বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেয়ায় ওয়ার্ডেনকে হুমকি

সংবাদদাতা : যোগ্যতা ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তির দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুনের ভর্তি বাতিল করে কর্তৃপ। নিয়ম অনুযায়ী আইবিএসের ফেলো থাকা অবস্থায় তার নামে বরাদ্দকৃত ফ্যামিলি বাসার বকেয়া পরিশোধ ও একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে বাসা ছাড়ার নির্দেশে দেয় কর্তৃপ। কিন্তু নির্দেশিত সময়ের মধ্যেও বাসা খালি না করে উল্টো ওয়ার্ডেনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এদিকে হুমকির ফলে ওয়ার্ডেন প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের থেকে মতিহার থানায় জিডি করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা ছাড়াই বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তির দায়ে গত ২৯ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন মুনের ভর্তি বাতিল করে কর্তৃপ। নিয়ম অনুযায়ী আইবিএসের ফেলো থাকা অবস্থায় তার নামে বরাদ্দকৃত ফ্যামিলি স্যুট সি বাসার বকেয়া পরিশোধ করে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও বাসা খালি না করায় তাকে ৩০ সেপ্টেম্বর বাসা খালি করার শেষ সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ীপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা ১৫ সেপ্টেম্বরের আগে থেকেই আইবিএসর হোস্টেলের ওয়ার্ডেন সহকারী অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামানকে বিভিন্ন মাধ্যমে মারধরের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে ওয়ার্ডেনের এক সহকারী কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে অফিসিয়াল বিভিন্ন কাগজপত্র জোর করে নিয়ে যেতে চান। এ সময় ওই কর্মকর্তা ওয়ার্ডেন ড. কামরুজ্জামানকে বিষয়টি জানালে তিনি অফিসে আসেন। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা কামরুজ্জামানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তার ভর্তি বাতিলে কামরুজ্জামানের হাত আছে উল্লেখ করে তাকে মারধরের হুমকি দিয়ে চলে যান তিনি। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ড. কামরুজ্জামানের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে তার নাম ধরে উচ্চৈঃস্বরে গালিগালাজ শুরু করে মুন। এ সময় মোবাইলে ভাড়াটিয়া গুণ্ডাকে কামরুজ্জামানের হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয় সে। এতে করে ড. মো. কামরুজ্জামান ও তার পরিবার চরম নিরপত্তাহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আইবিএসের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। ওই অভিযোগপত্রে তিনি কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক এসব হুমকির বর্ণনা দিয়েছেন। এতে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, ‘ইব্রাহিম হোসেন মুনের ধারাবাহিক হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যেই আমার দুই সন্তানকে স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি।’

এ ছাড়া আইবিএসের ওই বাসায় থাকাকালীন ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত মোট ৯ মাসের ভাড়া ও ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১৭ মাসের সকল বৈদ্যুতিক বিলও পরিশোধ করেননি তিনি। তাকে বাসা ছাড়ার আগেই এসব বকেয়া বারবার পরিশোধের জন্য ওয়ার্ডেন হিসেবে ড. কামরুজ্জামান তাগাদা দেয়ায় তার উপর ীপ্ত হয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মুন। এ দিকে এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই শিক ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের প থেকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড.এন্তাজুল হক গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরীর মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ভাড়া পরিশোধ করে তিনি সব মালামাল নিয়ে আইবিএস ত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে আইবিএস-এর পরিচালক ড. স্বরোচিষ সরকার বলেন, ড. কামরুজ্জামানের লিখিত অভিযোগটি আমি যাচাই-বাছাই করে ওই দিনই সুপারিশসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাই।