সংবাদ শিরোনামঃ

মহাবিপর্যয়ের দিকে বাংলাদেশ ** সংবিধান সংশোধনের নামে এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা জাতিকে আরো বিভক্ত করে মুখোমুখি হতে প্রণোদিত করে ** রাজনৈতিক নিপীড়নের উদ্দেশ্যেই মুজাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট ** পশ্চিমবঙ্গে লাল দুর্গের পতন ** জামায়াত গণমানুষের অধিকারের কথা বলে তাই সরকার নেতৃবৃন্দের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে ** সাহসী বুকে অব্যাহত থাকুক এ পথচলা ** বিসমিল্লাহ বর্জন : হিন্দুত্ববাদের অধীনস্থ করাই ল্য ** প্রচারের অভাবের পরেও ডাক বিভাগের মোবাইল মানিঅর্ডার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ** গ্রামের পতিত জমিতে সূর্যমুখী ও কৃষকের হাসি ** গ্রাহাম ই ফুলারের ইসলামবিহীন পৃথিবী **

ঢাকা শুক্রবার ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৩২, ২০ মে ২০১১

ডা. এফ এম কামাল
ইংরাজীতে ‘কালচারাল শক’ বলে একটা কথা আছে। সেটি তখন ঘটে যখন কোন ব্যক্তি এমন কিছু দেখে যা সে জীবনে কোন দিন দেখেনি বা করেনি। মানুষ বেদনায় চিৎকার করে ‘বৈদ্যুতিক শক’য়ে। আর ‘কালচারাল শক’য়ে বিস্ময়ে আঁতকে উঠে তার মন। সেটি ঘটে অভাবনীয় কিছু দেখার বিস্ময়ে। ইরানে আমার এমন বিস্ময় বহু বার বহু বিষয়ে হয়েছে। এখানে তারই কিছু বিবরণ দিব। তবে তার আগে এক ইরানী মহিলার কালচারাল শকের কাহিনীটি বলবো। তার জীবনে সেটি ঘটেছিল বাংলাদেশে গিয়ে। তিনি বিয়ে করেছিলেন ইরানে কর্মরত একজন বাংলাদেশি ডাক্তারকে। উক্ত ডাক্তারের সাথে আমার দেখা হয় উত্তর তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে। সাথে ছিল তার ইরানী সেই স্ত্রী। পাসপোর্ট নবায়নসহ নানা কাজে আমাদের দূতাবাসে যেত হত। তাঁকেও হয়ত তেমনই কোন কাজে দূতাবাসে আসতে হয়েছে। প্রবাস জীবনে দেশি মানেই আপন মনে হয়। তাই পরস্পরে আন্তরিক হতে সময় লাগে না। ‘দেশের বাড়ি কোথায়’ -এরূপ কিছু আলাপ-পরিচয়ের পর আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনার স্ত্রীকে কি বাংলাদেশে বেড়াতে নিয়েছেন।” ডাক্তার সাহেব হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। জিজ্ঞেস করলাম, “বাংলাদেশে আপনার স্ত্রীর কি বিস্ময়কর কিছু লেগেছে?” আমার প্রশ্নে ভদ্রলোক প্রথমে কিছুটা ভড়কে গেলেন। একটু থেমে বলেন, “আমার বউয়ের কাছে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে রাস্তার পাশে, দেয়ালের ধারে হঠাৎ একজন দাঁড়িয়ে পেশাব-ত্যাগে লেগে গেল। পাশের নারী-পুরুষ কারো প্রতিই কোন ভ্রƒà¦•à§à¦·à§‡à¦ª নাই।” তাঁর উত্তর শুনে আমার কাছে সেটি অস্বাভাবিক মনে হয়নি। হয়ত তার স্ত্রীর অনেক কালচারাল শকের ঘটনাই ঘটে থাকবে তবে আমি আর বেশি খুঁটিয়ে জানতে চাইনি। পরিবেশ এবং সময়ও হাতে ছিল না। ইরানে আমি ১০ বছর কাজ করেছি। বহু শহর ও বহু গ্রামের বহু স্থানে গেছি। কিন্তু কোথাও এমন চিত্র দেখিনি, সম্ভবত ডাক্তার সাহেবের স্ত্রীও কোন সময় পথে ঘাটে এরূপ মূত্রত্যাগের চিত্র দেখেননি, যা বাংলাদেশে দেখেছেন। ফলে বাংলাদেশে এমন চিত্র দেখে “কালচারাল শক”য়ের শিকার হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইরানে ফিরেও সে বিস্ময়ের কথা হয়ত