সংবাদ শিরোনামঃ

ভয়াবহ ইমেজ সঙ্কটে বাংলাদেশ ** মাওলানা নিজামী খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করবেন ** রাজকোষ কেলেঙ্কারিতে বিশ^ব্যাপী তোলপাড় ** এদেশে একদিন আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী হবে ** কার্গো বিমান নিষেধাজ্ঞা ডাল মে কুচ কালা হ্যায় ** সরকারের বিরাজনীতিকরণ ষড়যন্ত্রে অস্থির দেশ ** আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিন ** ভোটের অন্যতম ফ্যাক্টর মুসলিম ও বাংলাভাষীরা ** বিরোধীদের ওপর হামলা অব্যাহত উল্টো পথে হাঁটছে ইসি ** সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নড়বড়ে ** সিন্ডিকেটের দৈনিক চাঁদা কোটি টাকা ** আর্থিক ও ব্যাংকিং খাত অব্যবস্থাপনার দায় সরকারকেই বহন করতে হবে ** দেশের রাজনীতিতে ছাত্রদের ভূমিকা ** মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আমাদের কবিতা ** কুষ্টিয়ায় অপরাধীদের সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে শিশুরা ** বেনাপোল কাস্টমসে অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা **

ঢাকা, শুক্রবার, ৪ চৈত্র ১৪২২, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৩৭, ১৮ মার্চ ২০১৬

ভিক্ষাবৃত্তির রমরমা বাণিজ্য : পর্ব-১

সিন্ডিকেটের দৈনিক চাঁদা কোটি টাকা

ভিক্ষাবৃত্তি। সব থেকে নিকৃষ্ট বৃত্তি হিসেবে বিবেচিত এটি। আয়ের কোনো বিকল্প পথ নেই এমন সহায়-সম্বলহীন মানুষগুলো অনেকটা বাধ্য হয়ে সাধারণত এ পথ বেছে নেন।

তবে রাজধানী ঢাকার চিত্র এর সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভিক্ষাবৃত্তি জনবহুল এই শহরটির কিছু অসাধু মানুষের একটি রমরমা ‘ব্যবসা’। ভিুকদের আয় থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার উপরে নিয়ে যায় এ সংঘবদ্ধ চক্র।

সংঘবদ্ধ এই চক্র নিয়ে দীর্ঘ দুই মাস অনুসন্ধান করেছেন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক সাঈদ শিপন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। পাঠকদের জন্য ধারাবাহিকভাবে তা তুলে ধরা হলো।

রাজধানীতে রমরমা ভিক্ষাবৃত্তি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে সংঘবদ্ধ চক্র। ভিক্ষার টাকা থেকে চক্রের সদস্যদের ভিক্ষা (চাঁদা) না দিয়ে রাজধানীতে ভিক্ষা করা সম্ভব না।

এ চক্রের অধীনে ঢাকাতে ভিক্ষাবৃত্তি করা ব্যক্তির সংখ্যা আনুমানিক ৫০ হাজার। প্রতিদিন একজন ভিুক যে আয় করেন তা থেকে ২শ’ টাকা দিতে হয় চক্রের সদস্যদের।

সে হিসাবে ভিুকদের কাছ থেকে সংঘবদ্ধ চক্র দৈনিক সংগ্রহ করে ১ কোটি টাকা। এর বাইরে রয়েছে ভিুকদের অংশ। সরদারদের ভাগ দেওয়ার পরও একজন ভিুকের আয় হয় কমপে ৩শ’ টাকা।

চক্রের সদস্যরা তিন স্তরে নিয়ন্ত্রণ করেন ভিক্ষার কার্যক্রম ও চাঁদা গ্রহণ। প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিতদের মধ্যে থেকে বাছাইকৃত কয়েকজন। দ্বিতীয় ধাপে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকারা সিভিলে (সাধারণ মানুষের মতো) ভিুকদের গতিবিধি পর্যবেণ করেন। আর সবার উপরে রয়েছেন সরদাররা।

ভিুকদের গতিবিধি পর্যবেণের দায়িত্বে থাকারা ভিুকদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করেন। এরপর চাঁদার টাকা সরদারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। অন্ধ কল্যাণ সংস্থা, দুস্থ কল্যাণ সংস্থা, পঙ্গু সমাজকল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন নামে চলে ভিক্ষাবৃত্তির এ রমরমা ব্যবসা।

মাঠ পর্যায়ে পর্যবেণের দায়িত্ব পালনকারীদের এসব সংস্থায় পদ থাকে সদস্য হিসেবে। আর সরদারদের নিয়ে হয় কার্যকরী কমিটির সম্পাদকমণ্ডলী অথবা উপদেষ্টা পরিষদ। কার্যকরী কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে আছেন সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পাবলিক সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন পদবি। ভিন্ন পরিচয়ে ২৭ জন ভিুকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

