সংবাদ শিরোনামঃ

ভোট ডাকাতির আশঙ্কা ** বাংলা সাহিত্য বিশ্বে ছড়িয়ে দিন ** দেশের রাজনীতি এখন ছাই চাপা তুষের আগুন ** বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত ** হারলেন ট্রাম্প, টিকলেন হিলারি ** মধ্যবর্তী নির্বাচনের চাপ ** বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন খালেদা জিয়া ** অন্তর্দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত জাতীয় পার্টি ** মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা আজও পূর্ণাঙ্গ হয়নি ** শিশু নির্যাতন ও অপহরণ বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ** নিশ্চিত অনিশ্চয়তার মুখে দেশ ** নাজাত লাভের উপায় ** যেভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ** নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাস করছে ** করতোয়া নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকিতে তীরবর্তী স্থাপনা **

ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মাঘ ১৪২২, ২৫ রবিউস সানি ১৪৩৭, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মো. শামীম মিয়া
আমদির পাড়া। চারদিক সবুজে ঘেরা, আমাদের পাড়া। মাঠে, মাঠে, রাখালের বাঁশি বাজানো সুর, চলে যায় গ্রাম পেড়িয়ে বহুদুর। গাছে, গাছে, হরেক রকম ফুল, ফল, পাখির ডাক। রাতে জোনাকী পোকার মিটমিট আলো, আহা খুব সুন্দর লাগে দেখতে ভালো। এই গ্রামকে কেন্দ্র করে, আছে একটা বটগাছ। বটগাছটার বয়স প্রায় একশত বছর হবে। এই বটগাছটার চারদিক দিয়ে গড়ে উঠেছে জনপদ। বটগাছের দেিণ যমুনা নদী, এবং পশ্চিমে বাঙ্গালী নদী। বটগাছের আশে পাশে বেশ কয়টা দোকান আছে। দক্ষিণে জুমারবাড়ী বাজার, উত্তরে সাঘাটা থানা, কয়েক কিলো দূরে গাইবান্ধা জেলা। বটগাছের নিচে বসে অনেক শ্রমজীবী লোকজন বিশ্রাম নেয়। বটগাছটা থাকার কারণে ভ্যানচালক ভাইয়েরা ও গ্রামের লোকেরা এর নাম দিয়েছে বটতলী। বটতলী নামেই এই জায়গাটা বর্তমান পরিচিত। এই বটগাছের ইতিহাস বলা বাহুল্য।

আমি আর দাদা একদিন আমাদের গ্রামের সৌন্দর্য্য নিয়ে কথা বলতেই, উঠে আসে অনেক কথা, দাদার মুখে। এই কথা ঐকথা বলতেই দাদা বলেন, এক শিকারীর দশার কথা। আগে এই বটতলী থেকে পশ্চিম দিকে তাকালেই দেখা যেতো ধূ,ধূ, মাঠ আর মাঠ। বন্যার সময় শাপলা ফুলের মেলে দেওয়া পাপড়ির ডানা, চারদিকে বিছানো, ছিটানো, যেন একটা সাদা শাড়ি। হাজারো রকমের বকের খেলা, আরো যেন বাড়িয়ে দিতো সুন্দরের ডানা। সে অনেক কথা, এখন আর তা নাই। সব কিছু উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে বহু জনপদ।

 à¦¸à§‡à¦•à¦¾à¦²à§‡, এই আমদির পাড়া গ্রামের, এই মাঠেই এই রকম বন্যার সময়।

(বকদের সাথে আসতো কিছু অসাধু বন্দুকধারী শিকারী। একেক জন, একেক গ্রাম থেকে আসতো। প্রতিদিন বিশ ত্রিশটা করে বক মারতো একেক জন। তা আবার বাজারেও বিত্রিু করতো। তা আমাদের মতো সহজ সরল শিক্ষিত মানুষজন ত্রুয় করতো। তবে কেউ প্রতিবাদ করতো না। আজও তো মানুষ এই রকম বন্য পাখি ত্রুয় করে এবং তা খায়। এতে প্রাকৃতিক এর ভারসাম্য নষ্ট হয়, হচ্ছে। আমরা জানি জেনেও তা করি কারণ, আগে থেকে এভাবেই আসছে। প্রতিকার নাই, প্রতিরোধ নাই, নাই প্রতিবাদ আগে ছিলোনা এখনো নাই। তবে আছে পত্র পত্রিকা আর মিডিয়া। এই সব অসাধু শিকারীদের কথা, কর্মকাণ্ডগুলো প্রকাশ বা প্রচার হলে শুধু আফসোস করি আমরা। তখনি আবার অন্য কিছু ভাবি, ভাবি না কিভাবে সবাই মিলে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করা যায় । আমাদের দেশ, রক্ষা করা যেমন আমাদের কর্তব্য, তেমনি প্রাকৃতিক রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব। আসুন এসবের প্রতিরোধ করি। দরকার পরলে প্রতিবাদও করি।)