বহুজনকে বলেছেন, যেমন বলেছেন তাঁর স্বামীকে। কালচারাল বা সংস্কৃতির উপকরণ বহু। সেটি নিছক কবিতা, গান, খাদ্য-পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ নয়, বরং কোথায় কিভাবে সে জাতির লোকেরা ঘর বাঁধলো এবং কোথায় পায়খানা-পেশাব করল সেটিও। তাই কোন ব্যক্তির বা পরিবারের সংস্কৃতির মান বুঝা যায় কীরূপ পোশাক পরলো বা কীরূপ ঘরে বাস করে শুধু সেগুলি দেখে নয়, বরং কোথায় মল বা মূত্র ত্যাগ করলো তা দেখেও। মনের সংস্কার শুধু ব্যক্তির ধ্যান-ধারণাই পাল্টে দেয় না, পাল্টে দেয় তার আচরণ ও রুচিবোধও। তখন সংস্কার আসে শয়নগৃহ, হেঁসেল, গোসলখানাসহ তার টয়লেটেও। ইসলামের আগমনে আরব বিশ্বে তো তেমনই এক মহান সভ্যতার জন্ম হয়েছিল। তাই ক্রসেডের যুদ্ধে ইউরোপীয়দের যখন মধ্যপ্রাচ্যে আগমন হয় তারা কালচারাল শকের শিকার হয়েছিল। তারা জেরুজালেম নগরীতে যেরূপ হাম্মাম ও টয়লেট দেখে তারা নিজ দেশে সেরূপ দেখেনি। ভাবতেও পারেনি।

এবার ইরানে আমার কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলবো। আমার কর্মজীবনের দুইমাসও তখন অতিক্রম করেনি। ১৯৮০ সালের কথা। বিকালে রোগী দেখছি গরমসার জেলার একমাত্র জেলা হাসপাতালটির ইমার্জেন্সিতে বসে। হাসপাতালটির বর্তমান নাম ‘বিমারিস্তানে ইমাম খোমিনী’ বা ‘ইমাম খোমিনী হাসপাতাল’ রাখা হয়। হাসপাতালকে ফারসীতে বিমারিস্তান বলা হয়। ফার্সীতে রোগীকে বলা হয় বিমার, আর হাসপাতাল হলো বিমারদের স্থান। তখন মাগরিবের নামাযের সময় ঘনিয়ে আসছে। রোগীর তেমন ভীড় নেই। আমার কামরায় তখন কোন রোগী নেই, এমন সময় বয়সে ত্রিশের কাছাকাছি এক ভদ্রলোক ঢুকলেন। তিনি ফারসীতে না বলে আমার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে ইংরাজিতে কথা বলা শুরু করলেন। তিনি শান্তভাবে যা বললেন তার অর্থ হলো : “জনাব ডাক্তার সাহেব, আমি এ প্রদেশের গভর্নর। আমি আপনার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলতে চাই।” তার কথা শুনে আমি বিস্ময়ে হতভম্ব। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। পোশাক তার সাদাসিধা। হাতে এক হ্যান্ডব্যাগ। মুখে চাপদাড়ি। সাথে কেউ নেই। আমাদের দেশে গভর্নর, মন্ত্রী, জেলাপ্রশাসক দূরে থাক, ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য মেম্বরও রাস্তায় একাকী হাঁটে না। এক পাল সঙ্গিসাথীর বহর নিয়ে তিনি রাস্তায় নামেন। মন্ত্রী বা গভর্নর হলে তো কথাই নেই, সাথে একপাল পুলিশের বহু গাড়ি থাকে। সাদা পোশাকে অনেক গোয়েন্দা থাকে। আরো থাকে তার দলের লোক। আর এ ভদ্রলোক হাসপাতালে একাকী এসেছেন। একি বিশ্বাস করা যায়? তার সাথে কথা কি বলবো, তাঁকে তো গভর্নর রূপে বিশ্বাসই করতে পারছি না। ভদ্র লোকটি কি পাগল? তখন সে প্রশ্ন আমার মনে। পাগলা গারদে এমন উল্টা পাল্টা বহু মানসিক রোগী দেখেছি। এমন পাগলও দেখা যায় যারা কাউকে দেখা মাত্র নিজেকে গভর্নর বা মন্ত্রী রূপে দাবি করে। যাহোক আপাতত আমি তাকে একটি চেয়ারে বসতে বলে কামরা থেকে দ্রুত বেরিয়ে আমার পাশের রুমের নার্স ও প্যারামেডিকদের কাছে গেলাম। তাদেরকে ফার্সীতে বললাম, “আমার ঘরে এক ভদ্রলোক এসে বলছেন তিনি নাকি এ প্রদেশের গভর্নর। আসলে লোকটা কে তোমরা জান নাকি?” আমার রুমে ঢুকার আগেই তারা ইতোমধ্যেই তার