সংবাদ শিরোনামঃ

অবশেষে সরকার ও আ’লীগের পরাজয় ** তত্ত্বাবধায়কের দাবি মানুন নয় তো বিদায় নিন ** আওয়ামী লীগাররা বিস্মিত হতবাক! ধস আর ঠেকানো যাচ্ছে না! ** উন্নয়নের রাজনীতি উপহার দিন না হলে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে দেয়া হবে ** আ’লীগের ফ্যাসিবাদী চেহারা ** প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গ-তামাশা বনাম খালেদা জিয়ার আলটিমেটাম ** সংবাদপত্রের পাতা থেকে ** ঢাকার মহাসমাবেশে আসতে পথে পথে বাধা ** ৪২টি ট্রেন চলাচলের জংশন স্টেশন পার্বতীপুরে যাত্রী ভোগান্তির শেষ নেই **

ঢাকা শুক্রবার ২ চৈত্র ১৪১৮, ২২ রবিউস সানি ১৪৩৩, ১৬ মার্চ ২০১২

বিধান সভার নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি

ভারতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলোর গুরুত্ব বাড়ছে

॥ খন্দকার মহীউদ্দীন আহমদ॥
ভারতের বিধান সভার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। ৩টি রাজ্যে হেরেছে কংগ্রেস। জয় পেয়েছে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মনিপুর ও উত্তরখণ্ডে। রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তর প্রদেশে আবারও কংগ্রেসের ভরাডুবিতে চিন্তিত কংগ্রেস নেতৃত্ব। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী। খারাপ ফলাফলের দায় স্বীকার করেছেন রাহুল। উত্তর প্রদেশের পুরো নির্বাচনী প্রচারণা চলেছে রাহুলের নেতৃত্বে। নয়াদিল্লিতে রাহুল বলেন, আমি যেহেতু দলের সামনে দাঁড়িয়ে কাজেই ফলাফলের দায়দায়িত্ব আমার। উত্তর প্রদেশে যেখানে আমাদের থাকার কথা সাংগঠনিকভাবে আমরা সেখানে নেই। আমি মনে করি, এটি আমার জন্য একটি ভালো শিক্ষা। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসকে দাঁড় করানোর ব্যাপারে আমার পুরোপুরি চেষ্টা থাকবে। একদিন আমরা সেখানে জয়ী হবো। উত্তর প্রদেশে বিধান সভার ৪০৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস সেখানে পেয়েছে মাত্র ৩৭টি। ২২৪টি আসন পেয়ে মুলায়েম সিং যাদবের সমাজবাদী দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন বহুজন পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। তারা পেয়েছে মাত্র ৮০টি আসন। তাছাড়া ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি পেয়েছে ৪৭টি। অর্থাৎ বিজেপির অবস্থান কংগ্রেসের চেয়ে ভালো। পাঞ্জাবে ১১৭টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আকালী দল ৫৬টি আসন পেয়ে বিজয়ী হয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে ৪৬টি, আর বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। মনিপুরে ৬০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৪২টি আসন পেয়েছে এবং উত্তরা খণ্ডে ৭০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ৩২টি। বিজেপি পেয়েছে ৩১টি আসন। নির্বাচন পূর্ববর্তী বিভিন্ন সমীক্ষায়ও উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের পরাজয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে রাহুল গান্ধীর ক্যারিশমার উপর ভর করে সেখানে অন্তত ১০০টি আসন পাওয়ার আশায় ছিল কংগ্রেস। রাহুল মায়াবতির দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের ব্যাপক সমালোচনা চালান। ফলে মায়াবতীর ভরাডুবি হলেও কংগ্রেসের সাফল্য আসেনি। রাহুলের নির্বাচনী প্রচারণার ফসল তুলেছেন মুলায়েম সিং যাদব। সিএনএন ও হেডলাইন টুডের সমীক্ষায় বলা হয়েছিল উত্তর প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে মুলায়েম সিং এবং বাস্তবেও তাই হয়েছে। কংগ্রেস যে দুটি রাজ্যে জয়ী হয়েছে জনসংখ্যানুপাতে ও আকারেও ছোট সেই হিসেবে কেন্দ্রে তাদের আসন সংখ্যা কম। উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের হারকে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকারের জন্য একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনী পরীক্ষা হিসেবে দেখা যেতে পারে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে স্থানীয় দল হিসেবে সমাজবাদী পার্টি জয়লাভ করেছে। দলটি দলিত কৃষক শ্রেণী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট ও সমর্থন লাভে সক্ষম হয়েছে। এতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, জাতীয় নির্বাচনেও এই দুই শ্রেণীর ভোটাররা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এদের আস্থা মায়াবতী বা কংগ্রেসের ওপর নেই। তবে নির্বাচনে পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসছে এই ভয় থেকেই মুসলমান ভোটাররা মুলায়েম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টির সাইকেল মার্কায় ভোট দিয়েছে। তিনি কংগ্রেসের মুসলিম কোটা রাজনীতির সমালোচনা করেন। মায়াবতী আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বিধানসভার নির্বাচনে তার দল আবার ক্ষমতায় আসবে। কিছুদিনের মধ্যেই জনগণ মুলায়েম সিং যাদবের সরকারের অপশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে যাবে।

