সংবাদ শিরোনামঃ

মহাবিপর্যয়ের দিকে বাংলাদেশ ** সংবিধান সংশোধনের নামে এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা জাতিকে আরো বিভক্ত করে মুখোমুখি হতে প্রণোদিত করে ** রাজনৈতিক নিপীড়নের উদ্দেশ্যেই মুজাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট ** পশ্চিমবঙ্গে লাল দুর্গের পতন ** জামায়াত গণমানুষের অধিকারের কথা বলে তাই সরকার নেতৃবৃন্দের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে ** সাহসী বুকে অব্যাহত থাকুক এ পথচলা ** বিসমিল্লাহ বর্জন : হিন্দুত্ববাদের অধীনস্থ করাই ল্য ** প্রচারের অভাবের পরেও ডাক বিভাগের মোবাইল মানিঅর্ডার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ** গ্রামের পতিত জমিতে সূর্যমুখী ও কৃষকের হাসি ** গ্রাহাম ই ফুলারের ইসলামবিহীন পৃথিবী **

ঢাকা শুক্রবার ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৩২, ২০ মে ২০১১

প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ
সিআইএ (CIA)’র সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বর্তমানে কানাডার সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক গ্রাহাম ই ফুলারের (Graham E. Fuller) একটি  নিবন্ধ ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় বহুল প্রচারিত Foreign Policy পত্রিকায় ২০০৮ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সংখ্যায়  প্রকাশিত হয়েছে। এই ছোট্ট নিবন্ধটির শিরোনাম “A World without Islam” নিবন্ধটি  প্রকাশের পর পরই পাশ্চাত্যের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রতিক্রিয়ায় কেউ কেউ খুশিতে টগবগ হয়ে বলেছে, তাহলে আত্মঘাতী হামলা, গাড়িবোমার বিস্ফোরণ, প্রতিরোধ সংঘর্ষ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, গেরিলা যুদ্ধ, ভীতিপ্রদ ভিডিও এমনকি নয়-এগারোর মতো দুর্বিপাক বিশ্বের কোথাও ঘটত না। বয়োবৃদ্ধদের অনেকেই চিৎকার করে বলেছেন, তাহলে যিশুখ্রিষ্টের ধর্ম বিশ্বধর্মে রূপান্তরিত হতো। এ জন্য শ’ শ’ বছরব্যাপী ক্রুসেডের প্রয়োজন হতো না। জেহাদের আশঙ্কায় বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নির্ঘুম কাল কাটাতে হতো না। কেউ কেউ আবার মস্তবড় দার্শনিকের মতো বলেছে, এই পৃথিবীতে ইসলাম না এলে, পয়গম্বর মোহাম্মদও (সা.) থাকতেন না। থাকত না এশিয়া, আফ্রিকা, এমনকি ইউরোপ পর্যন্ত মুসলমানদের বিজয় কাহিনীর সুদীর্ঘ ঘটনা পরম্পরার অবিশ্বাস্য গৌরবগাঁথা।

পাশ্চাত্যে ইসলাম সম্পর্কে এমন প্রতিক্রিয়ার বৃহত্তর ব্যাপ্তি এবং উচ্চতর মাত্রা অনুধাবন করলে কয়েকটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এক. বর্তমানকালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এবং ইউরোপের পরিচর্যায় সন্ত্রাসবাদ (Terrorism) পাশ্চাত্যবিরোধী, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী, ভয়ঙ্কর এক মতবাদে পরিণত হয়েছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, ইচ্ছাকৃতভাবেই পাশ্চাত্যের বিশেষ মহল, বিশেষ করে নাইন-ইলেভেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের শাসকরা ইসলাম এবং সন্ত্রাসবাদকে শুধু সমার্থক নয় বরং অভিন্ন চিহ্নিত করে বিশ্বময় প্রচারাভিযান শুরু করেছে। দুই. এ লক্ষ্যে শক্তিশালী অসংখ্য সংবাদমাধ্যমে প্রতিনিয়ত ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে, ইসলামী জীবনব্যবস্থাকে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার আদলে (Islamofascism) সাজিয়ে-গুছিয়ে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষা কারিকুলামের মতো অবশ্য পাঠ্যরূপে প্রচার করা হচ্ছে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের কাছে এমনভাবে যে, বিশ্বে যদি ইসলাম না আসত তাহলে বিশ্বময় অনাবিল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করত। তিন. ব্যাপক অপপ্রচার ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের দক্ষতা এক দিকে যেমন গভীর হয়েছে, অন্য দিকে তেমনি হয়েছে ব্যাপক ও অতি বিস্তৃত। গত শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে শুরু করে সপ্তম দশক পর্যন্ত সমাজতন্ত্র ও কম্যুনিজমকে যেভাবে শক্তিনির্ভর, ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক, মানবতাবিরোধী, সভ্যতাবিরোধী ব্যবস্থারূপে চিহ্নিত করে তারা বিশ্বময় তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল, সেই অভিজ্ঞতাকে মূলধন করে সেই কলাকৌশলকে উন্নততর এক শিল্পে রূপান্তরিত করে এখন প্রয়োগ করছে ইসলামবিরোধী অভিযানে।