আগমনকে দেখেছে, আমার রুমে ঢুকতেও দেখেছে। কোন রোগীকে ডাক্তারের কামরায় ঢুকতে হলে প্রথমে তাকে রিসেপশনে নাম লেখাতে হয়। ফলে ডাক্তারের রুমে কে কখন ঢুকলো সে খবর তারা রাখে। দেখি, তারাও নিজেদের মধ্যে তার আগমনের কারণ নিয়ে আলাপ করছিল। তারা বললো, “ডাক্তার সাহেব! উনি ঠিকই বলছেন। উনি আসলেই এ প্রদেশের গর্ভনর।” তখন আমি অবাক বিস্ময় নিয়ে আমার রুমে ফিরে গেলাম। তাকে সমাদর করে আমার চেয়ারে বসবার অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে আমার চেয়ারে বসতে বলে রোগীদের জন্য নির্ধারিত চেয়ারটিতে বসে রইলেন। আমার সাথে তিনি আলাপ শুরু করলেন। বুঝলাম, জেলার স্বাস্থ্য পরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু লোক গভর্নরের অফিসে গুরুতর অভিযোগ করেছে। এবং গভর্নর রূপে তিনি স্বয়ং সেটির তদন্তে এসেছেন। আমার অভিমত জানতে চাইলেন। বললাম, “আমি নতুন এসেছি, স্বাস্থ্য পরিচালকের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ফলে আমি কোন অভিমত দিতে পারছি না।” আমার উত্তর শুনে আলোচনা আর বাড়ালেন না। বিদায় নিতে উদ্যত হলেন। যাওয়ার আগে বললেন, তিনি এখনই শহরের জামে মসজিদে যাবেন। ওখানে মানুষের সাথে কথা বলবেন। তখন মাগরিবের নামাযের সময়। আমিও উনার সাথে হাসপাতালের গেট অবধি হেঁটে বিদায় দিলাম। যে গাড়ি নিজে চালিয়ে এসেছিলেন, সে গাড়িতেই উনি চলে গেলেন। বেশ কয়েক মাস পর হাসপাতাল পরিদর্শনে তিনি আবারও এসেছিলেন। এবার সাথে ছিল জেলা প্রশাসকসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা। সেবার তো তিনি আমার বাসায় এসে হাজির। আমার বাসা ছিল হাসপাতালের অভ্যন্তরে। আমার নামটি মনে থাকায় হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি এসেছিলেন আমার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার জন্য। সেটিও কি বিস্ময়ের কথা। আমি এক বিদেশি ডাক্তার। আমার সাথে দেখা না করলেই বা তার কি ক্ষতি হতো? কিন্তু ভদ্রতাও একটি বিষয়। যেহেতু আমার সাথে তার পরিচয় হয়েছিল সে সুবাদে তিনি কুশল বিনিময় করতে আমার ঘরে এসেছেন। আমার কর্মস্থল তখন উস্তানে সেমনান অর্থাৎ সেমনান প্রদেশে। তিনি পরবর্তীতে কুর্দিস্তান প্রদেশের গভর্নর হয়েছিলেন। তিনি এক বোমা হামলায় প্রাণে বাঁচলেও তার পা হারিয়েছিলেন। সে বোমা হামলাটি ঘটেছিল তেহরানের এক সেমিনারে। সে বোমা হামলায় ইরানের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আয়াতুল্লাহ বেহেশতীসহ ৭২ জন দায়িত্বশীল পর্যায়ের লোক মারা যান।

আরেক ঘটনা। আমি গিয়েছি আমার সেমনান প্রদেশের হেলথ ডাইরেক্টরের অফিসে কিছু প্রয়োজনীয় কাজে। প্রাদেশিক শহরের নামও সেমনান। পুরা ১০টি বছর এ প্রদেশের গরমসার জেলাতে কাটিয়েছি। ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদী নেজাদও এ জেলার মানুষ। জেলাটি অগ্রসর শিক্ষার হারে। বিখ্যাত উন্নত মানের খরবুজা, ডুমুর ও আনারের জন্য। গরমসার শহরটি সেমনান শহর থেকে প্রায় ১১০ মাইল পশ্চিমে, সেমনান ও তেহরানের মাঝামাঝিতে। সেমনান প্রদেশের পূর্বে খোরাসান প্রদেশ। উত্তরে মাজেন্দারান। আর পশ্চিমে কেন্দ্রীয় প্রদেশ তেহরান। কাজ সেরে বিকালে বাসে কর্মস্থলে ফেরার চিন্তা করছি। এমন সময় আমার এক ইরানী