পাতাবাহার কবিতাবলী

ভাষার-ই গান গায়

শরীফ সাথী

 

যে ভাষাতে কথা বলে

অন্তরে সুখ পাই,

বঙ্গ মায়ের সে ভাষাকে

বিশ্ব দিল ঠাঁই।

মায়ের মুখে হাসি ঝরা

স্বপ্ন দু’চোখ চাই,

এই জগতে মায়ের মতো

আর তো কেহ নাই।

সেই মায়েরই ভাষার জন্য

জীবন দিল ভাই,

ফেব্রুয়ারি স্মরণ দিনে

ভাষার-ই গান গায়।

রক্তে ভেজা সবুজ বনে

শীতল ছোঁয়া পায়,

শহীদ মিনারে দলে দলে

পুষ্প দিতে যায়।

শোকে কাতর শোকে পাথর

ছেলে হারা মা’য়,

ঊর্ধ্ব গগন চেয়ে আজো

বলে খোকা আয়।

 

 

 

একুশ তুমি

কাজী আবুল কাসেম রতন

 

একুশ তুমি

বাংলাদেশের

বাংলা মায়ের

শুভেচ্ছা।

একুশ তুমি

দাদুর মুখে

রূপকথারই

সু-কিচ্ছা।

একুশ তুমি

সূর্যে ভাষা

রক্তিম হেম।

একুশ তুমি

মুক্তি সেনার

মুক্ত প্রেম।

একুশ তুমি

উড়ে যাওয়া,

স্বাধীন পাখির

প্রত্যাশা।

একুশ তুমি

প্রিয় জনতার

প্রেম প্রীতি জয়

ভালোবাসা।

 

 

মাতৃভাষার জন্য

এস এম আল আমিন

 

রফিক শফিক বীর সেনানী

ধন্য তারা ধন্য

অকাতরে জীবন দিলো

মাতৃভাষার জন্য।

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

শহীদ হলো যারা

লাখো বাঙালির অন্তরে ভাই

আজো অমর তারা।

ভাষার তরে শপথ করে

সাহস নিয়ে বুকে

মাতৃভাষার মর্যাদাটা

তারাই দিলো রেখে।

তাদের কথা স্মরণ হলে

গর্বে হৃদয় দোলে

তারা শহীদ তারা অমর

কেউ যাবে না ভুলে।

আমরা তারই উম্মত

এস এম মনির হোসাইন

 

না দিবস না রাত

না সন্ধ্যা না প্রভাত,

সুবহে সাদিক ক্ষণে

আগমন হল ভুবনে।

শান্তির বারতা নিয়ে

তমস্যার আঁধার কাটিয়ে

সাথে নিয়ে রহমতের তরী

তাশরীফ নিলেন জাতির কাণ্ডারী।

ধন্য ধন্য রবে দুনিয়া জাহান

আশির্বাদ করলেন প্রভু মহান,

বার রবিঃ আউয়াল সোমবারে

মা আমিনার কোল জুড়ে,

আসলেন নবী মোহাম্মদ (সা.)

আমরা গুনাহগার তার-ই উম্মত।

 

 

চলো দ্বীন কায়েমের পথে

রিফাতামান্না তাবাসসুম

 

সইব কেনো শোষণ-পীড়ন বলো

দৃঢ় হস্তে রুখব এসব চলো।

নইতো মোরা ভীরু, চিত্তে আছে বল

কুরআন, হাদীস, রাসূলই সম্বল।

আমরা মুমিন, আমরা মুসলমান

খোদার দ্বীন কায়েম করতে বিলিয়ে দেব প্রাণ।

মিছেই কেনো ডরো কাফেরকে তুমি হে মুসলমান

বীরের জাতি তোমার আছে নিজস্ব সম্মান।

দ্বন্দ্বে কেনো এখনো আছো পড়ে

দ্বীনকে ওরা দেবে উজাড় করে।

সত্যের জয় সর্বদা-ই, মিথ্যার জয় নয়

এই কথাটি মনে রেখো মুমিন, সব সময়।

বাঁচলে তুমি হবে গাজী, মরলে শহীদ ভাই

দ্বীন কায়েমে চলো সবে এগিয়ে যাই তাই।

 

 

মায়ার কুসুম

ফরিদ আহমদ ফরাজী

 

আগের মতোন, আবার যদি

সকল কিছু হয়

যেমন ধরুন, দ্বীনের বাতি

জ্বলছে এ বাংলায়।

কেউ বলে, বলে না মিথ্যা বচন

সত্য থাকে ঠোঁটে

সবার জন্য সবার হৃদয়ে

মায়ার কুসুম ফুটো।

সময়ের কাজ সময়ে করে

সময়ের মূল্য বোঝে।

হারিয়ে যাওয়া সোনার নোলক

দ্বীনের আলোয় খোঁজে।

তবেই বারেক সুখ পাখিটা

আসবে ঘরে ফিরে

থাকবে না’ক রেষারেষি

এ দুনিয়া ঘিরে।

 

মনের দুয়ারে নড়ে

মোস্তাহিদুর রহমান

 

বলতো মায়ে যানে যেন

পথ হারানো দূরে

যে কথাটি বলতো মা’য়ে

অনেক মধুর সুরে।

সকল বাঁধা সকল মায়া

সবকিছু আজ ফেলে

যেই মা তুমি আমায় ছেড়ে

কোথাও চলে গেলে।

খেলার জীবন শেষ হলো যে

জীবন বায়ুর ঝড়ে

তবু যে আজ মার কথাটি

মনের দুয়ারে নড়ে।

 

