দেশে প্রতিবছর পানিতে ডুবে ২২ হাজার লোক মারা যায়

সোনার বাংলা রিপোর্ট
দেশে প্রতিবছর পানিতে ডুবে ২২ হাজার লোক মারা যায়। এরমধ্যে ১৮ হাজারই হচ্ছে শিশু। ইন্টারন্যাশনাল ড্রাউনিং রিসার্চ সেন্টার-বাংলাদেশ (আইডিআরসিবি)-র এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।  আইডিআরসিবি’র ওই তথ্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর ১.২ মিলিয়ন লোক পানিতে ডুবে মারা যায়। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ২ জনের বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যান।

সবচেয়ে বেশি পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার সংখ্যা ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর। এশিয়া মহাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ৫০ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে।

ওই গবেষণা প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ১৮ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়ে প্রতিবছর ১৮ হাজারেরও বেশি পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। যা প্রতিদিন গড় হিসেবে দাঁড়ায় ৫০ জন। তবে, সবচেয়ে বেশি যে বয়সের শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে তাদের বয়স ১ বছর থেকে ৪ বছর এবং অতিদ্রুত তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  বেশিরভাগ পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা সকাল ৯টা থেকে ২টার মধ্যে গ্রাম অঞ্চলেই বেশি ঘটছে। বেশিরভাগ পানিতে ডুবার ঘটনা ঘটছে পুকুর, খাল এবং নদীতে। ইউনিসেফের জরিপ-২০০৬ এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশে শিশুর মৃত্যুর কারণ এবং যে হারে শিশু মৃত্যু হচ্ছে তা হলো,  সেপটিসিমায় ১ শতাংশ , পশুর কামড়ে ৪ শতাংশ, আত্মহত্যায় ৪ শতাংশ, ডায়রিয়ায় ১৩ শতাংশ,  নিউমোনিয়ায় ২০ শতাংশ, সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ শতাংশ, অপুষ্টিতে ১৩ শতাংশ, একই সঙ্গে ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ায় ৪ শতাংশ এবং পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে ২৮ শতাংশ এবং বাকি ৭ শতাংশ অন্যান্য কারণে মারা যাচ্ছে।

 à¦à¦°à¦®à¦§à§à¦¯à§‡ পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যাই বেশি। এ ব্যাপারে সেন্টার ফর ইন্জুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. একেএম ফজলুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবছর ২২ হাজার লোক পানিতে ডুবে মারা যায়। এর মধ্যে ১৮ হাজারই শিশু।’ তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের অর্থায়নে এইড প্রোগ্রামের আওতায় আমরা এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখিয়েছি। আমরা তাদের শেখানোর পাশাপাশি পানিতে পড়লে উদ্ধার কৌশল এবং পানিতে পড়লে তাকে পরে কি চিকিৎসা দেয়া হবে সে বিষয়ে সহযোগিতা করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে ৪ বছরের নিচে যত শিশু রয়েছে তাদের সাঁতার শিখানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আপনারা দেখেছেন  আরও একটি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। সাঁতার শেখাটা কত জরুরি। সেখানেও বেশ কিছু শিশুমৃত্যুর ঘটনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়ান সংস্থা রয়েল লাইফ সেভিং এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের সাথে কাজ করছি।’  উল্লেখ্য, সোমবার দিনগত রাত ২টার দিকে প্রায় দু’শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি শরীয়তপুর-১ লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার উত্তর চরমসুরা এলাকায় মেঘনা নদীতে ডুবে যায়। এ ঘটনায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, দমকলবাহিনী এবং পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় মেঘনা নদী থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১১০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী, ১ জন কিশোরী ও ৫ জন শিশু রয়েছে।