প্রবন্ধকার গ্রাহাম ফুলারের প্রতিক্রিয়া এখন একটু ভিন্ন। তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলতে চাচ্ছেন: ইসলাম যদি না পৃথিবীতে আসত তাহলে কি আজকের উত্তপ্ত মধ্যপাচ্যে শান্তি বিরাজ করত? বিশ্বের অন্যান্য স্থানে যেসব উদ্বেগজনক ঘটনাক্রমে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে তার হাত থেকে কি মানুষ অব্যাহতি লাভ করত? তিনি নিজেই লিখেছেন আরব, পারসিক, তুর্কি, কুর্দ, ইহুদি বা পস্তুন প্রমুখ মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলো আজো এ অঞ্চলে গভীর প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। ইসলামের আবির্ভাবের আগে পারস্য সাম্রাজ্য এথেন্সের দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত উপনীত হয়েছিল এবং বৃহত্তর আনাতোলিয়ায় বসবাসকারীদের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রূপেই দেখা দিয়েছিল। সেমিটিকবর্গের মানুষ তাদের বিরোধিতা করতে করতে পারস্য দখল করে এবং ইরাক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আরব ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন আরব গোত্রের ব্যক্তিরাও বেশি দিন নিশ্চুপ থাকেনি। তারাও ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে, ইসলামের আবির্ভাবের আগেই। তের শতকে মঙ্গোলরা ঝড়ের বেগে চার দিক তখনো তছনছ করেছে এবং মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সব অর্জনকে মুছে দিতে চেয়েছে। তুর্কিরা আনাতোলিয়া দখল করে, সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তার করে ইউরোপের ভিয়েনা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এসব অভিযানের মূলে ছিল ক্ষমতা, ভূখণ্ডদখল, ব্যবসা-বাণিজ্য। ইসলামের সাথে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

ধরা যাক, পৃথিবীতে ইসলাম এলো না। তখন মধ্যপ্রাচ্যব্যাপী ছিল কিছু ইহুদি আর অল্পসংখ্যক জোরোয়াস্ট্রিয়ান। হয়তো তখন মধ্যপ্রাচ্যের বিশাল জনসমষ্টি হয়ে যেত খ্রিস্টান। তাহলেই কি মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠত শান্তির আলয়? চৌদ্দ শতকের ইউরোপের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, খ্রিস্টান ইউরোপ তখন কত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল। ধর্মযুদ্ধ বা ক্রুসেডের মূল লক্ষ্য বিশ্লেষণ করুন, দেখবেন এই সর্বনাশা অভিযানের মূলে যতটা ছিল ধর্মীয় উন্মাদনা, তার চেয়েও অনেক বেশি ছিল রাজনৈতিক প্রভাবের কাহিনী, অনেক বেশি ছিল অর্থনৈতিক আগ্রাসনের হুঙ্কার। খ্রিস্টধর্ম তখন ছিল বিভিন্ন বর্ণের মধ্যে ঐক্যের প্রতীক মাত্র। মূল লক্ষ্য ছিল অন্ধকার থেকে উঠে আসা, আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান, বিশ্বজয়ের উন্মাদনায় উদ্দীপ্ত ইউরোপের বিশ্বজয়ের আকাক্সা, তা ন্যায়ের পথেই হোক আর অন্যায়, অবৈধ পথেই হোক। বিশ্ব ইতিহাসে যে সময়কাল সাম্রাজ্যবাদের কুখ্যাত যুগ বলে চিহ্নিত এই সেই যুগ। ‘বিজিতদের কাছে খ্রিস্টধর্মের মূলমন্ত্র তুলে ধরার শ্লোাগান নিয়ে অগ্রসর হয়ে ইউরোপ বিশ্বময় স্থাপন করতে চেয়েছিল উপনিবেশ। লক্ষ্য ছিল উপনিবেশগুলো থেকে সব সম্পদ ছিনিয়ে এনে পাশ্চাত্যের ক্ষমতাকে এক দিকে আকাশচুম্বী করা, অন্য দিকে মেট্রোপলিটান ইউরোপকে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চলে রূপান্তরিত করা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লক্ষ্য এ-ও ছিল যে, ইউরোপের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া জনসমষ্টির জন্য তাদের বাসযোগ্য আবাসভূমি জবরদখল করা। এমনি সনাতন আধিপত্যবাদে উন্মত্ত হয়ে ইউরোপ দখল করে আমেরিকা, উত্তর ও দক্ষিণ উভয়ই, পেশিশক্তির অশুভ প্রভাবের আওতায় আনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ভূখণ্ড কব্জা করে প্রায় সমগ্র আফ্রিকা দখল করে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে শুধু জবরদখল করেই ইউরোপ ক্ষান্ত হয়নি, ওই সব ভূখণ্ডে বসবাসরত আদিবাসীদের নির্মূল করে ইউরোপের বিশাল জনসমষ্টির জন্য আবাসভূমিরও ব্যবস্থা পাকা করে তোলে। অন্য উপনিবেশগুলো থেকে সম্পদ নিংড়ে ইউরোপকে সম্পদশালী করে ছাড়ে। যেসব ভূখণ্ডে ইসলামের প্রসার ঘটেছিল শুধু সেই সব ক্ষেত্রে ইউরোপের জয়যাত্রা কিছুটা থমকে দাঁড়ালেও আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আফ্রিকার বৃহত্তর অংশে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অ-খ্রিস্টানদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হয়েছিল। আফ্রিকার যে অংশে ইসলাম ছিল সেখানে ইউরোপের নির্মমতা সীমিত হতে বাধ্য হয়েছিল।

প্রবন্ধকার নিজেই বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য সত্যিই যদি সামগ্রিকভাবে খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা হতো তা হলেও কি ইউরোপের মারাত্মক মারণাস্ত্রসজ্জিত যুদ্ধজাহাজের বহর অপ্রতিহত গতিতে মধ্যপ্রাচ্যে ঢুকতে পারত? খ্রিস্টান মধ্যপ্রাচ্য কি ইউরোপের আধিপত্যবাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেত? অতীতকে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে রেখে পেট্রোলিয়াম যুগের কথা ভাবুন। পেট্রোলিয়ামসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো, মুসলিমপ্রধান না হয়ে খ্রিস্টান প্রধান হলেও কি ইউরোপের তল্পিবাহক হতো? হতো কি তাদের আশ্রিত জনপদ? শক্তি প্রয়োগ করে সুয়েজ খালের মতো সঙ্কীর্ণ পথ হয়তো ইউরোপ তখনো তৈরি করত, কিন্তু খ্রিস্টান প্রধান হলেও মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলো ইউরোপের রাজকীয় পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলোর অবস্থানকে সুনজরে দেখত না। সুনজরে রাখত না পাশ্চাত্যের বলদর্পী শাসক-প্রশাসকদের, ইউরোপের নাক উঁচু রাষ্ট্রদূতদের, পাশ্চাত্যের কোনো গোয়েন্দা বাহিনীকে অথবা তাদের সামরিক তত্ত্বাবধায়কদের। দক্ষিণ আমেরিকার দিকে দৃষ্টি দিলেও তা সুস্পষ্ট হবে। দক্ষিণ আমেরিকার তেল সম্পদ, ভূমি, বাজার এবং সার্বভৌমত্বের নিয়ন্তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি লাতিন আমেরিকার রাষ্ট্রগুলো কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘকালীন শাসন শোষণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এখানে উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়েছে তা পর্যালোচনা করলেই বিষয়টি সুস্পষ্ট হবে, যদিও লাতিন আমেরিকার শাসনকারী এলিটদের শিকড় প্রোথিত রয়েছে ইউরোপের মাটি, ধর্ম ও জীবনাচারে। উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে কিভাবে হিন্দু-প্রধান ভারত, কনফুসিয়ান চীন, বৌদ্ধ ভিয়েতনাম এবং খ্রিস্টান আফ্রিকা ক্ষিপ্ত হয়ে ইউরোপিয়ানদের বিতাড়িত করেছে এবং এখনো করে চলেছে সে দিকেও দৃষ্টি দেয়া যায়। সুতরাং ইসলামকে এককভাবে চিহ্নিত করে, ইসলামের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তাকে ধ্বংসাত্মক এবং মানবতাবিরোধীর পরিচ্ছদে সাজিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার সামনে এমন প্রয়াস যে কত কুৎসিত, কত কদর্য তা কি তারা ভেবেছেন?

