সংবাদ শিরোনামঃ

বিএনপি জামায়াতকে আগামী নির্বাচনে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র ** ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশাল জনসভায় জনগণের প্রতি বেগম খালেদা জিয়া ** নতুন নির্বাচন দিতে সরকারের উপর বিজেপির চাপ ** আন্দোলনের ঢেউ সামাল দিতে পারবে না সরকার ** মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল ** নিজের স্বার্থে আফগানিস্তানে শান্তি চায় না যুক্তরাষ্ট্র : কারজাই ** গণতন্ত্রকে হাইজ্যাক করছে আওয়ামী লীগ ** প্রতিরোধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে ** প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গ-তামাশা এবং বিশিষ্টজনেরা ** কে বলে আজ তুমি নেই ** ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে গণঅনাস্থা ** মাওলানা সাঈদীর মুক্তির দাবিতে সারাদেশে জামায়াতের স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত **

ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪২১, ৩০ জিলক্বদ ১৪৩৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত॥
পূর্ণিমার পর কি? এ প্রশ্নের এক কথায় উত্তর অমাবস্যা। বাস্তবতা হলো অমাবস্যা কিন্তু পূর্ণিমার পর রাত থেকেই শুরু হয় না। পূর্ণিমার পর আস্তে আস্তে চাঁদের আকার কমে তারপর অমাবস্যার কালো আঁধার পৃথিবীকে গ্রাস করে। আওয়ামী লীগ সরকারের ৫ বছর গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে পূর্ণ হয়েছে। এখন যে চলছে আস্তে আস্তে প্রভাব কমে অমাবস্যার দিকে। বিরোধীদল ২০ দলের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কারণে যারা মনে করেছেন “কোনোদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে নামবে না” তাদের এই দিবাস্বপ্ন ভাঙতে শুরু করেছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর বিশ্ববরেণ্য মোফসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার আপিল বিভাগের রায়ের পর দু’দিনের হরতাল এবং বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে দিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোদনী পাসের প্রতিবাদে ২০ দলের স্বতঃস্ফূর্ত ১ দিনের হরতাল এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনসভার মধ্যদিয়ে সরকার বিরোধী যে আন্দোলনের সূচনা হলো তার ঢেউ সামাল নেয়া সরকারের জন্য সহজ হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। একটি সূত্র জানায়, আন্দোলনে নতুন মাত্রা দিতে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরি করছে ২০দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি’র নেতৃত্বে। গণতন্ত্রহীন একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে সকলমহল সরব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, দেশের সংবিধান এক কেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। মতা এক ব্যক্তির হাতে জিম্মি (পণবন্দী) হয়ে পড়েছে। এই সংবিধান সংশোধন করতে না পারলে আমরা কখনও এক কেন্দ্রীকরণ থেকে বের হয়ে আসতে পারবো না।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, বাংলাদেশের কোনো শিা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নেই। ছাত্র সংসদ থাকলে শিার্থীরা নিজেদেরকে বিকশিত, সঠিক গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের চর্চা এবং দায়িত্বশীল করে গড়ে তুলতে সম হবে। জাতীয় সংসদ সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বর্তমানে অশ্লীলতার চূড়ান্ত জায়গায় পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সমাজ বিপ্লবের ঘটনা। যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তারা বেশিরভাগই কৃষকের সন্তান ছিলেন। তারা গ্রামে গ্রামে পাকিস্তানি সেনাদের মোকাবেলা করেছে। অথচ ওই সব কৃষকদের কেউ বিবেচনায় আনতে পারেনি।

 à¦†à¦¨à§à¦¦à§‹à¦²à¦¨à§‡à¦° ডাক

ইতঃপূর্বে বেগম খালেদা জিয়া প্রতিটি সভা-সমাবেশ সরকারকে দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি, ঈদের পর সব আন্দোলন কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে মাঠে নামতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