দাদার গল্প শোনার পর আমার মনে হলো এই রকম। একটা গাছে ছিলো দুটি বক পাখি, স্বামী স্ত্রী আর ছেলে মেয়েদের নিয়ে সুখেই ছিলো। সন্তান দু’টাই ছোট্ট। তাই বাবা মা আসতো বন্যার মধ্যে আমদির পাড়ার গ্রামের এই বিশাল মাঠে, নিজের এবং শিশু সন্তান বকদের ক্ষুধা মিটানোর জন্য। কিন্তু সেদিন স্বামী স্ত্রী বক দুটির মধ্যে স্বামী বকটা আটক হয় বা বন্দী হয় এক শিকারীর ফাঁদে। স্ত্রী বকটাও আটকের হাত থেকে বেঁচে যায়। স্বামী বকটাকে স্ত্রী বকের সামনেই জবাই করে অসাধু শিকারীটা। লুকিয়ে স্ত্রী বকটা সব দেখে। স্ত্রী বকটা নিজের চোখে দেখে তার স্বামীর মৃত্যু। বকটা খাবার সংগ্রহ করা বাদ দিয়ে উড়ে যায় তার বাসায়। বক ছেলে মেয়ে মায়ের কণ্ঠ শুনে হা করে আছে মা খাওয়াবে বলে। কিন্তু মার চোখে পানি। মাকে ছেলে-মেয়ে সন্তান দুটি জিজ্ঞাসা করে, মা তোমার কী হয়েছে, বাবা কোথায় ? মা অনেকক্ষণ পর বললো, তোমাদের বাবা আর নাই। বক সন্তান দুটি আবারো প্রশ্ন করলো, বাবা নাই মানে কোথাই গেছে আমাদের খাদ্য আনার জন্য। মা বললো, তোমাদের বাবা আর ফিরে আসবেনা। অসাধু  এক  শিকারী তোমাদের  বাবাকে প্রথমে গুলি করে। আমরা পালাতে চাইলে আবারো গুলি করে আর তোমাদের  বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমি বাঁচাতে পারিনি তোমাদের বাবাকে। ছেলে বক আর মেয়ে বক অনেকক্ষণ কাঁদলো। কাঁদতে কাঁদতে ছেলে বক, মা বককে বললো, মা আমি শিকারী দেখবো, তারা কী আমাদের চাইতে বড়। আমাদের চাইতে শক্তিশালী । মা বললো, হ্যা বাবা, তুমি আরো বড় হও দেখতে পাবে তাদের।

একমাস পর : বন্যার পানি কমতে লাগলো। এখন খাবার যোগাড় করতে সুবিধা এই কথাগুলো মা বক বললো, ছেলে বককে। কারণ ছেলে বক এখন বড় হয়েছে। উড়তে পারে তবে খুব বেশি না। মা, বকের পক্ষে একা সম্ভব সেসহ তিন জনের খাদ্য সংগ্রহ করা।

তাই সেদিন মা বক ছেলে বককে সঙ্গে আনে, খাদ্য সংগ্রহ করতে। আসার পথে মা বক ছেলে বককে অনেক কথা শিখিয়ে দেয়। মা ছেলে মিলে আসে এই আমদির পাড়ার এই বিশাল মাঠেই। এসে দেখে হাজার হাজার বক অথাৎ তাদের সঙ্গি। বক ছেলেটার সাথে অন্য বকদের পরিচয় করিয়ে দেয় মা বক। ছেলে বক মুক্ত আকাশ বিশাল খেলার মতো মাঠ পেয়ে খুব খুশি। খুব আনন্দের সাথে পেট ভরে খেলো। খেয়ে বোন বকের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করছে ছেলে বকটা। এমন  সময় অসাধু শিকারীরা লুকিয়ে থেকে গুলি করতে থাকে চার দিক থেকে। ছেলে বকটার গায়ে গুলি না লাগলেও পানিতে পড়ে যায়। পানিতে তার ডানা দুটাই ভিজে যায় আর উড়তে পারেনা সে। এর মধ্যে আসে শিকারী। এসে ছেলে বকটাকে ধরে। মা বক দূর থেকে দেখছে আর কাঁদছে। আজ বুঝি আমার ছেলেটা মারা যায়। ওর বাবার মতো। ছেলে বক মা মা ও মা বলে ডাকছে। মাও শুনতে পারছে। কিন্তু কি আর করবে মা শুধু দূর থেকেই কাঁদছে। ছেলে মাকে ডাকা বাদ দিয়ে ভাবছে কী করা যায় ? আমার বিশ্বাস এরাই আমার বাবাকে মেরেছে। আমি এদের ছাড়বো না। ছেলে বকটাকে শিকারী নিয়ে আসে পানি থেকে উচু একটা জায়গায়। এখন জবাই করবে, এক হাত দিয়ে বকটাকে ধরে আছে অন্য হাত দিয়ে ছুড়ি বেড় করছে ব্যাগ থেকে, এমন সময় ছেলে বক তার ঠোট দিয়ে ঠোকর দেয় শিকারীর চোখে অমনী শিকারীর চোখটা উঠে আসে। শিকারী  রাগের চোটে বকটাকে  চেপে ধরে অমনী আরেকটা ঠোকর দেয় আরেকটা চোখে, উঠে আসে এই চোখটাও। এবার শিকারী  বকটাকে ছেড়ে দেয়। প্রাণের ভয়ে পালিয়ে যায় ছেলে বক। বকের মা খুশি হয়। কিন্তু মারা যায় লোভি এই শিকারী। বক মা এবং ছেলে বক বাসায় আসে। এসে বলে ছেলে বক মাকে, মাগো আজ আমার বাবার খুনের প্রতিশোধ নিয়েছি। মা বক আর ছেলে-মেয়ে বক ঠিক করে তারা এই গ্রাম এই দেশ ছেড়ে চলে যাবে অন্য কোনো দেশে। আর কোনোদিন  ফিরে আসবে না এই আমদির পাড়া।

এই শিকারীর দশার পর সেই থেকে এই গ্রামে বকের সংখ্যা দিন দিন কমতেই থাকে এখন বক যেন চোখেই পড়েনা। তবে শিকারীর সংখ্যা আজও কমেনি ঐ রকম শিকারীদের দেখা যায় বন্দুক নিয়ে মাঠে মাঠে ঘুরছে। তবে বক না পেলোও অন্য পাখিগুলো মারছে।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।