সংবাদ শিরোনামঃ

দেশে খুন গুম নির্যাতন বেড়েই চলছে ** কেমন হবে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক? ** হত্যা গুম নির্যাতন করে অবৈধ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না ** নাজুক পরিস্থিতিতে সরকার ** রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে : নূরুল ইসলাম বুলবুল ** পাবলিক বাসে আহমাদিনেজাদ ** আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি ** আইন-শৃঙ্খলা চরম পর্যায়ে : দায় নেবে কে? ** মিসরে ফ্যাসিবাদের উত্থান ** দু’কোটি টাকার বিনিময়ে হত্যা॥ অস্ত্রের যোগানদাতা আ’লীগ নেতা জাহিদ ** কুষ্টিয়ায় ঘুমহীন গুম আতঙ্ক ** জিয়ার রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্ব **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২১, ৩০ রজব ১৪৩৫, ৩০ মে ২০১৪

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ

পশ্চিমবঙ্গের কোনো মন্ত্রী নেই

ফেরদৌস আহমদ ভূইয়া : ভারতের ১৬তম লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ৪৫ সদস্যের মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছেন। মন্ত্রিসভা ৪৫ সদস্যের হলেও ভারতের বৃহত্তম প্রদেশ পশ্চিম বঙ্গের কোনো মন্ত্রী নেই। শুধু তাই নয় মোদির মন্ত্রিসভায় মুসলমান মন্ত্রীও মাত্র একজন। অবশ্য আগের কংগ্রেসের মন্ত্রিসভায় পাচজন মুসলমান মন্ত্রী ছিলো। বিজেপির নেতৃত্বে এ মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্যদিয়ে টানা ১০ বছর পর ভারতে মনমোহন যুগের অবসান ঘটে শুরু হলো মোদি যুগের। গত ২৬ মে সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা নরেন্দ্র মোদি। দিল্লিতে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনের প্রশস্ত চত্বরে চার হাজারেরও বেশি অতিথির সামনে দেশটির ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিক শপথ নেন মোদি। শপথ নেয়ার সময় হিন্দিতে মোদি বলেন, ‘আমি নরেন্দ্র মোদি ঈশ্বরের নামে শপথ করছি যে, আমি ভারতের অখণ্ডতা রা করবো। ভয়, ঘৃণা, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেব না। সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়-নীতির ভিত্তিতে কাজ করব।’

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর মোদি তার প্রথম বার্তায় সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গৌরবময় এক ভারতের পাণ্ডুলিপি লেখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে ছোট সরকার, কিন্তু সুশাসন নিশ্চিতে বেশি জোর দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।

স্বশরীরে উপস্থিত থেকে শপথ অনুষ্ঠান প্রত্য করেন সদ্য বিদায় নেয়া প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ ভারতের অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্ব। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মনমোহন। ভারতে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সদ্য পরাজিত ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রীসহ বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। অথচ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা এ দৃশ্য দেখিনা।

গত সোমবার মোদির শপথ অনুষ্ঠান ছিল দেশ বিদেশে ব্যাপক আগ্রহের বিষয়। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সব সার্ক দেশ ও মরিশাসের সরকার প্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা। শপথ গ্রহণে যোগ দিতে আসা বিদেশী রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে নতুন প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাকি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।

সূত্র জানায়, এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রায় ৪ হাজার অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেসহ আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান এবং মালদ্বীপের সরকার প্রধানও ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী। প্রতিবেশী দেশগুলোর এতজন নেতা দিল্লিতে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর শপথ-গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে, এই পদপেকে ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে। এত অল্প সময়ের মধ্যেও সার্কের সবগুলো দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীরাই মোদির আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন কিংবা প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। এছাড়াও এসেছেন মরিশাসের ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রধানমন্ত্রী নবীন রামগোলামও। তবে যথারীতি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং গত মঙ্গলবার তিনি ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাকি বৈঠকেও বসেন।

