শহর রক্ষা বাঁধের ব্লক সরে গিয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে

রাজশাহীর গোদাগাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের কুঠিপাড়া এলাকায় ভাঙন

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর গোদাগাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের কুঠিপাড়া এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে স্কুল, মসজিদসহ দুই শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে হাটপাড়া থেকে কুঠিপাড়া ইয়াহিয়া চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত এবং ২০০৩ সালে মাদারপুর পর্যন্ত অবশিষ্ট পদ্মা নদীর তীর সংরণ বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু নির্মাণের এক বছরের মাথায় বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। ফাটলগুলো সংস্কার না করার কারণে বাঁধের উপর থেকে ইট পাথর দিয়ে তৈরী ব্লক (বোল্ডার) সরে যেতে থাকে। চলতি বর্ষা মওসুমে বাঁধের অধিকাংশ ব্লকই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে নদীর তীরে ভাঙন। কুঠিপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ বলেন, বাঁধটি পুনর্নির্মাণ না করা হলে অল্প দিনের মধ্যে কুঠিপাড়া জামে মসজিদটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আর নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া মিয়ার বাড়ি, রাস্তাসহ প্রায় ২৩০টি বাড়িঘর। মাদারপুর, বারুইপাড়া, ভগবন্তপুর (হাটপাড়া), সারাংপুর এলাকায় কিছু অংশে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, ড্রেজারের মাধ্যমে বাঁধের নিচ থেকে বালি উত্তোলন করার কারণে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধের নিচের ব্লকগুলো সরে যাওয়ায় বাঁধের ফাটলগুলো বড় আকার ধারণ করছে। গোদাগাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শান্তকুমার মজুমদার বলেন, শুল্ক মওসুমে বাঁধের পুনর্নির্মাণ না করা গেলে আগামী বর্ষা মওসুমে গোদাগাড়ী শহর রা বাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কুঠিপাড়া এলাকায় প্রতিদিনই বাঁধের ২ থেকে ৩টি করে ব্লক নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। কুঠিপাড়া এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালিদ হোসেন বলেন, তিনি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুঠিপাড়া এলাকা ভাঙন পরিদর্শন করেছেন। ভাঙনের সার্বিক বিষয় জেলা প্রশাসক ও রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে। ভাঙন রোধে পূর্ণ বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি জানান। এদিকে সারাংপুর থেকে সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত পদ্মা-মহানন্দা মোহনার নদীর তীর ভাঙছে। স্থানীয় লোকজন জানান, নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছিল। তবে ২-৩ সপ্তাহ থেকে নদীর পানি কমতে থাকায় নদীর পাড় ভাঙছে কম। নদী ভাঙনের কারণে তিনটি মসজিদ, দুইটি স্কুল, রাস্তাসহ তিন শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সুফিয়া খাতুন মিলি বলেন, তার বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে পদ্মা নদীর অবস্থান। ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সুলতানগঞ্জ গ্রামটির ৭০ ভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।