মতিঝিল অঞ্চলে পর্যবেণের দায়িত্ব পালন করাদের মধ্যে আছেন মজিবর, কাশেম, লতিফ। বাইতুল মোকারম মসজিদ এলাকায় আছেন মুক্তার, কাশেম। হাইকোর্ট এলাকায় মফিজ, সাইফুল ইসলাম, আমিন উদ্দিন, শওকত হোসেন, আগুন, মামুন। শাহজাহানপুর-বাসাবো এলাকাতে হাফেজ বিল্লাহ, মোস্তফা। গুলিস্তানে মো. খোকনসহ প্রতিটি অঞ্চলেই আরও কয়েকজন পর্যবেণের দায়িত্ব পালন করেন। রাজধানীর প্রতিটি অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন পর্যবেক থাকলেও এক অঞ্চলের পর্যবেকের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের পর্যবেকের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। এরা পারস্পরিক সহযোগিতায় নিজ নিজ অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেন। একই ধরনের পন্থা অবলম্বন করেন তাদের সরদাররাও।

ভিুকদের নিয়ে রাজধানীর বকশীবাজারে অবস্থিত ‘অন্ধ সংস্থা’ নামে আছে একটি সংগঠন। এ সংগঠনের সভাপতি পদে আছে নুর আলম সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী হাওলাদার ও পাবলিক সেক্রেটারি পদে আছেন আবু আলী মাতব্বর। ‘পঙ্গু সমাজকল্যাণ সমিতি’ নামে ভিুকদের রয়েছে আর একটি সংগঠন। রাজধানীর ইস্কাটনে এই সংগঠনটির কার্যালয়। তবে সংগঠনের আওতায় থাকা অধিকাংশ ভিুকের আড্ডাখানা হাইকোর্ট মাজার এলাকা। মো. আরব আলী সরদার নামে একজন এই সংগঠনটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন মো. জাকির হোসেন, মো. লিপটন মল্লিক, বাবুল মিয়া, মো. হাবিব, মো. আলী, মো. সালেহ আহমেদসহ আরও কয়েকজন।

অন্ধ সংস্থার পাবলিক সেক্রেটারি আবু আলী মাতব্বরের সঙ্গে সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে কথা বললে তিনি জানান, তাদের আওতায় ১ হাজারের উপরে অন্ধ আছেন। যারা বিভিন্ন অঞ্চলে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।

৫শ’ ভিুককে খাওয়াতে হলে কী করতে হবে এমন প্রশ্ন করলে আবু আলী মাতব্বর বলেন, ভিুকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি দিতে হবে। আর খাওয়ার পাশাপাশি মাথাপিছু ৫০ টাকা করে দিতে হবে।

এরপর সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনাদের সংগঠনের অধীনে থেকে কেউ ভিক্ষা করলে আপনাদের কত টাকা দিতে হবে? উত্তরে তিনি বলেন, কোনো টাকা দেয়া লাগবে না। আমাদের অফিসে অনেকেই আছে। কেউ থাকতে চাইলে থাকতে পারবেন। তার মতো সে থাকবে। এর জন্যও টাকা দিতে হবে না।

এরপর দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের পরিচয় দিয়ে কথা বললে সুর পাল্টে ফেলেন আইয়ুব আলী হাওলাদার। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের অধীনে কোনো মানুষ থাকে না। ঢাকা শহরে আমাদের সদস্য আছে মাত্র ১১৭ জন। তবে কোনো অন্ধ বিপদে পড়লে আমরা তাকে সহায়তা করে থাকি।

এদিকে ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন, ২০১১’-এর তৃতীয় অধ্যায়ের ৯ (১) ধারায় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিতদের আটক করার বিধান রাখা হয়েছে। চতুর্থ অধ্যায়ের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, ভিক্ষাবৃত্তি কাজে নিয়োজিত কোনো ভবঘুরেকে আটক করা হলে তার পাশাপাশি যে ব্যক্তির প্ররোচণা বা প্রভাবে সে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত তার বিরুদ্ধে পেনাল কোড, ১৮৬০, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৬-সহ অন্যান্য আইনের বিধানগুলো প্রয়োগযোগ্য হবে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা মাঝে মধ্যে ভিুকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই।’ এদিকে, খিলগাঁও থানার ওসি কাজী মো. মায়নুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘উপর থেকে নির্দেশনা আসলে আমরা ভিুকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাই। আপাতত এ ধরনের কোনো নির্দেশনা নেই।’ দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের সৌজন্যে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।