হয়তো কেউ কেউ বলবেন, খ্রিস্টান- মধ্যপ্রাচ্যে গণতন্ত্রের প্রসার অবশম্ভাবী হয়ে উঠত। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও কথা রয়েছে। খ্রিস্টান- বিশ্বের উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে গণতন্ত্র বিকশিত হয়েছে বলে কেউ কেউ এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, খ্রিশ্চিয়ানিটির সাথে পরোক্ষভাবে হলেও গণতন্ত্র সম্পর্কিত। এই ধারণাও অসত্য। গণতন্ত্রের জন্ম যেমন হয়েছে ইউরোপে, তেমনিভাবে নাৎসি ব্যবস্থা, ফ্যাসিজম, সর্বাত্মক ব্যবস্থার (ঞড়ঃধষরঃধৎরধহরংস) মতো একনায়কতন্ত্রের জন্মভূমিও ইউরোপ। স্পেন ও পর্তুগাল গণতন্ত্রের আলো দেখেছে মাত্র ক’দশক আগে, গত শতকের সপ্তম দশকে। চার্চকেন্দ্রিক একনায়কতন্ত্র থেকে গ্রিস মুক্ত হয়েছে আরো পরে। খ্রিস্টান রাশিয়া গণতন্ত্রের পথে পা রেখেছে সবে। মাত্র ক’বছর আগেও খ্রিস্টান লাতিন আমেরিকা একনায়কতন্ত্র ও সামরিক শাসকদের পদতলে দলিত-মথিত হয়েছে। আফ্রিকার খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলো এখনো  গোষ্ঠীপতি এবং সামরিক শাসকদের ব্যক্তিগত শাসনের অধীনে। মধ্যপ্রাচ্য যদি খ্রিস্টান ধর্মের আবাসভূমি হতো তাহলে সেখানে গণতন্ত্রের কতটুকু বিকাশ হতে পারত? ইতিহাস সাক্ষী, গণতন্ত্রের বিকাশে ধর্মের প্রভাব নয়, বরং সামাজিক কাঠামো, জনগণের সচেতনতা, নেতৃত্বের মান প্রভৃতিই প্রধান নিয়ামক। ইউরোপে গণতন্ত্রের বিকাশ হতে থাকে খ্রিস্টধর্ম প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড় হাজার বছর পরে, সতের শতকের পর থেকে। অন্য দিকে মদিনায় খেজুর বীথির ছায়ায় ৬২২ খ্রিস্টাব্দে যে ছোট্ট রাষ্ট্রটির জন্ম হয় হজরত মুহাম্মদ সা.-এর নেতৃত্বে তা ছিল ওই সময়কালে বিশ্বময় অগণতান্ত্রিকতার বিরাট মরুভূমিতে গণতন্ত্রের একমাত্র মরূদ্যান। খেলাফতের তিন দশকের পর সেই আলোর রাজ্য থেকে মুসলিম বিশ্ব ছিটকে পড়ে রাজতন্ত্রের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। এর সাথে ইসলামের কোনো যোগসূত্র নেই।

লেখক : সাবেক ভিসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।