সংবাদ শিরোনামঃ

মহাবিপর্যয়ের দিকে বাংলাদেশ ** সংবিধান সংশোধনের নামে এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা জাতিকে আরো বিভক্ত করে মুখোমুখি হতে প্রণোদিত করে ** রাজনৈতিক নিপীড়নের উদ্দেশ্যেই মুজাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট ** পশ্চিমবঙ্গে লাল দুর্গের পতন ** জামায়াত গণমানুষের অধিকারের কথা বলে তাই সরকার নেতৃবৃন্দের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে ** সাহসী বুকে অব্যাহত থাকুক এ পথচলা ** বিসমিল্লাহ বর্জন : হিন্দুত্ববাদের অধীনস্থ করাই ল্য ** প্রচারের অভাবের পরেও ডাক বিভাগের মোবাইল মানিঅর্ডার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ** গ্রামের পতিত জমিতে সূর্যমুখী ও কৃষকের হাসি ** গ্রাহাম ই ফুলারের ইসলামবিহীন পৃথিবী **

ঢাকা শুক্রবার ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৩২, ২০ মে ২০১১

হুসাইন আল জাওয়াদ
ইসলামের প্রথম দিকে মানুষকে নামাযের দিকে আহ্বান করার জন্য কোনো বিধিবদ্ধ নিয়ম ছিল না। রাসূল (সা.) তাঁর সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে পরামর্শ সভায় বসেন। পরামর্শ চাইলেন কিভাবে মানুষকে নামাযের দিকে আহ্বান করা যায়। কেউ পরামর্শ দিলেন আগুন জ্বালাতে। কেউ পরামর্শ দিলেন ঘণ্টাধ্বনি বাজাতে। আবার কেউ পরামর্শ দিলেন শিঙ্গাধ্বনি দিতে। পরামর্শ অনেক হলো কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না কেউ। এ অমীমাংসিত অবস্থায় ভেঙে যায় সভা।

চিন্তাযুক্ত মনে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই। গভীর রাত। অনেকেই স্বপ্ন দেখেন। এক আশ্চর্য স্বপ্ন। ঘুম থেকে উঠে সবার চোখে আনন্দের রেশ। পরের দিন একে একে সবাই জমায়েত হলো। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) মজমার মধ্যমণি। সালাম বিনিময়ের পর বাতচিত করার আগে সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) স্বপ্নের কথা নবীজীকে জানালেন। তারপর হযরত ওমর (রা.)ও দৌড়িয়ে এসে একই স্বপ্নের কথা নবীজীকে শোনালেন। নবীজীর আর বুঝতে বাকি রইল না এ কোনো সাধারণ স্বপ্ন নয়। এ নিশ্চয় প্রভুর পক্ষ থেকে পাওয়া সত্য স্বপ্ন। তিনি বিলম্ব না করে হযরত বেলাল (রা.)কে ডেকে স্বপ্নের কথাগুলো শিখিয়ে দিলেন। এর পরেই ঐ সকল স্বপ্নকথার মাধ্যমেই চালু হয় আযান।

এ এক শক্তিশালী কথামালা। কী এক রহস্যময়তা এসব শব্দে! কী এক জাদুময়তা এসব বাক্যে! কী আকর্ষণ লুকিয়ে আছে এ আযানে! আমার ঘুমন্ত হৃদয়ে আলোর প্রদীপ জ্বলে ওঠে। মনপ্রাণ ছুটে যায় বিজলীর গতিতে। মুয়াযযিনের ডাকে মসজিদ পানে। একই ধ্যান একই চিন্তা বারবার তাড়া করে ফিরে আমায়। মুয়াযযিনের সাথে মন অজান্তেই তার বাক্যগুলো জপ করে। আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লা ইলাহ ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, হাইয়া আলাস সালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ। আর মন (আত্মা) তো তারই নাম জপবে। তার বার্তাবাহী বলে।

আমার মতো আরো অনেকে একই শব্দের পুনরাবৃত্তি করছে দেখে আবেগে আপ্লুত হই। আমি নিথর নিষ্পলক চেয়ে থাকি প্রকৃতির দিকে। অশ্রু ঝরে পড়ে সকালের শিশিরের মতো। বৃক্ষপাতার মর্মর ধ্বনি, ভোরের পাখিও যেন একই সুরে একই শব্দে তারই গান গায়! তারা বলছে আমায় তুমি এখনো নিদ্রায় নিরুদ্দেশ? এখনো ঘুমে বিভোর তুমি? মুয়াযযিন আমায় স্পষ্ট স্মরণ করিয়ে দেয়, নিদ্রা থেকে নামায ভালো। সতর্ক করে দেয় নিদ্রায়ই নিরুদ্দেশ? এখনো ঘুমে বিভোর তুমি? মুয়াযযিন আমায় স্পষ্ট স্মরণ করিয়ে দেয়, নিদ্রা থেকে নামায ভালো। সতর্ক করে দেয় নিদ্রায়ই একমাত্র শান্তি নয়। মহান আল্লাহর যিকিরের মাঝেই মুমিনের প্রশান্তি। স্রষ্টা তোমায় ডাকছে তার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিতে। তার রহমতের ভাগি হতে। শীতের কুয়াশাও তার নির্মলতা ঝরিয়ে মাতম করে, প্রভুর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দেয়।

যে শেরে আলী নামাযের জন্য দুনিয়াতেই শুভ সংবাদ পেলেন জান্নাতের। তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন নিশ্চিন্তে। গভীর ঘুম। রাতের শেষ প্রহরে মুয়াযযিন যখন বললেন আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম। এ শব্দ শোনামাত্র তিনি ঘুমিয়ে থাকতে পারলেন না। পাগলপারা হয়ে ছুটে যান মসজিদে। আমিও সেই আযানের ভক্ত। সে আযান আজও আমায় বারেবারে ডেকে যায়। সে আযানের ধ্বনিতে রাজা গৌড়গোবিন্দের  রাজপ্রাসাদ ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠেছিল। যে আযান ইবলিশের দম্ভকে চূর্ণ করে। তার দেহ অনলে দগ্ধ করে। আযান শোনামাত্রই সে পায়ুপথে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পলায়ন করে পাগলা ঘোড়ার চেয়ে দ্রুতগতিতে। চলে যায় দূর থেকে বহু দূরে। আযানের এমনই অলৌকিক শক্তি। এমনই ক্ষমতা। শত্রুসমরে যখন নারায়ে তাকবির স্লোগান দেয়া হয় তখন শত্রুর বুকে কাঁপন ধরে যায়। মনোবল হারিয়ে ফেলে তারা।

সদ্য নবজাত শিশুরা এ মাটির বুকে পদার্পণ করে হাউমাউ করে চিৎকার দিতে থাকে। কেউ যখন তার কানে আযান শোনায় তখন তার ক্রন্দনধ্বনি বন্ধ হয়। আযানই তাকে সান্ত্বনা দেয়। সে বুঝে নেয় মুসলমানের ঘরেই তার জন্ম হয়েছে। আযান এমন এক মহৌষধ। মায়ের স্নেহের মতন।

আমি অপেক্ষায় থাকি, মনকে বেঁধে রাখি, মসজিদ প্রাঙ্গণে। আযান কখন হবে। আমি অযু বানিয়ে রাখি, পূত-পবিত্র হয়ে থাকি। প্রভুর দরবারে হাজিরা দেব বলে। মুমিন যেখানেই থাকে রশি তার বান্ধা ঘুড়ির মতো মসজিদের পিলারে। আযান এমনই এক আহ্বান যা মুমিনকে সাহসী হতে শিখায়।

মিনারে মিনারে আযান হোক বিশ্বের প্রতিটি দেশে। ভেঙে যাক যতসব জুলুমবাজের রাজপ্রাসাদ তখ্ত তাউস। প্রতিটি মিনারে আন্দোলিত হবে বিজয়ের নিশান। ঘরে ঘুরে জন্ম নিবে হযরত বেলাল। এক আল্লাহপ্রেমিক আশেকে রাসূলের। ঠিক সেদিনটির অপেক্ষায় থাকব ইস্রাফিলের শিঙ্গাধ্বনি পর্যন্ত।

লেখক : কবি

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।