সংবাদ শিরোনামঃ

দেশ গভীর সঙ্কটে : গণঅভ্যুত্থানের পদধ্বনি ** ইন্দো-মার্কিন আওয়ামী মইন চক্রান্ত ফাঁস ** অকার্যকর হয়ে পড়ছে সার্ক ** মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে যোগ্যতার বিকল্প নেই : শিবির সভাপতি ** খুব ভালো হতো যদি আইন তার নিজস্ব গতিতে চলতো ** সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ ** নিশা দেশাই এবং সৈয়দ আশরাফের ‘দুই আনা-তত্ত্ব’ ** গানের পাখি আব্বাস উদ্দিন ** অবৈধ সরকারকে হটাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই ** ভরা মওসুমে ভারত থেকে চাল আমদানি ** বিক্ষোভে অচল বিশ্ববিদ্যালয় **

ঢাকা, শুক্রবার, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪২১, ১১ সফর ১৪৩৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৪

কুমিল্লার বিশাল সমাবেশে খালেদা জিয়া

অবৈধ সরকারকে হটাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই

কুমিল্লার টাউন হল মাঠে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন, অবৈধ সরকারকে হটাতে কঠোর আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। পুলিশ দিয়ে গুলি চালিয়ে গদি রক্ষা হবে না। অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। সারা দেশের বিভিন্নস্থানে জনসভাগুলোতে মানুষের ঢল নামছে। আমরা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করব। এবার অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে কঠিন আন্দোলন হবে। আমি মাঠে থাকব। ২০ দলের সিনিয়র নেতারা থাকবেন। দেখি পুলিশ কিভাবে গুলি করে? তিনি বলেন, আমরা দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরি করার লক্ষ্যে আন্দোলন করছি। ধর্ম ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন করছি। ফের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হবে, সেই আন্দোলনে এবার সবাই অংশ নেবে। অবৈধ সরকারের পতন খুব শিগগিরই হবে। অতীতে আমি কারো সাথে কোনো আপস করিনি, আগামীতেও আপস করব না।

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির চক্রান্তের প্রতিবাদ, গুম খুন গুপ্তহত্যা বন্ধ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে গত ২৯ নভেম্বর শনিবার বিকেলে কুমিল্লার টাউনহল মাঠে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। তিনি ২০ দলীয় জোট সরকার গঠন করলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের রূপকল্প তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। বিএনপি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় জোট নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান, এলডিপির অলি আহমদ, এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিসের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, শাহিদুর রহমান তামান্না, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামিক পার্টির এডভোকেট আবদুল মোবিন, এনডিপির খন্দকার গোলাম মোর্তজা, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের গরিবে নেওয়াজ, লেবার পার্টির হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জমিয়তে উলামা ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, দক্ষিণ জেলা আমীর আবদুস সাত্তার, উত্তর জেলা আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল, সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান, কুমিল্লা মহানগর সভাপতি শাহ আলম, জাপা নেতা এয়ার আহমেদ সেলিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির  অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, আ ন ম এহছানুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল হক চৌধুরী, জাকারিয়া তাহের সুমন, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সেক্রেটারি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, মহিলা দল সভাপতি নূরী আরা সাফা, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, বিএনপি জেলা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক আমিন-উর রশীদ ইয়াছিন, উত্তরের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা নেতা মোস্তাক মিয়া, সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুল গফুর ভূঁইয়া, ড. খন্দকার মারুফ হোসেন প্রমুখ

এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগ সভাপতি কামরুজ্জামান খান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।

চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর ঢাকার বাইরে এটি খালেদা জিয়ার নবম জনসভা। এর আগে গত ১২ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের জনসভায় বক্তব্য রাখেন জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, দাউদকান্দি, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, চৌদ্দগ্রাম, মেঘনা, তিতাস, দেবীদ্বার, হোমনা, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, মুরাদনগর, à¦¨à¦¾à¦™à§à¦—à¦²à¦•à§‹à¦ŸÑ à¦à¦‡ ১৬টি উপজেলা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জনসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জেলার পাঁচটি স্থানে বড় পর্দার টিভি বসানো হয় যাতে মানুষ খালেদা জিয়ার বক্তব্য সরাসরি দেখতে ও শুনতে পায়। কুমিল্লা ছাড়াও চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলার বহু নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন। তাদের অনেকের হাতে ধানের শীষ প্রতীক, শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় বড় প্রতিকৃতি, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিল। সমাবেশে খণ্ড খণ্ড মিছিলে ব্যান্ডসঙ্গীত দলের উপস্থিতি দেখা যায়। বেলা ১টার মধ্যে টাউনহল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেলেও ঈদগাহ মাঠের মোড়, জেলা স্কুল সড়ক, কান্দিরপাড়, টমসন ব্রিজ সড়ক, পুলিশ লাইন মোড়, ঝাউতলা মুন হসপিটাল মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, নজরুল এভিনিউ, ইনকামট্যাক্স অফিস মোড়সহ দুই কিলোমিটার এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জনসভা উপলক্ষ্যে দুই শতাধিক মাইক লাগানো হয়। শহরজুড়ে নির্মাণ করা হয় কয়েক শ’ স্বাগত তোরণ। এ ছাড়া মঞ্চসহ চার পাশে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তাও চোখে পড়ে। সর্বশেষ ২০০৮ সালে নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন এই টাউন হল মাঠের জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন।