বন্ধু বললেন, “আমাদের শহরের এমপি সাহেব এখনই তেহরানের দিকে রওনা দিচ্ছেন। আপনি বাসে না গিয়ে উনার গাড়িতে যান। উনার গাড়িতে জায়গাও আছে।” পরামর্শটি আমার জন্য খুবই ভালই মনে হলো। সময় মতো বাস পাওয়ার ঝামেলা বড় ঝামেলা। বাস নিতে হয় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে। অনেক সময় আধা থেকে পুরা এক ঘণ্টা লেগে যায় বাস পেতে। তা থেকে যেমন বাঁচা যাবে এবং একজন এমপি’র সাথে পরিচয় হবে। আমার বন্ধুটিই আমাকে এমপি সাহেবের সাথে পরিচয় করিয়ে তার জিপে উঠিয়ে দিলেন। এমপি সাহেবের সাথে তার স্ত্রীও সন্তানসহ তেহরান যাচ্ছেন। তিনি বসেছেন পিছনের ছিটে। এমপি সাহেব এবং আমি একই সারিতে। এমপি সাহেবের নাম ডক্টর হাসান রুহানী। তিনি একজন আলেম। মাথায় আয়াতুল্লাহদের ন্যায় পাগড়ী। তিনি আমার সাথে ইংরাজীতে কথা বলা শুরু করলেন। উচ্চারণ আমেরিকান এ্যাকসেন্টের। এবং সুন্দর ইংরাজী। ইনি পরে বিখ্যাত ব্যক্তি হন। ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি অন্য জ্ঞানের রাজ্যেও যে তার গভীর দখল সেটি সেদিন কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম। লন্ডনে বসে বিবিসি ও আল-জাজিরা টিভিতে বহুবার তার ছবি দেখেছি। বিশেষ করে সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী জ্যাক স্ট্র’, জার্মান, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদী নেজাদের আগে প্রেসিডেন্ট ছিলেন জনাব খাতেমী। ড. রুহানী ছিলেন তার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এ্যাডভাইজার। খাতেমী ৮ বছর প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। ইরানের আণবিক প্রকল্প নিয়ে তখন পাশ্চাত্যে প্রচণ্ড অভিযোগ। তখন ইরান সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার মূল দায়িত্বভাব ছিল রুহানীর উপর।

চলার পথে রুহানীর সাথে নানা বিষয়ে আলাপ হচ্ছিল। বিশেষ করে বিপ্লব পরবর্তী অবস্থা নিয়ে। প্রচণ্ড অমায়িক ও মিষ্টভাষী। মনে হচ্ছিল তিনি একজন ভালো মানের বুদ্ধিজীবী। তিনি সেমনান শহরের এমপি হলেও তার পৈত্রিক নিবাস সেমনান থেকে প্রায় ১৫ মাইল দূরের সোরখে নামক এক ছোট্ট শহরে। এ শহরটি সেমনান থেকে তেহরান যাওয়ার যাত্রা পথেই পড়ে। সোরখে শহরটি দেখে মনে হয় এটি মরূদ্যান। দীর্ঘ ধূসর মরুভূমি অতিক্রম কালে এ শহরটি তার সবুজ গাছপালা আর ক্ষেতখামার নিয়ে হঠাৎ হাজির হয়। তখন মনটাও যেন রুক্ষ ভাব থেকে হঠাৎ সজাগ হয়ে উঠে। সেমনান প্রদেশটি ইরানের সর্ববৃহৎ মরুভূমি দাশতে কবীরের উত্তরের বিশাল ভূভাগজুড়ে। এ দাশতে কবীরের তাবাসে কয়েকটি মার্কিন হেলিকপ্টার আরোহী কমান্ডোদের নিয়ে বিধ্বস্ত হয়েছিল। এ ঘটনাটি ঘটে আমার ইরানে পৌঁছার আগেই। বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার ও তার দগ্ধ আরোহীদের বীভৎস ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট কার্টারের পক্ষ থেকে ইরানী ছাত্রদের হাত থেকে জিম্মি মার্কিন বন্দীদের উদ্ধারের এটি ছিল সর্বশেষ প্রচেষ্টা। এটি ব্যর্থ হওয়ায় কার্টারের দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনী বিজয়টিও ব্যর্থ হয়ে যায়। তিনি বিপুল ভোটে পরাজিত হন রোনাল্ড রিগানের কাছে।

