সংবাদ শিরোনামঃ

মহাবিপর্যয়ের দিকে বাংলাদেশ ** সংবিধান সংশোধনের নামে এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা জাতিকে আরো বিভক্ত করে মুখোমুখি হতে প্রণোদিত করে ** রাজনৈতিক নিপীড়নের উদ্দেশ্যেই মুজাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট ** পশ্চিমবঙ্গে লাল দুর্গের পতন ** জামায়াত গণমানুষের অধিকারের কথা বলে তাই সরকার নেতৃবৃন্দের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে ** সাহসী বুকে অব্যাহত থাকুক এ পথচলা ** বিসমিল্লাহ বর্জন : হিন্দুত্ববাদের অধীনস্থ করাই ল্য ** প্রচারের অভাবের পরেও ডাক বিভাগের মোবাইল মানিঅর্ডার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ** গ্রামের পতিত জমিতে সূর্যমুখী ও কৃষকের হাসি ** গ্রাহাম ই ফুলারের ইসলামবিহীন পৃথিবী **

ঢাকা শুক্রবার ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৩২, ২০ মে ২০১১

মাহবুবুল হক
সাপ্তাহিক সোনার বাংলার তিনটি মুদ্দত চলছে। প্রথম মুদ্দত পাকিস্তানী আমলে। এর সঠিক সন-তারিখ আমি বলতে পারবো না। দ্বিতীয় মুদ্দতটা আমার হাতে, বাংলাদেশ আমলে। দ্বিতীয় মুদ্দতটা আবার দু’ভাগে বিভক্ত; এক. ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল, দুই. ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সাল। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সোনার বাংলার দ্বিতীয় মুদ্দত শুরু হয় ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে।

দেশ স্বাধীন হওয়ায় দেশের জন্য কিছু কাজ করার প্রেরণা জাগে। সেই প্রেরণা থেকেই ১৯৭২ সালে ‘সোনার বাংলা’র পুনর্জন্ম। সম্ভবত গণআন্দোলনের পর থেকে সোনার বাংলা বন্ধ ছিল। সোনার বাংলার প্রতিষ্ঠাতা মহীউদ্দীন আহমদ-এর সাথে আমার পরিচয় ১৯৬৯ সালে। তখন তিনি মুদ্রণ ও প্রকাশনা ব্যবসায়ে নিমগ্ন। ততদিনে সংবাদপত্র প্রকাশনা থেকে তিনি হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। ‘খোশরোজ কিতাব মহল’ থেকে আইনের বই এবং জাতীয় মুদ্রণ থেকে জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থার বই প্রকাশেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থার কর্মচারী ছিলাম বলে দু’বছরের জন্য সারপ্লাস হয়ে যাই। হাতে প্রচুর সময়। বন্ধু-বান্ধবহীন প্রায় একাকী জীবন। থাকি নারিন্দার ২০, শরৎ গুপ্ত রোডে। সেখান থেকে ধোলাইর খাল পার হলেই হৃষিকেশ দাস রোড। এর ১০৯ নং-এ জাতীয় মুদ্রণের অফিস। আমার সময় কাটানোর একমাত্র জায়গা। সকালে এক প্রস্থ আড্ডা মেরে আবার বিকালে যাই। গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করি। প্রতিদিনই নানা কথা হয় মহীউদ্দীন সাহেবের সাথে। এক পর্যায়ে সোনার বাংলা প্রকাশের প্রস্তাব রাখি। দু’দিন সময় ক্ষেপণ করে বললেন : আপনি যদি সব দায়-দায়িত্ব নেন, তা’হলে রাজি আছি। আমার বয়স তখন ২৩/২৪- আগে পিছে না ভেবে আল্লাহর ওপর সকল ভরসা রেখে ‘সোনার বাংলা’র সকল দায়-দায়িত্ব নিয়ে নিলাম। মহিউদ্দিন সাহেব বললেন, পত্রিকার লাভ-লোকসান আপনার, ঠেকে গেলে আমি শুধু সহযোগিতা করবো। বলাবাহুল্য প্রেসের নিচতলায় গ্যারেজে বসে পত্রিকার কাজ শুরু করেছিলাম। এছাড়া আর অন্য কোন জায়গা ছিল না। নিচতলার পুরোটাই ছিল নানারকম প্রিন্টিং মেশিনে ভরা। দোতলায় ছিল অফিস, কম্পোজ ও প্রুফ সেকশন। অফিস ও প্রুফ সেকশনের একটি বিরাট অংশ দখলে নিয়েছিল সদ্য প্রকাশিত ‘দি নিউনেশন’ পত্রিকা। পত্রিকার স্টাফগণ যত্রতত্র স্থানে বসে কাজ করতেন। সুতরাং গ্যারেজের ঐ জায়গা ছাড়া সোনার বাংলার জন্য আর কোনো পৃথক জায়গা ছিল না। ২র্৪র্ ী১র্৮র্  ইঞ্চির একটি ছোট্ট টেবিলে বসে আমি সোনার বাংলার কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম একটি কি দু’টি সংখ্যায় এ কাজ আমি একাই করেছি। খুঁজে  কাউকে আমি পাইনি। সম্ভবত তৃতীয় সংখ্যা থেকে পেলাম ‘প্রুফ রিডার’ জনাব আবু তাহেরকে। তখন তিনি ছিলেন সাপ্তাহিক জাহানে নও পত্রিকার ‘প্রুপ রিডার’। বর্তমানে আছেন দৈনিক সংগ্রামে। বহু বছর যাবত একই পেশায় একই জায়গায় নিয়োজিত আছেন। খুবই ধৈর্যশীল শান্ত মানুষ, শোকর ও সবরে ভরা জীবন। যতদিন আমি সোনার বাংলা চালিয়েছি, ততদিন  আমার সাথেই ছিলেন। সম্ভবত  মাস খানেক পরে অর্থাৎ চার সংখ্যা প্রকাশের পরে জনাব মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এসে সোনার বাংলায় যোগ দিলেন। তিনি তখন ছিলেন দৈনিক সংগ্রামের সাবেক ‘প্রুফ রিডার’।