জামায়াত-শিবিরের সরব উপস্থিতি : মাঠের চার পাশে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আবদুস সুবহান, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, এটিএম আজহারুল ইসলাম. মীর কাসেম আলীর মুক্তির দাবি জানিয়ে তাদের ছবিসংবলিত ডিজিটাল ব্যানার টাঙানো হয়। জামায়াত নেতাদের ছবি দিয়ে স্বাগত তোরণও শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়। এদের পাশাপাশি জামায়াতের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও কর্মপরিষদের সদস্য আবদুল হালিমের ছবিসংবলিত ব্যানার ও তোরণ শহরের একাধিক স্থানে দেখা গেছে। উল্লেখ্য, ডা. তাহের ২০০১ সালের নির্বাচনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এ দিকে ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসার পথে দাউদকান্দি, ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় সড়কের পাশে ৩০-৪০টি স্বাগত তোরণ ভাঙচুর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। খালেদা জিয়া ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছবিসংবলিত ডিজিটাল ব্যানারসহ পোস্টারও ছেঁড়া অবস্থায় রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

দেখা গেছে, হোমনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, মুরাদনগরে ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মো. মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ব্রাহ্মণপাড়ায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, চান্দিনায় এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, কুমিল্লায় ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এডভোকেট আবদুল মোবিন, গুম হওয়া সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম হিরু ও বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর পারভেজ, কারাবন্দী জেলা নেতা মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া প্রমুখ নেতার ছবি সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে সরকারের দুর্নীতি-অপশাসন, বিরোধী দল দমন, আগামী আন্দোলন, সরকারের বিদেশী স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা, মিথ্যা মামলা, প্রশাসন, বিচার বিভাগ দলীয়করণের সমালোচনা করেন ও আগামীতে ক্ষমতায় গেলে করণীয় বিষয় তুলে ধরেন বেগম খালেদা জিয়া।

কুমিল্লাবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা এবং তার আমলের উন্নয়নের কথা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমরা ক্ষমতায় থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উন্নয়ন করেছিলাম। কুমিল্লায় বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কিছুই করেনি। কারণ তারা গণতন্ত্র ও উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। এক জাসদ নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের পক্ষের দল নয়। তারা যুদ্ধ না করে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা বিএনপির সাথে আছে ও থাকবেন।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বিএনপি নেত্রী বলেন, আমরা র‌্যাব গঠন করেছিলাম ভালো কাজের লক্ষ্যে। কোনো দলের জন্য নয়। ভালো কাজ করে তারা বিদেশের প্রশংসাও কুড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে মানুষ খুন করছে। ডিবি পুলিশ কন্ট্রাক্টে টাকার বিনিময়ে মানুষ খুন করছে। নারায়ণগঞ্জে ১১ জনকে খুন করেছে। তারা সব সরকারের লোক। র‌্যাব পুলিশ জড়িত। কিন্তু এই খুনের আসল লোক র‌্যাবের অফিসার কর্নেল জিয়া ধরার বাইরে। তাকে না ধরা পর্যন্ত গুম বন্ধ হবে না। তিনি কার কাছ থেকে নির্দেশ পান।

গত বছরের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের আন্দোলনে ৩১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ৬৫ জনকে গুম করা হয়েছে। এসবের তালিকা আমাদের কাছে আছে।

পুলিশের অপরাধের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, পুলিশ র‌্যাব অপরাধে জড়াচ্ছে। তারা কি আইনের ঊর্ধ্বে? তবে পুলিশে কিছু ভালো লোকও আছেন। আমি তাদের বলব আপনার নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এ দেশের মানুষের কথা ভেবে আইন মেনে ভালো কাজ করুন।