ড. রুহানী বললেন, চলার পথে তিনি তার সোরখের বাড়িতে কিছুক্ষণের জন্য থামবেন। আমাকেও অনুরোধ করলেন, আমি যেন কিছুক্ষণ বসি। তার পিত্রালয়ের গৃহটি কাদামাটির, এবং পুরনো। কোন বিলাসিতা নেই। কোনরূপ চাকচিক্য বা জাঁকজমকও নেই। মেঝেতে দেয়াল থেকে দেয়াল অবধি সুদৃশ্য কার্পেট। এমন কার্পেটই ঘরের চেহারা পাল্টে দেয়। আমি গ্রামের কৃষকের বাড়িতেও এমন কার্পেট দেখিছি। কোন চেয়ার টেবিল নেই। দেয়ালের সাথে লাগোয়া ঠ্যাস-বালিশ। সবাই দেয়াল ঘেষে কার্পেটের উপর বসে। ইরানে যত বাড়িতে গেছি, দেখেছি একই রূপ অবস্থা। মনে হল, এটিই ইরানের রীতি। দেখলাম ড. রুহানী সাহেবের পরিবারের অনেকেই তার আগমনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। সামনে আনা হলো ফলমূল ও চা। এই প্রথম দেখলাম ফলের ঝুলিতে শসা। শসাগুলো সরু ও ছোট। ফলের মতই খেতে খুব সুস্বাদু।

বুঝতে বাকি থাকলো না, ড. রুহানী অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক অবস্থানের পর আবার আমাদের যাত্রা শুরু হল। সারা পথ আবার গল্প। উনার থেকে জানতে পারলাম, আমার কর্মস্থল গরমসারেও তিনি যাত্রা বিরতি করবেন। সেখানকার জামে মসজিদে তার বক্তৃতা আছে। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার হাতে সময় হবে কিনা মসজিদের সে জলসায় থাকার। ঐ রাতে হাসপাতালে আমার কোন ডিউটি ছিল না। তাই রাজী হয়ে গেলাম। তিনিও খুশি হলেন। মাগরিবের সময় আমরা মসজিদে গিয়ে পৌঁছলাম। মাগরিবের নামাজের পর তিনি তার সভা করলেন। ফার্সীতে বক্তৃতা দিলেন। ইরানে রাজনৈতিক জলসাগুলো কোন ময়দানে হয় না, মসজিদেই হয়। মসজিদই ইরানের ধর্ম, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সামজিকতার কেন্দ্রবিন্দু। বিলেতে দেখছি সে কাজটি করে পাব -যা আসলে মদ্যশালা। প্রতিগ্রাম ও প্রতিমহল্লায় রয়েছে মদ্যশালা। মানুষ এখানে শুধু মদ খেতেই আসে না, এখানে বসে টিভিতে খেলা দেখে, গল্প করে, রাজনীতি নিয়েও বিতর্ক করে। দেখলাম মসজিদের গায়ে অনেক পোস্টার। অবাক হলাম মসজিদের গায়ে লটকানো ফটো দেখে। দেখলাম অনেকে বসে বসে চা খাচ্ছে। কেউ কেউ সিগারেটও খাচ্ছে। ইমাম খোমেনী তখন জোরেশোরে শিয়া-ছুন্নীর ঊর্ধ্বে উঠে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের কথা বলছেন। ইমাম খোমেনীর একতার সে বাণী পাশ্চাত্যের কাছে ভালো লাগেনি।  কিন্তু মসজিদে বসে আমার মনে হল, ঢাকা, করাচী, লাহোরের মুসল্লীরা যদি এ মসজিদের ভিতরের খবর জানতে পারে তবে শিয়া-সুন্নীর একতা বিনষ্টের জন্য কোন অমুসলিম বা বিদেশি শত্রুর প্রয়োজন পড়বে না।

ড. রুহানীর বক্তৃতা শেষ হল। বক্তৃতার পর শহরের গণ্যমান্য লোকদের সাথে কিছুক্ষণ বসলেন। তারপর প্রস্থানের উদ্যোগ নিলেন। আমাকে বললেন, “রাতে এ শহরেই আমার দাওয়াত আছে। তিনি আমাকেও দাওয়াত দিলেন। জিজ্ঞেস করলেন, আমি যেতে রাজী আছি কিনা। আমার পরিবার তখনও ইরানে পৌঁছেনি, হাসপাতালের বাসায় একা থাকি। ফলে ভাবলাম, বাসায় ফিরে একাকী কি করবো। ড. রুহানীর সাথে থাকায় ইরানী সমাজ ও রাজনীতিকে ভিতর থেকে দেখার যে সুযোগ পেলাম সেটি আমার কাছে অতি মূল্যবান মনে হলো। বহু অর্থ বহু সময় ব্যয়েও ক’জন এরূপ দেখার সুযোগটি পায়। তছাড়া বিনা কারণে দাওয়াত অগ্রাহ্য করাও তো সুন্নতের খেলাপ। অতএব রাজি হয়ে গেলাম। অবাক হলাম