা সাঈদী মুক্তি পরিষদ। এতে ব্যাপক জনসমাগম ল্য করা গেছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জুমার পর নগরীর বিভিন্ন মসজিদ থেকে সাধারণ মুসল্লিরা একযোগে মিছিল বের করে। মিছিলে স্থানীয় পর্যায়ের ওলামা-মাশায়েখ ও সাধারণ মুসল্লিরা নেতৃত্ব দেন।

নগরীর কাশিপুর বাজার মসজিদ থেকে বাদ জুমা অনুষ্ঠিত মিছিলে নেতৃত্ব দেন মাওলানা মনিরুজ্জামান, শাহজাহান সিরাজী ও জাহাঙ্গীর তালুকদার প্রমুখ। মিছিলটি কাশিপুর বাজার থেকে শুরু করে স্থানীয় মিয়াজীবাড়ীর মসজিদে গিয়ে শেষ হয়।

এদিকে নগরীর নবগ্রাম রোডের তালুকদারবাড়ী জামে মসজিদ থেকে একটি মিছিল সাধারণ মুসল্লিরা বের করে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন মাওলানা শামসুল ইসলাম। সদর উপজেলার চরমোনাইতে একটি মিছিল করে সাঈদী মুক্তি মঞ্চ। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের নেতা মাওলানা ছফিউল্লাহ তালুকদার। লাহারহাট বন্দরে অনুষ্ঠিত মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা ইসমাইল হোসেন সিরাজী। এছাড়াও নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা আল্লামা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে মিছিল বের করে।

পাবনা: পাবনায় ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ আলেম-ওলামাদের অন্যায়ভাবে আটকে রেখে নির্যাতন বন্ধ এবং সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে পাবনায় এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা ঐতিহাসিক চাঁপা মসজিদ মোড়ে সমাবেশে বক্তৃতা করেন সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল লতিফ, প্রখ্যাত আলেম অধ্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা শামসুল ইসলাম, মাওলানা আবুল কাশেম ও মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমুখ।

গাজীপুরে বিােভ : মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবি ও ইসলাম নির্মূলের প্রতিবাদে গত সোমবার বিকালে গাজীপুরে বিােভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের গাজীপুর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহসিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বিােভ মিছিলটি জেলা শহরের হাড়িনাল বাজার থেকে শুরু হয়ে জোড়পুকুর এলাকায় শেষ হয়।

উল্লাপাড়া:  পুলিশ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ওলামা মাশায়েখদের মিছিল থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছেন হাফেজ জয়নাল আবেদীন, রবিউল ইসলাম, আনিছুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ। গত সোমবার আসর নামাজের পর উল্লাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিােভ মিছিল বের করে।

আয়োজক সংগঠনের প্রতিবাদ : মুুফাসসিরিন, ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও জনতার মঞ্চের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলা, টিয়ারসেল-রাবার বুলেট নিপে, গুলিবর্ষণ ও গণহারে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ মুফাসসিরিন, ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখ নেতারা। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ওলামা-মাশায়েখদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা বর্বর হামলা চালিয়েছে। এসময় রাজধানীতে ২০ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এছাড়া আটক করা হয়েছে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৫০ জন।

জামায়াতের প্রতিবাদ : মুফাসসিরিন, ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও জনতার মঞ্চ কর্তৃক আহূত গত শুক্রবার ঐতিহাসিক পল্টন মোড়ের গণজমায়েত করতে না দিয়ে তাদের ওপর পুলিশের ব্যাপক হামলা ও গুলিবর্ষণ এবং মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর পূর্ব ঘোষিত বিােভ মিছিলে ব্যাপক হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের মুফাসসিরিন, ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও জনতার মঞ্চের প থেকে বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী অভিহিত করে বিচারের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করার প্রতিবাদে, ন্যায় বিচার ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং দেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের চক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে শুক্রবার ঐতিহাসিক পল্টন মোড়ে গণজমায়েতের ঘোষণা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু সকাল থেকেই হাজার হাজার পুলিশ পল্টন এলাকা ঘিরে রাখে। পুলিশ মুফাসসিরিন, ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখ ও জনতাকে সমাবেশ করতে না দিয়ে বেআইনিভাবে তাদের ওপর হামলা চালাতে থাকে। পুলিশ শত শত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। তাতে শতাধিক লোক আহত হয়েছে। পুলিশ পল্টন, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা মোড় রণেেত্র পরিণত করেছে। গ্রেফতার করেছে প্রায় ৪ শতাধিক লোককে।

সরকারের অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় মতার অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে আওয়ামী মহাজোট সরকার ও মহাজোটের শরীকরা পরিকল্পিতভাবে শাহবাগে সমাবেশ করে ইসলামী আদর্শ, ইসলামী দল ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগারপূর্ণ উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।

শিবিরের প্রতিবাদ : অপরদিকে আলেম সমাজকে গণজমায়েত করতে না দেয়া, জামায়াত-শিবিরের শান্তিপূর্ণ বিােভ মিছিলে বাধা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের বর্বর হামলা, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, নির্যাতন, দেশব্যাপী গণগ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির নেতারা।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।