বিরোধী দল নির্মূল করে সরকার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে চায় : নূরুল ইসলাম বুলবুল

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, সরকার ৫ জানুয়ারি তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতেই ষড়যন্ত্র ও অপরাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে। তারা দলন-পীড়ন চালিয়ে বিরোধী দল নির্মূল করে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে চায়। কিন্তু তাদের সে স্বপ্নবিলাস জনগণ কখনো সফল হতে দেবে না বরং সরকারের দলন-পীড়ন, অপরাজনীতি ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

গত ২৩ আগস্ট শনিবার রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী বিমানবন্দর থানা আয়োজিত এক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।  থানা আমীর মাওলানা মুহিব্বুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এডভোকেট ইব্রাহিম খলিলের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ইবনে কারীম আহমদ মিঠু ও মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য এ এইচ এম আতিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা মাকবুল আহমদ, আলফাজ উদ্দীন ভূঁইয়া ও আবুল হাসেম প্রমুখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সরকার জুলুম-নির্যাতন, অপশাসন-দুঃশাসন ও দেশ পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থতার কারণে গণবিচ্ছিন্ন এখন গণবিরোধীতায় লিপ্ত হয়েছে। মূলত তাদের পায়ের তলায় এখন মাটি নেই। সরকার আসন্ন পতন আন্দোলন দমন ও বিরোধী শিবিরে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই সারা দেশে জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় নেতাদের গ্রেফতার করে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ড. মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে ধারাবাহিকভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। রিমান্ড  বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও তা উপেক্ষা করে ড. মাসুদের উপর নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। যা একদিকে যেমন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননা, অপর দিকে সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন। তিনি অবিলম্বে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহার ও রিমান্ড বাতিল করে ড. মাসুদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতেই কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আর সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাসকে রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করা হয়েছে। তারা বিচারের নামে অপরাপর শীর্ষ নেতাদেরও একইভাবে হত্যা করতে চায়। কিন্তু জনগণ সরকারের সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেবে না। তিনি ষড়যন্ত্র ও হত্যার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম, নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ শীর্ষনেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী আন্দোলনের বিজয়ের চাবিকাঠিই হচ্ছে তাকওয়া। শুধুমাত্র তাকওয়াহীন যোগ্যতার মাধ্যমে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই ইসলামী আন্দোলনের সদস্যদের অবশ্যই তাকওয়াবান হতে হবে। আল্লাহর সাথে গভীর ও নিবির সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। কারণ, সকল প্রকার সফলতা ও ব্যর্থতার মালিক একমাত্র আল্লাহ। ইসলামের দাওয়াত মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। এজন্য সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে হবে। সকল প্রকার বৈষয়িক বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আন্দোলনের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। ত্যাগ ও কোরবানীর মানসিকতায় সকলকে ময়দানে কাজ করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।