ড. রুহানীর মেজবানের ঘরের দরজার সামনে গিয়ে। ড. রুহানীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ঘর থেকে তার মেজবানগণ বেরিয়ে এল। প্রথমজনকে পরিচয় করিয়ে দিলেন এই বলে, ‘ইনি আমার ফার্স্ট কাজিন’। তারপর বললেন, ইনি এ শহরের নাপিত। আমি তো অবাক। সে বিশাল কালচারাল শক। আমি ভদ্রলোককে চিনতাম। কারণ, আমি গরমসার শহরে আসার পর তার দোকানে চুল কাটাতে গেছি। কিন্তু সে যে তার কাজিন সেটিই আমার বিস্ময়ের কারণ। তার কাজিন যে নাপিত সেটি বলতে ড. রুহানীর সামান্যতম সংকোচ হল না। ভাবলাম, আমার দেশে হলে ব্যাপারটি কেমন হত? কেউ কি তার এমন আত্মীয়কে পরিচয় করিয়ে দিত? প্রশ্ন হল, কোন মুসলমান সন্তান কি নাপিতের পেশা গ্রহণ করত? লক্ষ লক্ষ মানুষে পথে বসে ভিক্ষা করতে লজ্জা করে না, কিন্তু ক’জন পেশা রূপে নাপিতের কাজ করতে রাজী? বাংলাদেশে এ কাজ করে নিম্নশ্রেণীর হিন্দুরা। মুসলমানদের মধ্যে যারা এ কাজটি করে তারা অবাঙালি বিহারী। ইসলামে শ্রেণীভেদ, জাতিভেদ ও বর্ণভেদ হারাম। হারাম হল কারো কোন কাজ বা পেশাকে ঘৃণা করা। আর সবচেয়ে ঘৃণার কাজ হল ভিক্ষা করা। অথচ বাঙালি মুসলমানগণ নিজেদের ধর্মভীরুরূপে গর্ব করলেও ধর্মের এ মৌল শিক্ষাটি তাদের আচরণে স্থান পায়নি। তাদের চেতনার মাঝে হিন্দুদের বিশ্বাস ও আচরণটা এখনও রয়ে গেছে। বাঙালি মুসলমানদের মাঝেও তাই রীতি রয়ে গেছে হিন্দুদের ন্যায় ডোম, মেথর, নাপিত, মুচির কাজকে ঘৃণার করার। পাড়ায় পাড়ায় ভিক্ষা করবে তবু কোন বাঙালি মুসলমান এসব কাজকে নিজের পেশা রূপে গ্রহণ করবে না। যেন একাজ করার জন্যই জন্ম নিয়েছে নিম্নশ্রেণীর অচ্ছ্যুৎ হিন্দুরা। হিন্দু সংস্কৃতির সাথে বাঙালি মুসলমানের সংস্কৃতি এখানে একাকার হয়ে গেছে। অথচ সংস্কৃতি থেকেই ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস যে কতটা সংস্কার এনেছে সে পরিচয় মেলে। এমন সংস্কৃতি নিয়ে কেউ ইরানে গেলে ‘কালচারাল শক’এর শিকার না হয়ে উপায় নেই।

ইরানে অচ্ছ্যুৎ বা নমশূদ্র বলে কোন শ্রেণী নেই। কোন কর্মকে ঘৃণা করার নীতি সেদেশে নাই। আরেক অভিজ্ঞতার কথা বলি। একদিন কাজের ফাঁকে আমার হাসপাতালের এ্যাকাউন্টটেন্টের সাথে গল্প করছিলাম। কথার ফাঁকে আমাকে সে জিজ্ঞেসা করলো, “ডাক্তার, আপনি কি আমার পিতাকে চেনেন?” আমি বললাম, “না, চিনি না।” সে বললো, “কেন? আমার পিতা তো এ হাসপাতালেই কাজ করে।” জিজ্ঞেস করলাম, “আমি তো জানি না, বলুন উনি কোথায় কি কাজ করেন?” সে বল্লো, “কেন? হাসপাতালের মধ্যে কি ঐ বৃদ্ধ লোকটিকে কি দেখেন নাই যে প্রতিদিন হাসপাতাল ঝাড়ু দেয়।” সাথে সাথে আমি তাকে চিনে ফেললাম। তাকে না চেনার উপায়ই নাই। কারণ, আমি তাকে প্রতিদিন হাসপাতাল ঝাড়ু দিতে দেখি। তার বয়স সম্ভবতঃ ৭০-এর কাছাকাছি হবে। কিছু দিন আগে তিনি হজ্ব করে এসেছেন। আমার সাথে তার প্রায়ই কথা হয়। হাসপাতালের পিছনেই আমাদের বাসা, মাঝে কোন দেয়াল নেই। আমাদের বাসার সামনে দিয়ে তার নিয়মিত আসা যাওয়া। জানতাম না যে সে আমাদের এক্যাউন্টটেন্টের পিতা। আমি অবাক বিস্ময়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আর মিলিয়ে দেখতে লাগলাম, আমার দেশের সংস্কৃতির সাথে তার দেশের সংস্কৃতির। মনে প্রশ্ন উঠলো, আমরাও তো মুসলমান। কিন্তু এত ভিন্ন হলাম কি করে?

