সংবাদ শিরোনামঃ

সার্বভৌমত্ব এখন ঝুঁকির মুখে ** ত্রিমুখী লড়াই জমে ওঠেছে ** বাংলাদেশ ভারতের পানি আগ্রাসনের শিকার : মির্জা ফখরুল ** সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ ** জনবিচ্ছিন্ন সরকারের উদ্বিগ্নতা বাড়ছে ** মাওলানা নিজামী ও সাঈদীকে বিচারের নামে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন : নূরুল ইসলাম বুলবুল ** রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা ** বিজেপি নেতার খায়েশ : কান টানলে কিন্তু মাথাও আসবে! ** ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফির ছোবলে যুব সমাজ ** ২২৬ এমপি কোটিপতি কর দেন না ৪২ জন ** সরকার জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করতেই বিচারের নামে শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে ** ঝিড়ি-ঝর্ণা, নদী-ছড়ার দূষিত পানি ব্যবহার করছে অধিবাসীরা **

ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪২১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৩৫, ২৫ এপ্রিল ২০১৪

স্টাফ রিপোর্টার  : বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা তাদের গঠনতন্ত্র মানে না। দলের ভেতরেই জেঁকে বসে আছে একনায়কত্ব। ফলে যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসছে না।

তবে অন্য দলগুলো থেকে এদিক থেকে ব্যতিক্রম জামায়াতে ইসলামী। তারা গঠনতন্ত্র থেকে শুরু করে আর্থিক বিষয়াদি ঠিকমত পরিচালনা করে আসছে। গত ১৯ এপ্রিল শনিবার বিকেলে নিজস্ব অডিটোরিয়ামে এশিয়াটিক সোসাইটির ত্রৈমাসিক সাধারণ সভায় এমন মত দেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সিপিডির ফেলো ড. রওনক জাহান। সভায় ড. রওনক জাহান ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল : গণতন্ত্রায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা উপস্থাপন করেন। ২০১১-১২ সালে শুরু করা এই গবেষণায় ড. রওনক জাহান প্রধান চারটি রাজনৈতিক দলের চরিত্রের বিশ্লেষণ দেখিয়েছেন। তাঁর মতে, বর্তমান যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো আদর্শ খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের মধ্যে কিছুটা আদর্শিক চর্চা থাকলেও বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির কোনো আদর্শ নেই। দুটি দলই একই প্রক্রিয়ায় জন্ম নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

রওনক জাহান বলেন, প্রধান দলগুলোর কেউই তাদের গঠনতন্ত্র মেনে রাজনীতি করে না। প্রত্যেক তিন বছর পর কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্ব তৈরির কথা বলা হলেও একমাত্র জামায়াতে ইসলামী ছাড়া কেউ সেটি করছে না।

তিনি গবেষণায় দেখান, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র ৫টি কাউন্সিল করেছে। সর্বশেষ ১৬ বছরে কাউন্সিল হয়েছে মাত্র দুটি। কিন্তু নতুন কোনো নেতৃত্ব আসেনি। আওয়ামী লীগ তাদের কাউন্সিল মোটামুটি নিয়মিত করার চেষ্টা করলেও গণতান্ত্রিক উপায়ে কোনো নেতৃত্ব আসছে না। সভা শেষে দলীয় সভানেত্রীর কাছে একটা তালিকা দেয়া হয়, সেখান থেকে তিনি তার পছন্দ অনুযায়ী কতিপয় লোককে নেতৃত্বে বসান।

এেেত্র জামায়াতকে আদর্শিক দল দেখিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, দলটির আদর্শ অন্যদের থেকে আলাদা। জামায়াত তাদের সাংগঠনিক কাজ খুবই সুষ্ঠুভাবে করে থাকে। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের কর্মী সংগ্রহকে দলটি খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা দল পরিচালনায় নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থায়ন (চাঁদা) দেয় এবং সেগুলো রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে হিসাবও রাখা হয়। জামায়াত তাদের সকল পর্যায়ে ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতির চর্চা করে থাকে। কিন্তু অন্য কোনো দলের মধ্যে কর্মী সংগ্রহ বা দলীয় অর্থায়নের চাঁদার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব দেখা যায় না।

গবেষণায় আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পরে প্রধান দুটি দল জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের মধ্যকার তুলনামূলক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে। সেখানে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মাদ এরশাদের জাতীয় পার্টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বলা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির রংপুর অঞ্চলে কিছুটা আঞ্চলিক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যেটি জামায়াতেরও বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এর সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক দর্শন ধর্মীয় হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মীয় জনপ্রিয়তার েেত্র জামায়াত জাতীয় পার্টির চেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে।