 à¦à¦‡ তিনজনে মিলে কিছুদিন কাজ করার পর সোনার বাংলায় এসে পর্যায়ক্রমে যোগদান করলেন সাংবাদিক কাজী সামসুল হক, হাফেজ হাবিবুর রহমান, একেএম হানিফ, আজিজুর রহমান, আবদুল কাদের মিয়া, আবুল হোসেন মাহমুদ, আলতাফ হোসেন, সানাউল্লাহ আখুঞ্জীসহ আরো অনেকে। সবার নাম এ মুহূর্তে আর মনে করতে পারছি না। এরমধ্যে কাজী সামসুল হক ও হাফেজ হাবিবুর রহমান অল্পদিনের জন্য সোনার বাংলায় কাজ করেছিলেন। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন একেএম হানিফ ও আবুল হোসেন মাহমুদ। মোহাম্মদ আবদুল মান্নান সহ-সম্পাদক থেকে অল্পদিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকও হয়েছিলেন। পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নাম ছাপা হতো মহীউদ্দীন আহমেদ সাহেবের বড় ভাতিজা বেলায়েত হোসেনের নাম। তার নামটাই শুধু ছাপা হতো। পত্রিকার কোন কাজ তিনি করতেন না। বা নাকও গলাতেন না। প্রধান সম্পাদক হিসেবে এ মুদ্দতে সকল দায়-দায়িত্ব ছিল আমার। সরকারি চাকরি করতাম বলে প্রিন্টার্স লাইনসহ কোথাও আমার নাম ছাপা হতো না।

মাঝে মহীউদ্দীন আহমেদ সাহেবের পীড়াপীড়িতে সোনার বাংলা ব্যাংক হিসাবও আলাদা করা হয়েছিল। পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় এই নতুন হিসাবটি খুলে দিয়েছিলেন ব্যাংকের তখনকার এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার এম. এ. রশিদ চৌধুরী। ‘ঢাকা ডাইজেস্ট’ নামে একটি মাসিক পত্রিকারও কর্ণধার হয়েছিলেন তিনি। ব্যাংকে পত্রিকাটির মালিকানা দেখানো হয়েছিল আমার বড় ভাই একেএম ওয়াহিদুর রহমানের নামে।

সোনার বাংলা সরকারের কাছ থেকে ১৫ টন কাগজ পেত। এর পুরাটাই ‘সার্কুলেশনের’ কাজে লেগে যেতো। কোন কোন সময় পঁচিশ পয়সায় সোনার বাংলা দু-চার টাকাতেও বিক্রি হতো। হক কথার পরেই চলতো সোনার বাংলা। ‘ব্ল্যাক লিস্ট থাকায় সোনার বাংলা সরকারি বিজ্ঞাপন পেতো না। অল্প-সামান্য ‘প্রাইভেট’ বিজ্ঞাপন পেতো। মূল অর্থ আসতো সার্কুলেশন থেকে। সারাদেশে অসংখ্য গ্রাহক ছিল সোনার বাংলার। এ কাজটি করে দিয়েছিলেন মহীউদ্দীন সাহেব। আরও একটি কাজ বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে তিনি করে দিয়েছিলেন, তা হলো পশ্চিম বাংলায় নিয়মিতভাবে ৬০০ কপি কাগজ প্রেরণ। বৈদেশিক মুদ্রায় এ টাকাটাও আমরা নিয়মিত পেতাম। হকার এসোসিয়েশনের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল মধুর। ওরা নিয়মিতভাবে বেশিরভাগ টাকাই পরিশোধ করতো।

সোনার বাংলার অফিস ১০৯ হৃষিকেশ দাস রোড থেকে ১৭নং কেজি গুপ্ত লেন হয়ে একবার ১৫ নং বাংলাবাজারে গিয়ে সাময়িক অবস্থান গেড়েছিল। বাকশাল আমলে সোনার বাংলা যখন বন্ধ করা হয় তখন তার অফিস ছিল ১৭নং কেজি গুপ্ত লেনে। এ মুদ্দতে দু’জন সাংবাদিক সোনার বাংলার জন্য প্রাণপণ কাজ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এবং অপরজন হলেন মরহুম আবুল হোসেন মাহমুদ। ১৯৭৬ থেকে ’৭৯ পর্যন্ত অর্থাৎ তৃতীয় মুদ্দতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ‘সোনার বাংলা’ মাঝে মাঝে প্রকাশিত হতো। এ সময় আমাকে সাহায্য করেছেন জনাব মহীউদ্দীন আহমদ ও অধ্যাপক ফজলে আজিম। লেখক : কবি ও কথা সাহিত্যিক

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।