তেহরান শহরের পূর্ব দিকে বিশাল শিল্প এলাকা। আশির দশকে ওখানে কয়েক শত বাংলাদেশি কাজ করতো। ইরানে তখন বহু হাজার বেআইনী বাংলাদেশির বসবাস। তারা বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান হয়ে সড়ক পথে ইরানে এসেছে। তারা চেষ্টায় লেগে থাকতো, ওখান থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রীস, ইতালী বা অন্য কোন ইউরোপীয় দেশে পৌঁছার। ইরান তাদের কাছে ছিল একটি ট্রানজিট দেশ। ইরানে থাকা কালে তারা বিভিন্ন কারখানায় উপার্জনে লেগে যেত। তারা আসতো ইরানের ভিসা না নিয়েই। ফলে তাদের অবস্থান ছিল বে-আইনী। ইরান সরকার সেটি জানলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিত না। এমন এক শিল্প এলাকা আমার হাসপাতাল থেকে ৬০-৭০ মাইল দূরে। তেহরানের আশপাশে আমরা যারা বাংলাদেশি ডাক্তার কাজ করতাম তাদের কাছে ওরা আসতো দুটি প্রয়োজনে। এক, দেশে টাকা পাঠানোর জন্য। দুই, চিকিৎসার জন্য। আমাদের কাছে ওরা যতটা খোলাখোলি ভাবে নিজেদের রোগের বিষয়টি বলতে পারতো তা ইরানী ডাক্তারদের কাছে পারতো না। আমাদের কাছে ওরা নিজেদের দুরবস্থার কথাও বলতো। কতজন কষ্ট করে এবং কত অর্থ ব্যয়ে ইরানে এসেছে সে তথ্যও তাদের থেকে বহু শুনেছি। ইরান থেকে টাকা পাঠাতে হলে সেদেশে বৈধ অবস্থানের পাশাপাশি চাকরিটাও বৈধ হওয়া জরুরি। টাকা পাঠাতে হত ব্যাংকের মাধ্যমে। অবৈধ হওয়ায় তাদের পক্ষে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানো ছিল অসম্ভব। ফলে তাদের টাকা পাঠাতে হত, কর্মরত বাংলাদেশি ডাক্তারদের মারফতে। এসব অবৈধ বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই কলেজ পড়ুয়া। কেউবা বিশ্ববিদ্যালয়েও লেখাপড়া করেছে। এমন কিছু বাংলাদেশি একবার আমার হাসপাতালে এসে আমাকে দাওয়াত করে ডেকে নিয়ে গেল তাদের কর্মস্থলে। আমারও ইচ্ছা ছিল ওদের কর্মস্থলের পরিবেশটি দেখার। একেবারে গ্রামের মধ্যে সারি সারি কারখানা। কর্মস্থলের সাথে সংলগ্ন হল ওদের আবাসস্থল। থাকার জন্য কোন ভাড়া দিতে হয় না। দেখলাম ওদের রুমে কোন খাট বা চৌকি নাই। মেঝেতে কার্পেট বিছানো। অনেকে একত্রে থাকে। নিজেরাই পাক করে খায়। তরিতরকারি, মাছ-গোশত ও ফলমূল কিনে আসতো তেহরান থেকে। তখন নানা প্রকার মাছ পাওয়া যেত তেহরানে। আমরাও মাছের বাজার করার জন্য মাঝে মাঝে তেহরান যেতাম।

