অযতœ অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন অভয়নগরের জমিদার বাড়ি

অভয়নগরেরর ৪শ’ বছরের পুরনো জমিদার বাড়ির একাংশ

মফিজুর রহমান, অভয়নগর (যশোর) : যশোরের অভয়নগর ভৈরব উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শ্রীধরপুর জমিটি অযত্ম অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকারের পর্যটন বিভাগের সুনজর পেলে বাড়িটি হতে পারত দর্শনীয় স্থান। সংশ্লিষ্টমহলের অবহেলায় ৪শ’ বছরের ইতিহাসের কালের সাক্ষী প্রতœà¦¤à¦¾à¦¤à§à¦¤à§à¦¬à¦¿à¦• গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনটি  হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারি সহযোগিতায় এই বাড়িটির সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারলে এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনা বেড়ে যেত। নয়নাভিরাম এ জমিদার বাড়িটি তার ইতিহাস ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

জানা গেছে, উপজেলায় যে ক’টি প্রাচীন ঐতিহ্য চোখে পড়ে তার মধ্যে শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি তার মধ্যে অন্যতম। এটি আজ থেকে প্রায় ৪শ’ বছরের পুরানো একটি ঐতিহ্য। অনুসন্ধানের জানা যায়, এক সময় এখানে জমিদারদের ব্যাপক পদচারণা ছিল। হুগলি থেকে আগত জমিদার বনমালী বসু আনুমানিক ১৭৫৬-১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে শ্রীধরপুরে মন্দির দিঘি, নাট্যশালাসহ একটি জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। মূলত এসব রাজবাড়ি থেকে এ অঞ্চলের খাজনা আদায় করা হতো। এসব বাড়ি ও মন্দির ছিল তৎকালীন সময়ের সেরা স্থাপত্য। শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি ও মন্দির এসকল স্থাপত্যের একটি। তবে এখন এটি দেখলে মনে হয় একটি পোড়াবাড়ি। যার দেখার কেউ নেই।

মাত্র ৩টি পরিবার এটি দেখাশোনা করেন। অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রমের মাধ্যমে তারা এটি ধরে রেখেছেন। জমিদার বাড়িতে রয়েছে একটি মন্দির। এখানে প্রতি বছর শ্যামা পূঁজা হয়। এখন মূল জমিদার বাড়ির তেমন কোনো নির্দশন চোখে পড়ে না। তবে এখানে একটি বড় দিঘি রয়েছে। রয়েছে দিঘির একটি শানবাঁধা ঘাট। দিঘিটি এখন ঘের হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ মোল্যা ও রাঙ্গা মোল্যা মাছ চাষ করছেন।

জমিদার বাড়ির মন্দিরের সভাপতি শ্রী গৌরাঙ্গ রায় জানান, আমরা এখানে ৩টি পরিবারের প্রায় ৩০ জন সদস্য বাস করি। কিন্তু সরকারি কোনো সহায়তা না পাওয়ায় জমিদার বাড়ির আজ এ অবস্থা। তিনি জানান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এখানে মাঝে মধ্যে এসে সামান্য কিছু অর্থ-কড়ি দিয়ে যান। তবে তা অপর্যাপ্ত হওয়ায় কোনো সংস্কার করা সম্ভব হয়না।

মন্দিরের সেক্রেটারি শ্রী সুবাস বিশ্বাস জানান, আমরা চাই ৪শ’ বছরের প্রাচীন এই জমিদার বাড়িটি সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক। তবে তা না হওয়ায় আমরা হতাশ। আমাদের দাবি প্রাচীন বাড়িটির প্রতি সুদৃষ্টি দিয়ে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক। এ ব্যাপারে শ্রীধরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ‘আমি মাঝে মাঝে ঐ অঞ্চলে যাই। আমার পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকি। তবে সরকারিভাবে এটি সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। এটি প্রাচীন ঐতিহ্যের মধ্যে গণ্য করে এর সংস্কার করা হলে প্রাচীন ঐতিহ্যের এ নির্দশন কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’