খালেদা জিয়া বলেন, বিশেষ একটি জেলার লোকেরা কোনো কিছু তোয়াক্কা করে না। তারা মনে করে একজনের সুবাদে পার পেয়ে যাবে। মানুষ হত্যা ও খুনের দায়ে র‌্যাব পুলিশকে অস্ত্র না দেয়া এবং বিদেশে প্রশিক্ষণ না দিতে বিদেশীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের এ অবস্থা হয়েছিল। যেখানে সেখানে রাস্তার পাশে মানুষের লাশ পাওয়া যাচ্ছিল। এক সময় জাসদের ৩০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। এখন আবার তাদের সাথে ও স্বৈরাচার এরশাদের সাথে জোট করে ক্ষমতায় আছে। স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ডা. মিলন, জয়নাল, নূর হোসেন, দিপালি সাহা খুন হয়েছিল। শেখ হাসিনার চার পাশে এখন খুনিরা। দেশের জনগণ তাদের সুযোগ পেলে পিষে ফেলবে। এ জন্য তারা নির্বাচন দেয় না। আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে আওয়ামী লীগের ইমাম আখ্যা দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, তাদের সেই ইমাম ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির সব জারিজুরি ফাঁস করে দিয়েছেন। তিনি এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার পর অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, আপনার দল জনপ্রিয় হলে নির্বাচন দিন। যাচাই করুন জনগণ কাকে ভোট দেয়? আওয়ামী লীগ শাসনামলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। অস্থিরতা বিরাজ করছে। অর্থমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন। এ সময় তিনি নয়া দিগন্ত পত্রিকার কপি তুলে ধরে বলেন, দেশের কর্মসংস্থান কমেছে ১৯ ভাগ। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর বলা ও করার কিছুই নেই। কারণ শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে চাকরি দেয়নি। দেশে এখন এক ব্যক্তির শাসন চলছে। খালেদা জিয়া সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দেশের পাঁচটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের অবস্থা নাজুক। কারণ দলীয় লোকদের ব্যাংকে বসানো হয়েছে। তারা ব্যাংকের কাজ জানেন না। কেননা ব্যাংকের কাজটা একটু টেকনিক্যাল। রাম, শ্যাম, যদু, মধুকে ব্যাংকে বসানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পাঁচটি ব্যাংক এখন ফোকলা। অর্থমন্ত্রী যদি সত্য কথা বলে থাকেন তাহলে অবৈধ সরকার ব্যর্থ। তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো বৈধতা নেই। তারা ভুয়া কাগজে ব্যাংক লুট করেছে।

সরকারের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের একটাই নীতি, এটা হচ্ছে দুর্নীতি। যত পারো লুটেপুটে খাও! জিয়াউর রহমান গার্মেন্ট শিল্প প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু এ সরকারের আমলে চাঁদাবাজির কারণে বিনিয়োগ হচ্ছে না। গার্মেন্টগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান কমছে। এক সময় আমরা গার্মেন্ট খাতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলাম। অবৈধ সরকারের আমলে এ খাতের অবস্থান এখন চতুর্থ। তারা শুধু লুট করে আর অত্যাচার করে। এ হলো আওয়ামী লীগের শাসন।

হামলা-মামলা প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নিজেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করেছে। অন্য দিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলাগুলো রেখে দিয়েছে। যেগুলো মইন-ফখরুদ্দীনের সময় হয়েছিল। উল্টো তারা আমাদের নামে নতুন নতুন মামলা দিচ্ছে। প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে। এটা আওয়ামী লীগের পুরনো অভ্যাস। তারা নিজেদের দোষ অন্যের ওপর চাপাতে চায়।

তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল। সেই মামলাসহ দলের লোকদের আট হাজার মামলা তারা প্রত্যাহার করেছে। অথচ শেখ হাসিনা মিগ-২৯ কিনেছিল। এখানে জালিয়াতি করেছে। নতুন নাম দিয়ে পুরনো জিনিস বেশি দামে কিনেছিল। এই যে ফ্রিগেট, যেটা জোড়াতালি দেয়া ছিল। এই মামলাগুলোতে হাসিনার সাজা হতো। আমি তার কাছে জানতে চাই এই মামলাগুলো কেন উঠিয়ে নিলেন?

আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, তারা এখন নিয়ন্ত্রণহীন। জমি দখল, বাড়ি দখল, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই সব অন্যায় অপকর্ম করছে। তারা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছে। পুলিশকে বলব তাদের ধরুন। তা না হলে আপনাদের বলতে হবে তাদের আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধতা কে দিয়েছে? ছাত্রলীগকে আইনের আওতায় আনতে হবে, জেলে পুরতে হবে। তা না হলে অস্ত্র ব্যবহারের জবাব শেখ হাসিনাকে দিতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে জঙ্গি নাটক সাজাচ্ছে। দাড়ি, টুপি, পাঞ্জাবি দেখলে সন্দেহ করে জঙ্গি বানাচ্ছে। আসলে তারা জঙ্গি নয়। জঙ্গি তাদের আমলেই তৈরি। আওয়ামী লীগের আমলে কোনো ধর্মের লোকই নিরাপদ নয়। তারা হিন্দুদের জায়গা দখল করে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।