প্রভুর দয়া

তাহমিদ হাসান

 

আল্লাহ তুমি মহান প্রভু

তুমি দয়াময়

তোমার ইশারায় এই ভুবনে

সবি হবে লয়।

তোমার দয়ায় ফুল ফোঁটে

ঐ না কুসুম বাগে,

তোমার দয়ায় সব কিছুই

কি যে সুন্দর লাগে।

তোমার প্রেমে সূর্য ওঠে

পূব আকাশ চিরে

তোমার ইশারায় সূর্যতরী

পশ্চিমেতে ভিড়ে।

গাছ গাছালি পাখ পাখালী

জপে তোমার নাম,

প্রভু তোমার  দান।

আকাশ নদী ঝর্না পাখি

গায় তোমারি গান

এই ধরণীর সকল কিছু

প্রভু তোমার দান।

চাঁদ তারা সব আলো ছড়ায়

প্রভু তোমার জন্য,

তোমার দয়া আছে তাই

আজকে মোরা ধন্য।

প্রভু তোমার দয়ার কথা

হয় না লিখে শেষ

এই ধরণীর সব তোর

দয়ার পরিবেশ।

 

 

মন হতে চায়

সামিয়াতুত তানজীম

 

মন হতে চায় দূর গগনের

একটি রঙিন ঘুড়ি,

মন হতে চায় পাখির সাথে

পাল্লা দিয়ে উড়ি।

মন হতে চায় বিহান বেলার

মিষ্টি সুরের পাখি,

মন হতে চায় ঘুম ভাঙাতে

আপন মনে ডাকি।

মন হতে চায় যাই হারিয়ে

উজান গাঙের তীরে

মন হতে চায় শাপলা শালুক

পদ্মফুলের ভিড়ে।

মন হতে চায় যাইরে মিশে

মাঠের সবুজ ঘাসে,

মন হতে চায় ঝর্ণাধারা

পাহাড়িয়া ঘেষে।

মন হতে চায় নীল আকাশে

রংধনু হয়ে ভাসি,

মন হতে চায় জোসনা ধোয়া

স্নিগ্ধ আলোর হাসি।

 

মহানবী (সা.)

মোস্তাহিদুর রহমান

 

মহামানবের জীবন গ্রন্থ যতই পড় না ভাই

রাসূলের মতো জীবন কাহিনী কোথাও কিন্তু নাই।

আমিনার কোলে এসেছিল যেদিন প্রভাতের নব রবি

রূপের তুলনা করতে পারেনি ধরনির কোন কবি।

হেনরী মাকে নয়নের পাতে মধুর স্বপ্ন একে

পাড়ি দিল পিতা পরপার দেশে প্রাণ পুত্রকে রেখে।

মাতৃগর্ভে থাকতেই পিতা আব্দুল্লাহ মারা যায়

জীবিকার তরে গিয়েছিল সেদিন সুদূর সিরিয়ায়।

নিয়তির লেখা বুঝা নাহি যায় কি জানি কি করি হায়

এতিম করিয়া পাঠালো নবীকে নশ্বর দুনিয়ায়।

কে বলে তুমি পিতা হারা নবী, কে বলে তুমি মাতা হারা

এ মহাজগত তোমারই তরেতে চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা।

সূচনা হয়েছিল হিলফুলফুযল মক্কার অদূরে

শান্তির বাণী বাজিলো সেদিন সুমধুর সুরে সুরে।

বংশ গোত্রের কঠিন সমস্যা কালো পাথর নির্মাণে

সমাধান তার দিয়েছিল রাসূল ইসলামের অভিধানে।

সাম্য ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল বিশ্বের মহানবী

ক্ষেত্রে তাহার প্রথম অবদান অস্বীকার করো না কবি।

যুগের পাষাণ প্রথা সমাজে অহরহ চলমান

দুনিয়ার বুকে দিতে এলেন তিনি সত্যের সন্ধান।

 

 

 

শহীদী মরণ

সাদিয়া ফারহানা

 

মরতে যখন হবেই খোদা

শহীদী মরণ দিও

দ্বীনের পথে প্রাণটি আমার

কবুল করে নিও।

আজও যারা করছে

নানান অপকর্ম

কাফেররা কি বুঝতে পারে

শহীদের মর্ম?

তারাই শুধু ঝুঝতে পারে

শহীদ মানে কী?

তাই দ্বীনের তরে, প্রাণটি তাঁদের

বিলাতে দেখেছি।

তাদের দলে আমায় প্রভু

শামিল করে নিও।

শহীদী মরণ দিও আমায়

শহীদী মরণ দিও।

 

তারার গাড়ী

মাহিন মুবাশশির

 

আকাশ ভরা তারার মেলা

রাত হয়েছে জোনাক জ্বলা।

সাজিয়ে দিলাম মেঘের ভেলা

তারার দেশে করবো খেলা।

তারার গাড়ী যাচ্ছে বাড়ি

মেঘের পাহাড় দিচ্ছে পাড়ি

তারার আকাশ দিল্ খোলা

মেঘের চূড়া পথ ভোলা।

তারায় তারায় হবে খেলা

খেলতে খেলতে কাটবে বেলা

তারায় চড়ে ফিরলো বাড়ি

মেঘের সাথে দেবো আড়ি।