বেনাপোল বন্দরে স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য

বেনাপোল সংবাদদাতা : গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হাঁটু পানি, কাদায় ও যানজটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন আর বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘর থেকে ঠিকমত বের হতে না পারায় ভারতের সাথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও অনেকটা স্থবিরতা নেমে এসেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে বন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রতিবছর জলবদ্ধতায় এ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বৈঠকে বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও সমাধানের প্রতি তেমন নজর নেই।

রোববার সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর অভ্যন্তরে গিয়ে দেখা যায় পানি নিস্কাশনের ড্রেনগুলো অচল হয়ে পড়ায় বন্দর অভ্যন্তরে হাঁটু পানি ও কাদা জমেছে। এরই মধ্যে ভোগান্তিতে কোনো রকমে থেমে থেমে পণ্য খালাস কার্যক্রম চলছে। খোলা আকাশের নিচে মূল্যবান পণ্যসামগ্রী ভিজে তার গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। পচনশীল পণ্য খালাসের জন্য বন্দর অভ্যন্তরে ছাউনির ব্যবস্থা না থাকায় ট্রাকগুলো খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বন্দরের পণ্য গুদামগুলো মহাসড়কের চাইতে নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি সহজে পণ্যগারের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। বন্দরে খোলা আকাশের নিচে অনেক পণ্য পানিতে ডুবে রয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে বন্দর সড়কের দু’ধারে হাঁটু কাদা জমে পণ্যবাহী ট্রাক আটকে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষা মওসুমে এসব সমস্যায় মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাসের কার্যক্রম।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, বেনাপোল বন্দর থেকে প্রতি অর্থবছর সরকারের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়ন হয়নি এখানে। অপরিকল্পিতভাবে বন্দরের উন্নয়নে সামান্য বৃষ্টি হলে বন্দর অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে পণ্য খালাস কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বন্দরের পণ্যগারে স্থান সঙ্কটে দিনের পর দিন আমদানি পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকছে। এতে একদিকে সময় মতো পণ্য সরবরাহ করতে বিলম্ব হচ্ছে অন্যদিকে ট্রাক ভাড়াসহ অন্যান্য খরচের খেসারত বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কোটি কোটি টাকা মূল্যের পণ্য খোলা আকাশের নিচে থাকায় প্রায়ই এসব পণ্য চুরি ও পাচার হয়ে যাচ্ছে। এসব সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন বৈঠকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হলেও সমস্যা সমাধানে বন্দর কর্তৃপক্ষের তেমন আগ্রহ দেখা যায়না।

এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক ট্রাফিক আব্দুল জলিল বলেন, প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কাজের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু কাজ শুরু করা হয়েছে বলে তিনি জানান।