 à¦à¦•à¦‡ সাথে আবারো সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিচারপতিদের হাত-পা বেঁধে রাখতে ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়েছে। এটা বাতিল করতে হবে। নইলে এই বাতিলের দাবিতে আমরা একদিন হরতাল দিয়েছি। এটাই শেষ নয়। প্রয়োজনে যেকোনো কর্মসূচি দিতে আমরা প্রস্তুত থাকব। ২০ দলীয় জোট ভাঙার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এই জোট আরো শক্তিশালী হবে। মুনাফেক ও বেঈমানদের সাথে কেউ যাবে না। অবিলম্বে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, না হলে হরতালসহ আরো যেকোনো কর্মসূচি দেয়া হবে। জামায়াত বিএনপির সাথে থাকায় তাদেরকে জঙ্গি ও স্বাধীনতাবিরোধী বানানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরি হচ্ছে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওয়েবসাইট সূত্রে প্রকাশ, সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরি হচ্ছে লন্ডনে। ওই শ্বেতপত্রে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়সহ গত আওয়ামী লীগ সরকারের ও বর্তমান সরকারের টপ শতাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপির দুর্নীতির তথ্য। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ওই দুর্নীতির শ্বেতপত্র তৈরি করাচ্ছেন। জানায়, সরকারের ১০০ জনের বেশি মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এমপির দুর্নীতির তথ্য লন্ডন থেকে সরকারের বিরুদ্ধে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার ঘনিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, তার এই শ্বেতপত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির কথা থাকবে।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা নিশ্চিত করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে তিনি ভাষণ দেয়ার সময় বলেছেন, সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। আর দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হলে তারা রেহাই পাবেন না। সরকারের সমলোচনা করেছেন। তিনি তাদেরকে আগাম পাসপোর্ট বানিয়ে রেখে ও ভিসা টিকিট লাগিয়ে রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন। সেটা করা না হলে পালাবারও সময় পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

সূত্র জানায়, তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন শ্বেতপত্রে এমন কোনো তথ্য যাতে না থাকে যেই সব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। যে সব অভিযোগ সত্য ও ওই সব অভিযোগের স্বপে প্রমাণ ও নথি রয়েছে সেই সব দুর্নীতির তথ্য শ্বেতপত্রে প্রকাশ করা হবে। আর যেগুলোর নথি প্রমাণ এখনো সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি কিন্তু দুর্নীতি হয়েছে ওই সব অভিযোগ রেখে দিয়ে এর স্বপে প্রমাণ যোগাড় করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে পরে হলেও তিনি তা প্রকাশ করবেন। কিন্তু এমন কোনো দুর্নীতির শ্বেতপ্রকাশ করতে চান না যাতে করে কোনো অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হয়। সূত্র জানায়, এই দুর্নীতি প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন স্তরের বিএনপি সমর্থিত কর্মকর্তাদের সহায়তাও পাচ্ছেন তারা। এদিকে সূত্র জানায়, দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করার পাশাপাশি দেশে যে অনিয়ম, অত্যাচার, নির্যাতন, বিভিন্ন নেতা কর্মীদের নামে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা, তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে সেই সব চিত্র তুলে ধরবেন। পাশাপাশি আলোচিত যে সব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাও তুলে ধরবেন। এছাড়াও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, গুমসহ বিভিন্ন তথ্যও তারা বই আকারে প্রকাশ করবেন।

সূত্র জানায়, বিএনপি আগামীতে মতাসীন হতে পারলে দুর্নীতির বিচার করা ছাড়াও যাতে করে বিভিন্ন ঘটনার বিচার করা সম্ভব হয় এই জন্য তারা এখন থেকে সব সংগ্রহে রাখছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, সরকার ওই সব নথিপত্র নষ্ট করে ফেলতে পারে। এছাড়াও হত্যা ও গুমের একটি তালিকাও প্রকাশ করবেন তিনি। সূত্র জানায়, শিগগিরই এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে।