গবেষণায় চারটি বড় রাজনৈতিক দল নিয়ে আলাদা আলোচনা করা হলেও জাতীয় পার্টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উল্লেখ করা হয়েছে। ড. রওনক জাহান বলেন, ‘বর্তমানে অনেকগুলো ছোট দল আরও ছোট হতে হতে একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টি একেবারে বিলীন হওয়ার পথে এবং এটি বেশ উদ্বেগজনক।’

আর তিনি এেেত্র সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন টেনে এনেছেন। বলেছেন, ‘নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বিলীন হওয়ার বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে, তারা সত্যিকার অর্থেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এভাবে আরও কিছু দিন চলতে থাকলে আগামীতে দলটি যে কোনো দুটি গ্রুপের অধীনে রাজনৈতিকভাবে বন্দী হয়ে যাবে।’

রওনক জাহান মনে করেন, রাজনীতিতে খুব তাড়াতাড়ি আরেকটি মেরুকরণ হবে এবং এটি হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

রাজনীতি ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যাচ্ছে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশে নিয়ম আছে ব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে আসলে সব কিছু পরিত্যাগ করে আসতে হবে। যতদিন জনপ্রতিনিধি থাকবেন, ততদিন এমপি-মন্ত্রীর মতা বলে নিজস্ব ব্যবসায়ে কোনো ফায়দা নিতে পারবে না।’

সিপিডির এই ফেলো বলেন, ‘আমাদের দেশেও এ আইনের প্রয়োগ করতে হবে। যদিও নির্বাচন কমিশনের হলফনামা প্রকাশের পর রাজনীতিকরা এটাকে চরিত্র হননের মাধ্যম বলে আখ্যা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এখন রাজনীতিতে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ফলে মেধাবীরা আসতে চাইছে না। বর্তমানে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু তারপরও সাংঘর্ষিক রাজনীতির চর্চা হচ্ছে। সাংঘর্ষিক রাজনীতি ও নির্বাচনী রাজনীতি একাকার হয়ে যাচ্ছে।’ রওনক জাহান বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা চিন্তা করছেন নির্বাচনের আগে শক্তি দেখাতে না পারলে মনোনয়ন পাবেন না, নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। এজন্য তারা ওই পথেই হাঁটছেন।’ সভায় ড. রওনক জাহান নিজের সম্পর্কেও কথা বলেন। আগতদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি আছি, বিশেষ করে কামাল হোসেন বা আমার মতো কারও পে এখন আর রাজনীতি করা সম্ভব না। কারণ রাজনীতি করতে গেলে জেল খাটতে হয়। আগে জেলে বিশেষ লোকদের জন্য প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া হতো। কিন্তু এখন রাজনীতিকদের সবার জন্য প্রথম শ্রেণী তো দেয়া হয়-ই না বরং আরও অনেক সমস্যা তৈরি করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে রওনক জাহান বলেন, ‘রাজনীতি যারা করেন, তারা মূলত মতার জন্যই করছেন। তবে দেখতে হবে সেই মতা কোথায় ব্যবহৃত হচ্ছে, এটা জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে, নাকি কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকদের কাছে এখন মানুষের চাহিদাও পাল্টে গেছে। ’৭০ র দশকে জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভোট দিয়েছে, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন নয়, জাতীর মুক্তির জন্য। অবশ্য পরে সেই তিনিই একদলীয় শাসন কায়েমে বাকশালও করেছেন।’

রওনক জাহান বলেন, ‘আর এখন জনগণ ভোট দেয় জাতীয় মুক্তির জন্য নয়। তারা প্রতিনিধি বাছাইয়ের সময় জানতে চান- রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন হবে কি না, বিদ্যুৎ ও ছেলেমেয়ের চাকরি হবে কি না ইত্যাদি। আর রাজনীতিকরা জনগণের এই চাহিদাকে পুঁজি করে সুযোগ নিচ্ছে। তারা সুশাসনের জন্য রাজনীতি করছেন না।’

তিনি বলেন, এখন রাজনৈতিক সহিংসতায় নিজ দলের লোকের হাতে বেশি খুন হচ্ছে। প্রতিপরে সঙ্গে সংঘর্ষে কম লোক মারা যাচ্ছে। ত্রৈমাসিক সাধারণ সভায় ড. আমিরুল ইসলামের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- এশিয়াটিক সোসাইটির সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল আওয়াল মিয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক অধ্যাপক শরিফ উদ্দিন আহমেদ, মকিম হোসেন প্রমুখ।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।