দীর্ঘ ২ দশক কংগ্রেস উত্তর প্রদেশে ক্ষমতার বাইরে। এবার রাহুল গান্ধী ক্যারিশমায় নির্বাচনী ফলাফল ভালো করার যে প্রত্যাশা কংগ্রেসের ছিল তা অপূর্ণই রয়ে গেল। অদূর ভবিষ্যতে উত্তর প্রদেশের শাসন ক্ষমতা লাভ করার সম্ভাবনাও তিরোহিত হলো। ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাধিক জনসংখ্যা কবলিত উত্তর প্রদেশের ক্ষমতা কংগ্রেসের লাগালের বাইরে থাকাও রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। কংগ্রেসের কাছে এখন কি ট্রাম্প কার্ড আছে যা তাকে উত্তর প্রদেশের ভোটারদের মন জয় করতে সাহায্য করবে তা নিয়ে তাদের নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে।

ভারতের ৩টি রাজ্যের বিধান সভার নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের পর দলীয় সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, আমরা নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিয়েছি। এবার এক সঙ্গে বসে প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, যে কারণে ক্ষমতাসীন দলের বিপর্যয় ঘটেছে তাতে ভুলত্রুটি রয়েছে। আমাদের যে সমস্ত ভুল হয়েছে সেগুলো সংশোধনের পরিকল্পনা নেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল পরাজয়ের একটি বড় কারণ। সোনিয়া বলেন, পাঞ্জাব রাজ্যে সাফল্যের ব্যাপারে অনেক আশাবাদী ছিলাম। তবে পিপলস পার্টি অব পাঞ্জাব সেখানে কংগ্রেসের সম্ভাবনা নষ্ট করেছে। হার বা জয় যাই হোক না কেন প্রতিটি নির্বাচনী ফলাফল আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের মানুষ মায়াবতী সরকারের ওপর বিরক্ত ছিল। গোয়ার অনেক ভোটার কংগ্রেস সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল। এছাড়া ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতিও কংগ্রেসের পরাজয়ের কারণ ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী মনমোহন সিংয়ের জায়গায় অন্য কাউকে প্রার্থী করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সোনিয়া গান্ধী বলেন, প্রশ্নই উঠে না। বিধান সভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের ফলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তিনি মনে করেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গান্ধীকে মনমোহন সিংয়ের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে সোনিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে দলের প্রার্থিতার বিষয়ে বিবেচনার জন্য এখনও অনেক সময় আছে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচন কংগ্রেসের ভরাডুবিতে রাহুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বাস্তবে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন রাহুল গান্ধী। কারণ পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া ছিল তাকে ঘিরে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে ভালো সাড়াও পেয়েছিলেন রাহুল। কংগ্রেসের ধারণা ছিল ফলাফলের দিক থেকে শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে কংগ্রেস। নির্বাচন পরিবর্তনের স্লোগানও উঠল পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির ন্যায়। কিন্তু সে ঝড়ে মায়াবতীর অপশাসন বিদায় নিলেও কংগ্রেসের লাভ হলো না। লাভ হলো মুলায়েম সিং যাদবের সমাজবাদী দলের। এবারের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা হলো সোনিয়ার রায়বেরেলি এবং রাহুলের আমেথি আসনে কংগ্রেসের পরাজয় যা রীতিমত বিস্ময়কর- মেনে নেয়া কঠিন। এতে সহজেই বোঝা যায় পরিবর্তনের ধাক্কা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। এবারের বিধান সভার নির্বাচনে ৩টি রাজ্যে কংগ্রেস পুরোপুরি পরাস্ত হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে বিজেপির সমান সমান ক্ষুদ্র রাজ্য মনিপুরে মুখ রক্ষা হয়েছে কংগ্রেসের। পাঞ্জাবে রাহুলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে কংগ্রেস উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিল বাস্তবে তা হয়নি। নির্বাচনী ফলাফলে প্রমাণ মিলেছে রাহুল নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি। এতে করে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরি ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাকে বিবেচনা করা হতো তার অস্তিত্ব এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী কলাকৌশল ও প্রচারাভিযান ছিল রাহুল কেন্দ্রীক। বাস্তবে তাও ঠুনকো বলেই প্রমাণিত হয়েছে। রাহুল কোনো ক্যারিশমা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থ হয়েছেন কংগ্রেসের ভোট ব্যাংক ভারী করতে।  গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় চষে বেড়িয়েছেন। উত্তর প্রদেশের ২০০টি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দিয়েছেন কিন্তু কোনো কিছুতেই ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারেননি। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনী প্রচারণা রাহুলের রাজনৈতিক জীবনের প্রথম পরীক্ষা আর নেই। পরীক্ষায় তিনি পর্যুদস্ত হলেন। কংগ্রেসের অবস্থান চতুর্থ ৪০৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৩৭টি। পর পর ১০টি রাজ্যের বিধান সভার নির্বাচনের ফলাফলে ভারতের রাজনীতির আঞ্চলিক দলগুলোর পাল্লা ভারি দেখাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে আঞ্চলিক দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস ও তামিলনাড়–তে জয়ললিতার জয় করেছিল। এবার একই চিত্র উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবে উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী দল ও পাঞ্জাবে আকালী দল। প্রশ্ন উঠতেই পারে- দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে তাহলে আগামীতে আঞ্চলিক দলগুলোই কি চালকের আসনে বসবে? বাস্তবেও তাই প্রতিটি রাজ্যের সরকার গঠনে আঞ্চলিক দলগুলোর ভূমিকাই এখানকার বাস্তবতায় মুখ্য, সেই প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাদের ভূমিকা কি হতে পারে তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে ভারতীয় জাতীয় নেতৃবৃন্দকে। কংগ্রেস বা বিজেপি দল দুটোই বিগত নির্বাচনগুলোতে ভালো ফলাফল আনতে শুধুমাত্র ব্যর্থই হয়নি। তবে তারা জাতীয় চিন্তা ও চেতনার নতুন দুয়ারও উন্মুক্ত করেছে ভারতীয়দের।

ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পারস্য ভেঙ্ককৈশ্বর রাও বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে রাহুল গান্ধী উত্তর প্রদেশে যে পরিমাণ সময় ও শক্তি ব্যয় করেছেন তা কতটা মূল্যবান ছিল। আমরা যারা দলের বাইরে আছি তাদের কাছে মনে হয়েছে তা যথেষ্ট ছিল না। রাহুলের ব্যক্তিগত ক্যারিশমা সম্পর্কে রাজনৈতিক ভাষ্যকার অক্ষয় মিশ্র বলেন, তিনি গান্ধী নেহরুর স্ট্যাম্প বহন করছেন। কংগ্রেস বিশ্বাস করে এটি অনেক মানুষকে প্রভাবিত করবে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞানী রাজেন্দ্র দয়াল বলেন, জাতীয় পর্যায়ে মানুষ দলকে ভোট দেয় কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনে এর ব্যতিক্রম ঘটে থাকে। তবে রাজেন্দ্র দয়ালের বিশ্লেষণকে সঠিক মেনে নেয়া যায় না। স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার বক্তব্য সঠিক বলে বিবেচনা করা যায়। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার আরতি জেরাথ লিখেছেন, ভোটারদের মনে সামান্য হয়তো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। যদি ব্রান্ড হিসেবে মনমোহনকে নি®à¦ªà§à¦°à¦­ দেখায় তাহলে ব্রান্ড হিসেবে রাহুল গান্ধীকেও ভুগতে হবে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আর কে মিশ্র বলেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করেছে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে রাহুলের ক্যারিশমা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এখন কংগ্রেসকে শুধু তার রাজনৈতিক কৌশলই বদল করলে চলবে না, একই সঙ্গে দলটি কিভাবে রাহুলকে কাজে লাগাবে এর জন্যও নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে। ভারতের রাজ্যসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়কে আঞ্চলিক রাজনীতির উত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাস্তবতা হলো ভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস বা বিজেপির পূর্বেকার অবস্থান নেই। কংগ্রেস বিগত নির্বাচনে যে ফলাফল অর্জন করেছে তাতে তাকে কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে হয়েছিল আঞ্চলিক দলগুলোর সহায়তা নিয়ে। ভারতীয় ভোটাররা এখন আঞ্চলিক দলগুলোর প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। যার প্রতিফলন দেখা যাবে ভবিষ্যৎ নির্বাচনেও। কংগ্রেস যদি মনে করে থাকে যে, গান্ধী পরিবারের ইমেজ দিয়ে রাহুল বিজয় ছিনিয়ে আনবেন। তাহলে তা তাদের ভুল। রাহুল ক্যারিশমা কোনো কাজে আসেনি। ভারতের বর্তমান নির্বাচনে তাই প্রমাণিত হয়েছে। নেহেরু-ইন্দিরার জায়গায় ভারতীয়রা রাহুলকে মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান বাস্তবতাও তাই বলছে।

উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মায়াবতীর বহুজন পার্টির ভারাডুবিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে রাজ্যের মুসলমান ভোটাররা। মুসলমানদের মধ্যে বিজেপি আতঙ্ক কাজ করছে- তাই তারা দলবদ্ধভাবে সমাজবাদী দলকে ভোট দিয়েছে তাদের এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না তা ভবিষ্যৎই নির্ধারণ করবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ভারতের মুসলমানরা আর কতকাল এভাবে রাজনীতির ময়দানে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার হবে। পশ্চিমবঙ্গের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনেও মমতা বিজয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিল মুসলমান ভোটাররা। নির্বাচন এলেই মুসলমানদের কদর বেড়ে যায়। এরপর তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেয় না বিজয়ীরা। ভারতের মুসলমানদের সমস্যা হলো তারা দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক প্লাটফরম ও পরিচিত জাতীয় নেতৃবৃৃন্দের অভাবে ভারতের রাজনীতিতে তারা কোনো কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তারা এলাকাভিত্তিক আঞ্চলিক দলগুলোর স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছেন মাত্র। কিন্তু অধিকার আদায়ে পিছিয়ে আছেন। অতি সম্প্রতি ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নতুন রাজনৈতিক প্লাটফরম হিসেবে ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়ার আত্মপ্রকাশ একটি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। ভারতীয় মুসলমানদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে মুসলমানদের ব্যাপক অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।  মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা ও সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টাই তাদের কল্যাণের পথ উন্মুক্ত করবে। সেদিন হয়তো দূরে নয়, যখন ভারতীয়  রাজনীতিতে মুসলমানরা কার্যকরি ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক।

ঊসধরষ : সড়যরথধযসধফ১৫@ুধযড়ড়.পড়স

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।