সূত্র জানায়, আলোচিত দুর্নীতির ঘটনার মধ্যে ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীদের দুর্নীতির চিত্র, গত পাঁচ বছর, চলতি সরকারের নয় মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির চিত্র ও হিসাব, শেয়ার বাজারে সিন্ডিকেট করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা, ওই ঘটনার পরিকল্পানাকারী ও সুবিধাবাদীদের দুর্নীতির চিত্র, পদ্মাসেতু প্রকল্পের দুর্নীতি, হলমার্ক কর্তৃক সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনা, ডেসটিনি কর্তৃক দুর্নীতি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ কর্তৃক সরকারি ব্যাংক থেকে লুটপাটের ঘটনা, কুইক রেন্টাল কেন্দ্র স্থাপনে দুর্নীতি, রি পাওয়ারিংয়ের দুর্নীতি, বেসিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনাসহ বিভিন্ন ব্যাংকের দুর্নীতি এর সঙ্গে সরকারের যেসব মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ও সরকারি দলের নেতারা জড়িত তাদের ব্যাপারেও দুর্নীতির তালিকা, এর সঙ্গে জড়িতদের তালিকাও দেয়া হবে শ্বেতপত্রে। এছাড়া এই যাবতকালে বিমানবন্দর ও স্থল বন্দর দিয়ে যে সব টাকা পাচার হয়েছে, যারা কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার করে সম্পদ গড়েছেন ও সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করেছেন তাদের ব্যাপারেও তথ্য তুলে ধরবেন।

সূত্র জানায়, দুর্নীতির বিভিন্ন চিত্র ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হবে। কি কারণে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা বিএনপি জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা কর্মীদের উপর হামলা করেছে, নির্যাতন করেছে, বিএনপির ইলিয়াস আলীসহ বিভিন্ন নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষকে গুম, হত্যা, অপহরণ করেছে, মিথ্যা মামলায় দিয়ে নেতা কর্মীদের আটক রাখে, এই জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়ার কর্মকর্তা ও ওই নির্দেশ বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের তালিকাও করা হয়েছে। ওই সব কর্মকর্তাদের কারা কি সুবিধা পেয়েছেন সেই ব্যাপারেও তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এই সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের সাতখুনের ঘটনাসহ আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর হত্যার নেপথ্যের কাহিনীও প্রকাশ করবে। সেই সঙ্গে সাংবাদিক সাগর রুনীর হত্যাকাণ্ডের পেছনের খবরও রয়েছে, এরসঙ্গে জড়িতদেরও পরিচয় প্রকাশ করবে, বিএনপি মতাসীন হলে তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিবেন। এছাড়াও বিএনপির আন্দোলন চলাকালে বিএনপির নেতা কর্মীদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যে সব হামলা হয়েছে ওই সব ঘটনারও বিচার করবে। প্রতিষ্ঠানে হামলা এমন ঘটনায় তিগ্রস্তদের একটি তালিকা তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এক নেতা।

সূত্র জানায়, বিএনপি, জামায়াত ও জোটের নেতা কর্মীদের হয়রানি করে ও আটকে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কী পরিমাণ টাকা নিয়েছেন তারও তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার সময় তার সম্মান নষ্ট করার জন্য যেসব কর্মকর্তারা কাজ করেছেন, তাকে অপমান করেছেন ওই সব কর্মকর্তার নামেও তারা তথ্য প্রকাশ করবেন, ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিবে মতাসীন হতে পারলে। বিচার বিভাগের দুর্নীতি তুলে ধরবেন। এই জন্যও একটি তালিকা করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও বিচারের রায়ের ব্যাপারেও তারা তথ্য তুলে ধরবেন। এছাড়াও বিডিআরের ঘটনার পেছনের ব্যক্তিদের পরিচয়ও শ্বেতপত্রে তুলে ধরা হবে। ইন্ধনদাতাদের তালিকাও রয়েছে তাদের হাতে। কেন নাসির উদ্দিন পিন্টুকে আসামি করা হয়েছে সেই ঘটনাও তুলে ধরা হবে। এছাড়াও এই ঘটনার পেছনের ঘটনা তুলে ধরে ওই ঘটনায় যারা বিচারের বাইরে রয়ে গেছে তা তুলে ধরে এই ঘটনায় মামলা করে বিচার করার জন্য চেষ্টা করবে। সেই তথ্যও তুলে ধরবে।

