এশিয়া এনার্জির অফিস প্রত্যাহার ও গেরিল আইকে গ্রেফতারের দাবি

দিনাজপুর সংবাদদাতা : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়ন ও কোম্পানির কর্মকর্তা গেরিল আইকে প্রত্যাহারের দাবিতে ফুলবাড়ীতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

গত ২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ফুলবাড়িতে ফুলবাড়ি-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারীরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে। অবরোধের ফলে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। একই দাবিতে আন্দোলনকারীরা রেলপথও অবরোধ করে রেখেছিল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা। ফুলবাড়ী শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ রেখেছে। মানুষ স্বস্তঃফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ফুলবাড়ীতে অঘোষিত হরতাল পালন করেছে।

তেল গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দররক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল জানান, ফুলবাড়ী থেকে এশিয়া এনার্জির কার্যালয় প্রত্যাহার ও প্রতিষ্ঠানটির গেরিল আইকে গ্রেফতারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। প্রসাশন যদি কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক ও ফুলবাড়ী পৌরসভা মেয়র মর্তুজা সরকার মানিক জানান, তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে।

এদিকে ফুলবাড়ীতে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও এশিয়া এনার্জি অফিস রক্ষায় ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক পৌর মেয়র মর্তুজা সরকার মানিক জানান, এ আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এটা ফুলবাড়ী রক্ষার আন্দোলন। ফুলবাড়ীকে রক্ষায় মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এ আন্দোলন কোনোভাবে দমানো যাবে না।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই খনি হলে ফুলবাড়ী এলাকার মানুষ হারাবে বসতভিটাসহ আবাদি জমি। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে কর্মসংস্থানের পথও। ফলে ওই বছরের ২৬ আগস্ট উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভে  ফেটে পড়ে ফুলবাড়ীবাসী। এ সময় তারা ফুলবাড়ী শহরের নিমতলা মোড়ে একত্রিত হলে বিক্ষুব্ধ জনতার উপর পুলিশ ও বিডিআর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ৩ জন ও আহত হয় প্রায় ২ শতাধিক জনতা। পরে তৎকালীন সরকার এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিষ্কার, ফুলবাড়ীসহ দেশের কোথায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি না করাসহ ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে ৬ দফা চুক্তি করে।