মোদির প্রথম বার্তা : প্রধানমন্ত্রী হবার পর ওয়েবসাইটে তার প্রথম বার্তায় মোদি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ওয়েবসাইটে আপনাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাই। ১৬ মে ২০১৪ তারিখে ভারতবাসী তাদের রায় জানিয়েছেন। উন্নয়ন, সুশাসন ও স্থায়িত্বের সপে তারা গণরায় দিয়েছেন। ভারতের উন্নয়ন পথের যাত্রাকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেয়ার ল্েয নিজেদের উৎসর্গ করার পরম মুহূর্তে আমরা আপনাদের সমর্থন, আশীর্বাদ এবং প্রত্য যোগদান কামনা করি। আমরা সকলে মিলে গৌরবময় ভারতের পাণ্ডুলিপি রচনা করব। আসুন আমরা এক শক্তিশালী, উন্নত এবং সর্বব্যাপী ভারতবর্ষ গড়ি যা সারা পৃথিবীর সঙ্গে একযোগে বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নের ভিত মজবুত করবে। গোটা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে আমি প্রযুক্তি ও গণমাধ্যমের উপর প্রবল আস্থাবাদী। আমি আশা করি মানুষের মতামত শোনা, বিভিন্ন শিা লাভ করা ও ব্যক্তি বিশেষের মত আদান-প্রদানের েেত্র এই মঞ্চ উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করবে।

রাজনাথ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সুষমা পররাষ্ট্র মন্ত্রী

৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা॥ মুসলমান মন্ত্রী নাজমা হেপতুল্লাহ

নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গত সোমবার ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। এদের মধ্যে ২৩ জন কেবিনেট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ১১ জন এবং প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন) ১০ জন। মোদি এক মাসের মধ্যে এই মন্ত্রিসভা আরো সম্প্রসারণ করবেন বলে জানা গেছে। তবে নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় ভারতের ২৫ ভাগ সংখ্যালঘু মুসলমানদের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীসভায় মাত্র একজন মুসলমান মন্ত্রী। তিনি হচ্ছেন নাজমা হেপতুল্লাহ্। উল্লেখ্য তিনি সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বংশধর। সদ্য বিদায়ী কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রীসভায় মুসলমান মন্ত্রী ছিলেন পাঁচ জন।

মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সরকারের ‘নাম্বার টু’ হয়েছেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুষমা স্বরাজকে। উল্লেখযোগ্য অন্যরা হচ্ছেন, অর্থ ও প্রতিরায় অরুন জেটলি, পার্লামেন্টারি অ্যাফেয়ার্সে ভেঙ্কাইয়া নাইডু, পরিবহনে নীতিন গড়কড়ি, রেলে সদানন্দ গৌড়া, পানিসম্পদ ও গঙ্গা পরিচ্ছনতায় উমা ভারতী, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ে নাজমা হেপতুল্লাহ, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মানেকা গান্ধী, টেলিকম ও আইনে রবি প্রসাদ, কৃষিতে রাধা মোহন সিং, মানব সম্পদ উন্নয়নে স্মৃতি ইরানি প্রমুখ। মোদির পরপরাই শপথ নেন রাজনাথ সিং। তারপর সুষমা স্বরাজ। পরে একে একে অন্যরা মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তবে মোদি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৭৫ বছর বয়সের উপরে কাউকে মন্ত্রিসভায় নিবেন না। ফলে বাদ পড়ছেন এল কে আদভানি, মুরলিমোহন যোশীসহ অনেকে।

৬২ বছর বয়সী সুষমা এবারের অর্থাৎ ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে মধ্য প্রদেশের বিদিশা থেকে পদ্মফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেন। সুষমা স্বরাজ যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন, তখন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বেশ কয়েকটি অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানের অপোয় রয়েছে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন গত সরকারের সঙ্গে অনেকটা এগিয়েছিল। তবে বিজেপি এই দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে। মনমোহন সিংয়ের সরকারে প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন পি চিদাম্বরম, পরে পালাক্রমে এই দায়িত্বে ছিলেন এস এম কৃষ্ণা ও সালমান খুরশিদ।

পশ্চিমবঙ্গে কোনো মন্ত্রী নেই

প্রায় আড়াই দশক পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পশ্চিমবঙ্গের কোনো প্রতিনিধিত্ব থাকল না। প্রণব মুখার্জি, বরকত গলিখান চৌধুরী, অজিত গাঁজা, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এবং তারপর মমতা ব্যানার্জি। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পশ্চিমবঙ্গকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তারা। শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন রাজ্য থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত।

১৯৯৯ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ির মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন রাজ্যের দুই বিজেপি সংসদ সদস্য তপন শিকদার ও সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রথম ও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারেও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব ছিল উল্লেখযোগ্য।

খবর খবর বিবিসি, এনডিটিভি ও রয়টার্স।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।