শেষ রক্ষা হবে না

রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় সরকার ক্ষমতার অপব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বাধাই মানছে না। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে লাখ লাখ মামলা। সরকার নিজেকে গণতান্ত্রিক কোনো নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে ভাবছে নিজেদেরকে। দ্য ইকোনোমিস্ট এর ভাষায়,“ওয়ান এন্ড অনলি ওয়ান।” অর্থাৎ রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিনি যেভাবে যা করছেন, তাই হচ্ছে। এমন অবস্থা শুধু দেশের জন্য নয় তার জন্যও ক্ষতিকর।

রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, স্বৈরাচারী শাসনের জন্য যিনি দেশের ইতিহাসেকে কলংকিত ব্যক্তি হিসেবে চিরপরিচিত সেই হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে নিয়ে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করার যে অপচেষ্টা আওয়ামী লীগ করছে তা তাদেরকেও কলংকিত করবে। হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ইতিহাসের অনিবার্য দায় ও পরিণতি এড়াতে এই ভ্রষ্ট সামরিক স্বৈরশাসক যখন যার ওপরে সম্ভব ভর করছেন। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির কথিত নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে না গিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ভোল পাল্টে মহাজোটের শরিক হয়েছেন। ২০১৪ সালে একইভাবে তিনি বিএনপি-আওয়ামী লীগ, দু’দলকে ব্যবহার করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ তার খেলাটা বুঝতে পেরে স্ত্রী রওশন এরশাদকে সুবিধে দেবার বিনিময়ে এরশাদকে নজরবন্দী করে ফেলেছিলেন। কিন্তু তাতে কি, এই ‘মানুষ’টি দমে যাননি। মতার খেলায় পারঙ্গম এরশাদ মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হতে আপত্তি করেননি বরং এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, প্রকৃতির অমোঘ নিয়তির মতো তার স্ত্রী রওশন এরশাদই তার ওপর প্রতিশোধটি নিয়েছেন। এরশাদীয় কলাকৌশল রপ্ত করে তাকে ডিঙ্গিয়ে সরকারের আশীর্বাদে বিরোধীদলীয় নেত্রীর আসন অলংকৃত করেছেন। একেই বলে ন্যাচারাল জাস্টিস। অপরাজনীতির এই পাপে এরশাদ এখন দলের মধ্যে তো বটেই, জনগণের কাছেও হাস্যাস্পদ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। তার সর্বশেষ খেলায় দলের অনেকেই তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। এর পরিণামে জাতীয় পার্টি নামক দলটির অস্তিত্ব কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটি এখন দেখার বিষয়।

সরকার সমর্থক একশ্রেণির মিডিয়া জামায়াতের সাথে আওয়ামী লীগের আঁতাতের কথা বলে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে ভুল-বোঝা বুঝি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর জবাবে ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশাল জনসমাবেশে বলেছেন,“ অনেকে বলেছে, জোট ভেঙে যাচ্ছে। আমি বলছি, এই জোট ভাঙবে না। এই জোট শক্তিশালী আছে, শক্তিশালী থাকবে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, যত বেশি অত্যাচার নির্যাতন আর ষড়যন্ত্র হয় রাজনীতির পালাবদল ততো ত্বরান্বিত হয়। কোনো ষড়যন্ত্রই সরকারের অগণতান্ত্রিক সরকারের পতন ঠেকাতে পারে না। তাই আওয়ামী লীগের উচিত আবার গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এসে দ্রুত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।