আমার আগমন শুনে অনেক বাংলাদেশি যুবকরাই সেখানে বেড়াতে এসেছে। বসার জায়গাটা ওদের শয়নকক্ষেই। সবাইকে নিয়ে আলোচনা বেশ জমে উঠলো। কে কোন জেলার এবং দেশে কে কি করতো সে পরিচয়ও শুনলাম। তেহরান পর্যন্ত আসতে তাদের কীরূপ বিপাকে পড়তে হয়েছে সে কাহিনীও কেউ কেউ বললো। সবাইকে জিজ্ঞেস করলাম, কাজের পরিবেশ, বেতন ও কারখানার মালিকদের আচরণ সম্পর্কে। বুঝলাম, বেতন যা পায় সেটি সরকারি ভাবে দেশে পাঠাতে পারলে তাদের বেশ উপকার হত। কিন্তু সে সুযোগ তাদের নাই। কারখানাগুলো খুব একটা বড় নয়। দেখলাম বেশ কিছু আফগানী এবং পাকিস্তানীও সেসব কারখানায় কাজ করছে। এবং তাদের সাথে বাংলাদেশিদের কোন বিবাদ নাই। সবাই দেখলাম খুব খুশি কারখানার মালিকদের ব্যবহার নিয়ে। মালিকরাও তাদের খুব বিশ্বাস করে। কেউ কেউ একথাও বললো, যেহেতু তারা ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট খুলতে পারে না, তাই খাওয়ার খরচটা তুলে বাদবাকী সবটাই মালিকের কাছেই রেখে দেয়। যখন প্রয়োজন হয় তখন চাইলেই মালিক দিয়ে দেয়। এভাবে কারখানার মালিকরাই তাদের ব্যাংকাররূপে কাজ করে। নিজেদের কিছু বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথাও তারা বললো। সবচেয়ে বড় বিস্ময়টি হল, কারখানার মালিক মাঝে মধ্যেই তেহরান থেকে তাদের বাসস্থানটি দেখতে আসে। তাদের সমস্যা হলো, তাদের মাঝে পায়খানা পরিষ্কার করার লোক নেই। ফলে এটি অযতেœà¦° সবচেয়ে বড় শিকার। মালিক যখন দেখে তাদের টয়লেটটি বড়ই অপরিস্কার, কখনও বা দেখে ড্রেন দিয়ে মল-মূত্র আর নিচে যাচ্ছে না -তখন মালিক নিজেই পরিষ্কারে লেগে যায়। মালিক এসে তা শ্রমিকের টয়লেট পরিষ্কারে লেগে যায় -এ বিস্ময়ের কথা দেখি সবার মুখে। আমিও শুনে হতবাক হয়েছি। ইরানে ডোম-মেথর বলে কোন আলাদা কোন লোক নেই। যার যার টয়লেট তাকেই পরিষ্কার করতে হয়। ফলে মেথর এখানে সবাই। বাংলাদেশিদের যেহেতু ছোটবেলা থেকেই এমন কাজের কোন অভ্যাস নাই, টয়লেট পরিষ্কার রাখাটাই কঠিন হত। নিজেদের মধ্যে বাজার করা বা খানা পাকানোর লোক পাওয়া গেলেও টয়লেট পরিষ্কারের দায়িত্ব কেউ নিত না। আর সে দায়িত্বটা নিত কারখানার মালিক। মালিকের কাণ্ড দেখে দেখলাম সব বাংলাদেশিরা বিস্ময়ে হতবাক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাদের আচরণ দেখে ইরানী মালিকগণ কীরূপ ধারণা করলো? মালিকদের ধারণাটিও নিশ্চয়ই কম বিস্ময়ের নয়। যেমনটি বিস্মিত হয়েছিল বাংলাদেশি ডাক্তারের ইরানী বউ। বিদেশে যারা বসবাস করে তারা শুধু দেশের নামটাই তুলে ধরে না, সংস্কৃতির পরিচয়ও তুলে ধরে। দেশের সুনাম বা বদনাম তো এভাবেই তো দেশে দেশে ছড়ায়। বহু লক্ষ বাংলাদেশি আজ নানা দেশে ছড়িয়ে আছে। দেশ দুর্নীতিতে ৫ বার বিশ্বে শিরোপা পেয়েছে। কিন্তু যারা বিদেশে সশরীরে বসবাস করছে সেসব বাংলাদেশিরাই বা কতটা সুরুচির পরিচয় দিচ্ছে?

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।